• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

বাংলাদেশের একের ভেতর তিন লড়াই

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

তাঁকে যখন যা করতে বলা হয়, করেন তা-ই। বোলার মেহেদী হাসানকে ব্যবহার করা যায় যখন-তখন। নতুন বল হাতে নিতেও যেমন দ্বিধা করেন না, তেমনি ইনিংসের মাঝে কিংবা ডেথ ওভারে বোলিং করতে দিলেও কোনো আপত্তি নেই অফস্পিনারের। এ কারণেই তাঁর বড় ভক্ত বনে যাওয়া রাসেল ডমিঙ্গো তরুণ শিষ্যকে বলছেন, ‘থ্রি ইন ওয়ান’ ক্রিকেটার।

টি-টোয়েন্টিতে এমন ক্রিকেটাররা খুবই কার্যকর। প্রথমে হোঁচট খেয়ে এবং পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে সুপার টুয়েলভ পর্বে আসা দলের মূল অভিযান শুরুর আগের দিন দলের আরো কয়েক তরুণকে নিয়েও ভীষণ উচ্ছ্বসিত শোনাল হেড কোচের কণ্ঠ। এঁদের মধ্যে দুর্দান্ত উইকেটকিপিং দিয়ে ম্যাচপিছু কিছু রান বাঁচানোর উদাহরণ হিসেবে এলেন নুরুল হাসান। ছোট হলেও কম বলে বেশি রান তুলে দেওয়ার কৃতিত্ব পেলেন আফিফ হোসেনও। তবে এই তিনজনেই তো আর সব হয়ে যাবে না। আজ শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়ে সুপার টুয়েলভ পর্ব শুরু করতে হলে জ্বলে উঠতে হবে সদলবলেই।

এই জ্বলে ওঠার পথে আবার ‘থ্রি ইন ওয়ান’ লড়াইও আছে বাংলাদেশের। একের ভেতরে তিন লড়াইয়ের প্রথমটি বাইরের দুনিয়া থেকে মনোযোগ সরিয়ে ফেলার। আপাতদৃষ্টিতে যা বেশ কঠিনই মনে হচ্ছে। বাছাই পর্বে পাপুয়া নিউ গিনিকে হারানোর পর তাঁদের ‘ছোট করে’ করা সমালোচনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর নিজ মুখেই দিয়েছেন মাহমুদ উল্লাহ। বিষয়টি সেখানেই থামলে কথা ছিল। কিন্তু না থেমে সেটি এখনো চলমান। বোর্ড সভাপতির বক্তব্যে দল নাখোশ হয়েছে বলে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ইঙ্গিত দেওয়ার পর দেশ থেকে কথার খই ফোটাচ্ছেন নাজমুল হাসানও। তাই অখণ্ড মনোযোগে শ্রীলঙ্কাকে সামলাতে নামার আগে বাইরের আলোচনা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার দাবিও থাকছে।

এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরো দুটি লড়াইও। সেটি ব্যাটিংয়ে নিজেদের মেলে ধরার যেমন, তেমনি শ্রীলঙ্কার বৈচিত্র্যময় স্পিন আক্রমণ সামলানোরও। ডমিঙ্গোও স্বীকার করলেন যে, ‘ব্যাটিংয়ে এখনো আমরা নিজেদের খুব ভালোভাবে মেলে ধরতে পারিনি।’ আবার লঙ্কান স্পিনারদের ভালোভাবে খেলে দেওয়া নিয়েও আছে শঙ্কা। বিশেষ করে ম্যাচপূর্ব আলোচনার বড় অংশের দখল নিয়ে ফেলেছেন লঙ্কান লেগস্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাই। চোটের জন্য ‘রহস্য স্পিনার’ মহেশ থিকসানার আজকের ম্যাচ খেলা নিয়ে ঘোরতর সংশয় তৈরি না হলে বলা যেত যে আরো বড় চ্যালেঞ্জই অপেক্ষায় বাংলাদেশের।

দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে স্পিন বিষেই নাকাল করে আসা বাংলাদেশও প্রতিপক্ষকে স্পিন দিয়েই পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানানোর ছক কষছে। গতকাল দুপুরে যখন সংবাদ সম্মেলনে এলেন ডমিঙ্গো, তখনো শারজার উইকেট তাঁর নিজ চোখে দেখা হয়নি। তবে এখানকার মাঠে নতুন উইকেট বানানোর পর আইপিএলের কিছু ম্যাচে যা হয়েছে, তাতে চোখ চকমকিয়ে উঠেছে এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচেরও। দূরের বিদেশে এসেও ঢাকার স্বাদ পাওয়ার সম্ভাবনায় আকৃষ্ট হয়ে বললেন, ‘তথ্য-পরিসংখ্যান দেখে যা বুঝেছি, তাতে মনে হচ্ছে শারজার উইকেটও ঢাকার মতোই। আশা করছি, কালকের ম্যাচে তা আমাদের সুবিধাই করে দেবে।’

অর্থাৎ এই ম্যাচে বাংলাদেশের স্পিনসজ্জা বাড়ছে নিশ্চিত। অবশ্য স্পিন সহায়ক উইকেটের সুবিধা লুফে নিতে তৈরি শ্রীলঙ্কাও। তাদের অধিনায়ক দাসুন শানাকা ডমিঙ্গোর আগেই সংবাদ সম্মেলনে এসে বলে গেছেন, ‘ফাস্ট বোলারদের চেয়ে স্পিনাররা এখানে বাড়তি কিছু সুবিধা পেতে পারে। আইপিএলের বেশ কিছু ম্যাচে এই ভেন্যু ব্যবহার করা হয়েছে। আমরাও এই ম্যাচ নিয়ে ভালো পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছি।’

সেই পরিকল্পনার পুরোভাগেই আছেন সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান, ‘বিশেষ করে সাকিব ও ফিজকে (মুস্তাফিজ) নিয়ে আমরা ভাবছি। তাই বলে অন্য স্পিনারদের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের পরিকল্পনা দারুণ। আশা করি, ফলও আমাদের পক্ষেই আসবে।’ পাঁচ-পাঁচটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয়হীন কাটিয়ে দেওয়ার পর বাংলাদেশও নামছে সেই খরা ঘোচানোর তাড়নায়। প্রবল বিক্রমে বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই ২৬ বছর পর শারজায় ফিরছে বাংলাদেশ। ১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপে শেষবার এখানে খেলেছিল তারা। প্রথমবার ১৯৯০ সালের এপ্রিলে অস্ট্রেলেশিয়া কাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ওপেনার আজহার হোসেনের ব্যাটে দেখা মেলে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে ফিফটির।

এত বছর পর যখন আবার শারজায় উল্লেখযোগ্য কোনো কীর্তির সন্ধানে বাংলাদেশ, তখন সামনে ‘একের ভেতর তিন’ লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জও।

Place your advertisement here
Place your advertisement here