রংপুরের কিশোর শহীদ শংকুর স্মৃতিস্তম্ভ চান মা
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২২
Find us in facebook
রংপুরের কিশোর শহীদ শংকুর স্মৃতিস্তম্ভ চান মা
রংপুর সদরের কৈলাস রঞ্জন হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শংকু সমাজদার। তিন ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পাকিস্তানি শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে হরতালের সমর্থনে ডাকা মিছিলে বড় ভাই কুমারেশ সমাজদারের সঙ্গে যোগ দেয় শংকু সমাজদার। মিছিলটি সকাল ১০টার পর রংপুর শহরের আলমনগর এলাকায় যেতেই হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হয় কিশোর শংকু। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মিছিলটি তখন ছত্রভঙ্গ হলেও ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রংপুরসহ পুরো দেশ।
শংকু সমাজদার রংপুর অঞ্চলের প্রথম শহীদ। এদিন পাকিস্তানি বাহিনী ও সমর্থকদের গুলিতে আরও দুই জন শহীদ হন। তাঁরা হলেন আবুল কালাম আজাদ এবং ওমর আলী। আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এ ঘটনার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দেওয়া ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেও রংপুরের রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হওয়ার কথা বলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার অব্যবহিত পূর্বে শহীদ শংকুর পরিবারকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু রংপুর সদরের কামাল কাছনায় (বর্তমান ২৪ নম্বর ওয়ার্ড) ১০ শতাংশ জমিসহ একটি টিনের ঘর বরাদ্দ দেন। শংকু সমাজদারের নাম সরকারিভাবে শহীদের তালিকায় থাকলেও কোনো ভাতা পায়নি তার পরিবার। বড় ভাই কুমারেশ সমাজদার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ৩ জুলাই মারা যান। দুই সন্তানকে হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন তাঁদের মা দীপালি সমাজদার। জীবনসায়াহ্নে ৮৫ বছরের এই বৃদ্ধার একটাই দাবি- শহীদ সন্তান শংকু সমাজদার স্মরণে রংপুরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হোক।
দীপালী সমাজদার বলেন, 'আমি খুব কষ্টে আছি। বড় ছেলেটাও মারা গেছে। মেয়েটা দেখাশোনা করে। আমার একটাই চাওয়া- শংকুর নামে সরকার স্মৃতিস্তম্ভ করুক। টাকা-পয়সা দিলে দিক; না দিলে নাই। ছেলেটা দেশের জন্য রক্ত দিছে। তারে সবাই মনে রাখুক।'
১৯৭০ সালের নির্বাচনে গোটা পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করলেও দু'দিন আগে কোনো কারণ ছাড়াই তা স্থগিত করা হয়। স্থগিতের ঘোষণা শুনেই ১ মার্চ তাৎক্ষণিক সারাদেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ৩ মার্চ হরতাল পালিত হয় কেন্দ্রীয়ভাবে। এদিন সারাদেশের মতো ক্ষোভে উত্তাল ছিল রংপুরও।
শহীদ শংকুর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে সেই মিছিলের সহযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা রংপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু বলেন, 'হরতালের সমর্থনে সাধারণ মানুষ শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সমবেত হয়। সাড়ে ৯টার পর মিছিল শুরু হয় এবং শহরের কিছু এলাকা প্রদক্ষিণ করে স্টেশন রোড দিয়ে এগোতে থাকে। মিছিলটি যখন আলমনগর এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল তখন উর্দুতে লেখা একটা সাইনবোর্ড চোখে পড়ে আমাদের। বর্তমান ঘোড়াপীর মাজারের সামনে সে সময় অবাঙালি সরফরাজ খানের বাসায় (বর্তমান আমদানি রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়) উর্দুতে লেখা ওই সাইনবোর্ড মিছিলে থাকা কয়েকজন নামাতে যায়। আর তখনই বাসার ভেতর থেকে মিছিলটি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হতে থাকে। সেখানে গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ১৩ বছরের কিশোর শংকু সমাজদারও ছিল। মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শংকু মারা যায়। হাসপাতালে মারা যান আরও দু'জন।'
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন- 'আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভায়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে।' রংপুরের কথা বলে বঙ্গবন্ধু শংকুসহ শহীদ হওয়া তিনজনের কথাই বলেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছরেও শংকু স্মরণে রংপুরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। অপর দুই শহীদ পরিবার সম্পর্কে মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, তাঁরা মোটামুটি চলতে ফিরতে পারেন। তবে শংকুর পরিবার অসহায়।
শংকুর বাবা সন্তোষ কুমার সমাজদার ছিলেন পুরোহিত। তিনি ২০০৯ সালে মারা যান। শংকুর একমাত্র বোন ঝর্ণা ব্যানার্জী মায়ের দেখাশোনা করেন। স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিকা ঝর্ণা সমকালকে বলেন, 'মায়ের বয়স ৮৫ বছর। তিনি ভীষণ অসুস্থ। দুইবার স্ট্রোক হয়েছে। সিটি করপোরেশন মায়ের চিকিৎসায় মাসে ৫ হাজার টাকা ভাতা দিচ্ছে। স্কুল থেকে যা পাই, তাই দিয়ে মা এবং আমার সংসার চলছে।' তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর সরকার তাঁদের ১০ শতাংশ জমি দিয়েছিলেন, যা অনেক বছর পরে ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন রেজিস্ট্রিমূলে দলিল করে দিয়েছে।
শহীদ শংকু স্মরণে বেসরকারি উদ্যোগে ২০২০ সালে একটি বিদ্যানিকেতন গড়ে তোলা হয়েছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমর ফারুক এই বিদ্যানিকেতনের উদ্যোক্তা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শহীদ শংকু সমাজদার একটি সাহসের নাম। তার মায়ের ইচ্ছানুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান শহীদ শংকুর চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে জানাতে কাজ করে যাচ্ছে।'
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ বিষয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান বলেন, 'শহীদ শংকু সমাজদারের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য তার বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-সংবলিত একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। তার পরিবারের থাকার জন্য তাদের বাড়ি সংস্কার এবং বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। আরও যদি কিছু করা যায়, অবশ্যই সেটা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রংপুরে ছোট-বড় অনেক বধ্যভূমি থাকলেও সরকারিভাবে ১৩টি চিহ্নিত করা হয়েছে। বেশিরভাগ বধ্যভূমিতে নামফলক ও শহীদদের তালিকা টাঙানো হয়নি। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন স্থান।
জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান বলেন, শহীদদের নামের তালিকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি করা হচ্ছে, যা এখনও চলমান। ৫টি বধ্যভূমি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে নির্মিত হয়েছে এবং রংপুর সেনানিবাসের পশ্চিমে নিসবেতগঞ্জ বধ্যভূমিতে স্মারক নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ ছাড়া রংপুর টাউন হলের পেছনে একটি বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হয়েছে, যা মুক্তিযুদ্ধে 'বাঙালি নারীদের টর্চার সেল' হিসেবে পরিচিত ছিল। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে এই শহীদদের ত্যাগ ও দেশপ্রেমের কথা জানতে পারে, সে লক্ষ্যে এই বধ্যভূমি তথা টর্চার সেল থেকে উদ্ধারকৃত কাপড় ও হাড় উত্তরবঙ্গ জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য দেওয়া হয়েছে।
- রাণীশংকৈলে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী
- বোদায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থীরা পেল শিক্ষাবৃত্তি
- পার্বতীপুরে ক্রীড়া সামগ্রি ও হুইল চেয়ার বিতরণ
- সুন্দরগঞ্জে গ্রাম পুলিশদের অবহিতকরণ প্রশিক্ষণ
- আবারও তিনদিন বাংলাবান্ধার ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা
- পীরগঞ্জে তীব্র দাবদাহে প্রস্তুতি সভা
- সুন্দরগঞ্জে তাপদাহে গরুর মৃত্যু
- আরপিএমপি ট্রাফিক বিভাগের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ
- পীরগাছায় উপজেলা নির্বাচনের প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
- ডোমারে ৩ দিনব্যাপী সমন্বিত পুষ্টি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন
- বেরোবিতে একাউন্টিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান উমর ফারুক
- রংপুরে ২০০ রিকশাচালককে ক্যাপ ও ছাতা দিলেন বিথী
- কালীগঞ্জে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি আটক
- হাতীবান্ধায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ
- ভ্রু ম্যাজিক
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে
- ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’
- ট্রেনের টিকিট এবার ভেন্ডিং মেশিনে, দাঁড়াতে হবে না লাইনে
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- পাকিস্তান-ইরানের সম্পর্কের নতুন মাত্রা
- ‘জলবায়ু অভিযোজনে সফলতার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জরুরি’
- পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব হলেন ১৩০ জন
- আমিরাতে পৌঁছেছে জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ, সুস্থ আছেন নাবিকরা
- ঢিলেঢালা পোশাক ও যথাসম্ভব ছায়ায় থাকুন: চিফ হিট অফিসার
- দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড
- দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- ‘যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত’
- ফজর সালাতের প্রতি আর গাফেলতি-অলসতা আসবে না, যদি...
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- বুয়েটে জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম তদন্ত করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- ফুলবাড়ীতে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- জলবিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- সুন্দরগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য
- আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- শরীরে মেদ জমেছে নাকি পানি, বুঝবেন যেসব লক্ষণে
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- পুলিশের আজান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীরা