• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

বদলে যাবে ২১ জেলার অর্থনীতি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে। মোংলা ও পায়রা বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হবে। এই বৃহৎ অঞ্চলে গড়ে উঠবে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ইপিজেড। পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার বাড়বে। সারাদেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এক সমীক্ষা অনুযায়ী, পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর জিডিপি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ২১টি জেলা ৩টি বিভাগের অন্তর্গত। এগুলো হচ্ছে- বরিশাল বিভাগের বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি। ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী। এছাড়া খুলনা বিভাগের খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও মাগুরা। স্বাধীনতার পর থেকে এই জেলাগুলো ছিল অবহেলিত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই এসব জেলায় উন্নয়নের জোয়ার শুরু হয়। বৃহত্তর এই অঞ্চলকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অনুধাবন করেই প্রকল্প হাতে নেন।

দেশের বড় তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বরিশাল বিভাগেই নির্মাণের পরিকল্পনা করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বিদ্যুতের সরবরাহ বাড়লে এই এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন হবে। পায়রা বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন, ফোর লেনের পায়রা সেতু, শেরে বাংলা নৌঘাঁটি ও ইপিজেড স্থাপিত হলে পুরো দক্ষিণাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জোনে পরিণত হবে। পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হলে বরিশালের জেলাগুলোর সঙ্গে সারাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটনের প্রসার বাড়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পায়রা থেকে কুয়াকাটার বিস্তৃত এলাকা ঘিরে পর্যটনভিত্তিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার। এই মাস্টার প্ল্যানে থাকছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, আধুনিক পর্যটনকেন্দ্র, শিল্পভিত্তিক বন্দরনগরী, পরিকল্পিত নগরায়ন, যোগাযোগ, অর্থনীতি ও কৃষি খাতের উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা ও দুর্যোগ ঝুঁকিসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাভিত্তিক কার্যক্রম। পদ্মা সেতু এসব ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখবে।

লনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দর আরো গতিশীল হবে। ব্যবসায়ীরা আমদানি ও রপ্তানিতে উৎসাহ পাবেন। একই সঙ্গে পায়রা বন্দরের গুরুত্বও বাড়বে। আধুনিকায়ন হলে পায়রা বন্দর ভবিষ্যতে এক বৃহত্তম বন্দরে পরিণত হবে। এমনকি ভুটান, পূর্ব নেপাল ও ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রাজ্যগুলো পায়রার মাধ্যমে পণ্য আমদানিতে উপকৃত হবে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, পদ্মা সেতু কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতির চেহারা বদলে দেবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণায় বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে পদ্মা সেতু দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ, বাণিজ্য, পর্যটনসহ অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলকে কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাড়াতে সহায়তা করবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here