• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

পার্কের মত স্কুল, আগ্রহ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

সারি সারি ফুলের গাছ, বিভিন্ন খেলার সরঞ্জাম ও শিশু বান্ধব মনোরম এক পরিবেশ প্রথম দেখায় যে কারো মনে হতে পারে এটি কোন শিশু পার্ক। তবে শিশু পার্ক নয়, এটি নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র। শিক্ষার্থীদের জন্য মনোরম পরিবেশ আর পড়াশুনায় উদ্যম ফেরাতে এমন উদ্যোগ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের।

সরেজমিনে দেখা যায়,  স্কুলের সামনের অংশে নানা জাতের ফুল গাছের মাধ্যমে করা হয়েছে সৌন্দর্য বর্ধন। পরিপূর্ণ পরিকল্পনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একটি শিশু পার্কের মত। আর তারই মাঝে বসানো হয়েছে স্লাইড, স্লীপার, দোলনা, জঙ্গল জিম সহ শিশু পার্কের বিভিন্ন খেলার সরঞ্জাম। শুধু শিশুরা নয় এমন পরিবেশে মুগ্ধ হতে বাধ্য সব বয়সের মানুষ।

মনোরম এমন পরিবেশে এক সাথে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা খেলাধুলা ও শিশু পার্কের মত ঘুড়াঘুড়ি সুযোগ হওয়ায় স্কুল বিমুখ অনেক শিক্ষার্থী হয়েছে স্কুল মুখি।বেড়েছে শিক্ষার্থীদের তুলনা মুলক উপস্থিতি ও পড়াশুনার চাহিদা। এছাড়াও স্কুলের এমন নিরাপদ পরিবেশে নিশ্চিন্ত মনে বাচ্ছাদের স্কুলে পাঠানোর পাশাপাশি খুশি অভিভাবকরা।

বালাগ্রাম মন্তের ডাঙা এলাকার ছবিতা রানীর ছেলে বিমল বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। আগে বিমলকে স্কুলে পাঠাতে অনেক কাঠখড় পুড়াতে হতো ছবিতা রানীকে।

তবে এখন স্কুলে যাওয়ার জন্য বিমল নিজেই উদ্যমী জানিয়ে ছবিতা রানী বলেন, বিমল আগে স্কুল যেতে চাইত না। সে অনেক ঝামেলা করত স্কুলে যেতে এখন তাকে আর বলা লাগেনা। সেদিন স্কুলে গেলাম স্কুলের পরিবেশ দেখে অবাগ হয়েছি। বিমল ও তার বন্ধুরা খেলছিল টিফিন টাইমে। এমন স্কুল সচারাচর দেখা যায় না ধন্যবাদ স্কুল কর্তৃপক্ষকে।

একই এলাকার বিপ্লব ঘোষ বলে, শুধু স্কুলের পরিবেশ নয়, পরিবেশের মতই সুন্দর স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা। তারা ছেলে মেয়েদের এমন যত্ন নেয় শিক্ষকরা তা এখানে না দেখলে বুঝতাম না। স্কুলটির রেজাল্ট ও অনেক ভালো। আর পরিবেশ তো আপনারা দেখলেন।

পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী  ছামিয়া আক্তার বলে, আগে মাঠটা ফাঁকা ছিলো। কেমন দেখাতো সার পার্কের মত করে দিছে। এখন আমাদের খেলা ধুলা আর পরিবেশ টাও ভালো লাগে। আমি নিয়মিত স্কুলে আসি।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আফজালুর রহমান বলেন, আসলে আমরা মনে করি যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায় না। যখন স্কুলে আসতে চায়না তখন তাদের স্কুলের প্রতি তত আগ্রহ থাকে না। তো আমাদের চিন্তা হয়েছে যে স্কুলের প্রতি কিভাবে তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করা যায়। স্কুলে তারা নিয়মিত হলে তারা পড়ালেখার ক্ষেত্রে এমনিতে আগ্রহী হবে। এরই ধারাবাহিকতায় এই আমরা উদ্যোগ নেই যে স্কুলের পরিবেশ টা শিশু বান্ধব করি। পরিবেশ যখন শিশু বান্ধব হবে তখন শিক্ষার্থীদের পিছনে আমাদের ছুটতে হবেনা, শিক্ষার্থীরাই প্রতিদিন স্কুলে আসবে। সে যায়গা থেকে এই ব্যতিক্রম কিছু করা।  এতে আমার সহকর্মীরা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার আমাদের অনেক সাহায্য করেছে দিক নির্দেশনা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান বলেন, শিক্ষাই জাতীর মেরুদণ্ড।যদি আমরা মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে জাতী অনেক টা পিছিয়ে থাকবে। দীর্ঘ ২ বছর করোনা মহামারীর কারনে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে,শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে অনেক টা দূরে থাকার কারনে তারা স্কুল মুখী হন নাই। তাদের শিক্ষার পরিবেশ থেকে অনেকটাই তারা দূরে ছিল। এই ভিতি কাটিয়ে তোলার জন্য আমাদের মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা, তাদের স্কুল ভীতি কাটিয়ে পুনরায় তাদের স্কুলের পরিবেশে নিয়ে আসার জন্য পড়াশুনার পাশাপাশি মানবিক বিকাশে কোন বিকল্প নাই।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কে স্কুলে ফিরে আনার জন্য বালাগ্রাম সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অত্যান্ত প্রশংসনীয়। এ ক্ষেত্র উপজেলা প্রশাসন, আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য আমাদের জন প্রতিনিধি দের আন্তরিক সহযোগিতা রয়েছে। এই পরিবেশ উপজেলার অনান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছরিয়ে দেওয়ার প্র‍য়াস অব্যাহত থাকবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here