• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে এক গুচ্ছগ্রামে থাকছে দুই জেলার মানুষ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

কুড়িগ্রামে এক গুচ্ছগ্রামে থাকছে দুই জেলার মানুষ। পারস্পারিক সমঝোতায় একসাথে বসবাস করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দ না পাওয়ায় হতাশ বহিরাগত জেলার পরিবারগুলো। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোড়কমন্ডপ গুচ্ছগ্রামে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৮ সালে ধরলা নদীর ধূ-ধূ বালুচরে ৩৫৩ মেট্রিকটন বরাদ্দকৃত চালের বিপরীতে ৫ একর জমিতে ফুলবাড়ী উপজেলার ভূমিহীন ৬০টি পরিবারের জন্য গুচ্ছগ্রামটি নির্মাণ করে দেয়া হয়। গুচ্ছগ্রাম লাগোয় লালমনিরহাট জেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা ও চরফলিমারী গ্রাম। নাওডাঙ্গা থেকে গুচ্ছগ্রামটি যেতে ধরলা নদীর শাখা পেরুতে হয়। এছাড়াও গুচ্ছগ্রামের দু’পাশেই রয়েছে ধরলা নদী। ফলে ফুলবাড়ী উপজেলার মানুষ জনবসতীহীন গুচ্ছগ্রামটিতে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অপরদিকে গুচ্ছগ্রামের পাশেই লালমনিরহাট জেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম অবস্থিত। বন্যার সময় বসতবাড়ীতে পানি উঠলে লালমনিরহাট অঞ্চলের মানুষ উঁচু গুচ্ছগ্রামটিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ২০২০ সালের বন্যা ও নদী ভাঙনের ফলে লালমনিরহাট জেলার বুমকা ও চরফলিমারী গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার এখানে এসে আশ্রয় গ্রহন করে। পরবর্তীতে ১৫টি পরিবার গত দুবছর ধরে সেখানে আশ্রয় নিয়ে আসছে। এখানকার ৬০টি বসতবাড়ী বিপরীতে মাত্র ১৭টি পরিবার বসবাস করছে। এরধ্যে মাত্র দুটি পরিবার ফুলবাড়ী উপজেলার।

নৌকায় ধরলা নদীর শাখা পাড় হতে গিয়ে মাঝি ছফর আলী জানান, ফুলবাড়ী থেকে গুচ্ছগ্রামটি দূরে হওয়ায় যারা বরাদ্দ পেয়েছে তারা এখানে থাকে না। ফলে আমরা লালমনিরহাট জেলার ১৫টি পরিবার এখানে বসবাস করছি। আমরা ফুলবাড়ীতে আবেদনও করেছি। কিন্তু কোন সাঁড়া পাইনি।

গুচ্ছগ্রামের ফুলবাড়ী এলাকার বাসিন্দা জরিমন জানান, অবস্থাপন্নদের ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা ঘরগুলোতে বিভিন্ন মালামাল রেখে তালা দিয়ে রেখেছেন। থাকছেন নদীর ওই পারে নিজস্ব বাড়ীতে।

একই কথা জানালেন লালমনিরহাট এলাকার অধিবাসী নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, গুচ্ছগ্রামটিতে আসার কোন রাস্তা নেই। বিদ্যুৎ সুবিধা নেই। জনহীন এলাকা হওয়ায় রাতে কন্যাসন্তান-বউঝিদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থাকেন তারা। ফলে অনেকেই এখানে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বিশেষ করে দিনমজুর পরিবারগুলোর এখানে কোন কাজকর্ম না থাকায় তারা আর এখানে আসছেন না। আমাদেরকে ঘর বরাদ্দ দিলে তাদের কোন আপত্তি থাকবে না।

নাওয়াঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডপ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আয়েজ উদ্দিন জানান, অপরিকল্পিতভাবে এই গুচ্ছগ্রামটি প্রায় লালমনিরহাট সীমান্তে স্থাপন করা হয়েছে। ফলে আমার এলাকার মানুষ ওই ধূ-ধূ বালুচরে কেন থাকবে। এখন যেহেতু গুচ্ছগ্রামের ঘরগুলো ফাঁকা রয়েছে সেখানে লালমনিরহাট জেলার মানুষ থাকলে আমার কোন আপত্তি নেই। কারণ তারা বাংলাদেশের নাগরিক। তারা নদী ভাঙনে স্বর্বস্থ হারিয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিৎ দ্রুত তাদের নামে ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়া। এতে প্রধানমন্ত্রীর একটি মানুষও গৃহীন থাকবে না কথাটি স্বার্থক হবে।

এনিয়ে কথা বলতে গেলে ফুলবাড়ী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত প্রথমে কথা বলতে না চাইলেও পরে তিনি জানান, গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ, পরিকল্পনা ও ঘর বরাদ্দে কোন অনিয়ম হয়নি। লালমনিরহাট জেলার অধিবাসীরা আবেদন করেছে স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি আমার নলেজে এসেছে। আমি সরজমিন এলাকাটি ঘুরে দেখেছি। প্রকৃত ভূমিহীন যদি অন্য জেলার মানুষও হয় তাহলেও আমরা খতিয়ে দেখবো।

Place your advertisement here
Place your advertisement here