• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

নতুন আতঙ্ক মাঙ্কিপক্স!

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা কিছুটা কমায় বিশ্বে মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তির ছাপ পড়তে শুরু করেছে। কিন্তু এর মধ্যেই আরো একটি ভাইরাস জেঁকে বসার উপক্রম করছে। এর নাম মাঙ্কিপক্স। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৪টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে। ইউরোপের ১০টি দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

১৯৭০ সাল থেকে আফ্রিকার ১১টি দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। আফ্রিকার বাইরে রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এতদিন পর্যন্ত বিরল ছিল। ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে নাইজেরিয়ায়। ইউরোপে এবার প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৭ মে। নাইজেরিয়া থেকে ইংল্যান্ড ফেরত এক ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হন বলে জানায় দেশটি। এরপর রোগটি আরও কয়েকটি দেশে শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এটি স্পষ্ট যে মাঙ্কিপক্স কোভিডের মতো নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক। কারণ এই প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিক এবং অভূতপূর্ব। যা বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করে তুলেছে।

এতদিন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের আচরণ অনুমান করা সহজ ছিল। নাম শুনে বানরের কথা মনে হলেও আসলে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি পাওয়া যায় ইঁদুরের শরীরে। ভাইরাসটির প্রাকৃতিক আবাসভূমি পশ্চিম আফ্রিকা এবং রেইনফরেস্টে বাস করে এমন কেউ হয়তো আক্রান্ত ইঁদুরের সংক্রমণে এলে অসুখটি ছড়ায়। আক্রান্তদের ত্বকে বসন্তের মতো দেখা দেয়। ফোস্কার মতো তৈরি হয়ে ফেটে যায় এবং চামড়া উঠতে থাকে। কিন্তু মাঙ্কিপক্স এখন যেসব দেশে শনাক্ত হচ্ছে সেখানে এটি থাকার কথা নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি খুব অল্পতেই সংক্রমিত করতে পারছে না। দীর্ঘক্ষণের সংস্পর্শ দরকার হচ্ছে। বিশ্বে এর আগে অল্প কিছু সংক্রমণ পাওয়া গেছে, তবে যাদের শরীরে এটি পাওয়া গেছে তারা সবাই ভাইরাসটির প্রাকৃতিক আবাসভূমি যেসব দেশে সেখানে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার যে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে তা প্রথম বারের মতো এমন সব মানুষের দেহে এটি পাওয়া গেছে যাদের সঙ্গে পশ্চিম অথবা মধ্য আফ্রিকার কোনো যোগাযোগও নেই। ফলে কীভাবে তারা আক্রান্ত হয়েছেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। বেশির ভাগ আক্রান্তের শরীরে ঘায়ের মতো পাওয়া যাচ্ছে। আক্রান্তদের অনেকেই সমকামী ও উভকামী কম বয়স্ক পুরুষ। তবে এটিই একমাত্র কারণ তা নয়।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিজ্ঞান বিষয়ক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক স্যার পিটার হরবি বিবিসিকে বলেন, আমরা খুব নতুন এক ধরনের পরিস্হিতির মধ্যে রয়েছি। যা খুব বিস্ময় এবং উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো।

তিনি বলেন, আমরা দ্বিতীয় এক কোভিড মহামারিতে পড়তে যাচ্ছি ব্যাপারটা এমন না। তবে ভাইরাসটি জেঁকে বসার আগেই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিত্সা দিয়েছেন ডা. হিউ অ্যাডলার। তিনি বিবিসিকে বলেন, এর যে আচরণ আমরা এখন দেখছি তা আগে দেখা যায়নি। যা আশ্চর্য হওয়ার মতো। এখন পর্যন্ত এটুকু জানা যাচ্ছে যে এই প্রাদুর্ভাব ব্যতিক্রমী কিন্তু কেন সেটি জানা যাচ্ছে না। দুটি বিকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে। হতে পারে ভাইরাসটি পরিবর্তিত হয়েছে। অথবা ভাইরাসটি বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সঠিক সময়ে উত্কৃষ্ট পরিবেশ পেয়েছে। তবে মাঙ্কিপক্স কোভিডের মতো এত দ্রুত মিউটেড বা ধরন পরিবর্তন করে না।

ডা. হিউ অ্যাডলার বলেন, গুটি বসন্তের যুগের চেয়ে এটি সম্ভবত দ্রুত ছড়াচ্ছে। কিন্তু এমন কোনো ইঙ্গিত নেই যে এটি ব্যাপকহারে ছড়াবে। তিনি এখনো মনে করছেন, এই প্রাদুর্ভাব নিজে নিজেই শেষ হবে।

বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, মাঙ্কিপক্স পরিচিত ভাইরাস এবং স্মলপক্সের টিকা এর বিরুদ্ধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর বলে পরীক্ষায় দেখা গেছে। তবে কীভাবে এই প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে সেটি জানতে পারলে পরে কি হতে যাচ্ছে সেটি অনুমান করা সহজ হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here