• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

মজিদুলের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৮-১০ লাখ টাকা 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেছেন। সংসারে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানও রয়েছে। চাকরি করতেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়। স্ত্রী-সন্তান আর মা-বাবাকে নিয়ে বেশ ভালোই কাটছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই গত বছরের অক্টোবরে অসুস্থ হয়ে পড়েন মজিদুল ইসলাম। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার শরীরে কিডনি রোগ ধরা পড়েছে।

সেই থেকে হাসপাতালে যাওয়া-আসা করতেই কেটে গেছে ৫ মাস। এখন দিনমজুর বাবার জমানো কিছু টাকা আর মজিদুলের কর্মস্থল থেকে দেওয়া সহযোগিতার অর্থে কোনো রকমে চলছে চিকিৎসা। তবে দিন যতই যাচ্ছে ততই কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা না হওয়ায় বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি।

মজিদুলের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৮-১০ লাখ টাকা। এখন ছেলের চিকিৎসা আর সংসারের খরচ চালাতে মজিদুলের দিনমজুর বাবা আলতাফ হোসেনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এজন্য ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহায়তার আকুতি জানিয়েছে অসহায় পরিবারটি।  

৩০ বছর বয়সী মজিদুল ইসলাম রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের ভূতছাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। দারিদ্র্য ও অর্থাভাবের মধ্যেও মজিদুল ইসলাম পড়াশোনা করেছেন। স্থানীয় সাব্দি আলিম সুন্নাহ মাদরাসা থেকে আলিম পাস করে ২০১৪ সালে টিএমএসএস নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি নেন। তার কর্মস্থল ছিল ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর শাখায়। কিন্তু কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর কর্মস্থলে দীর্ঘ বিরতির কারণে তার সেই চাকরিটাও এখন হাতছাড়া।  

বর্তমানে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোবাশ্বের হোসেনের পরামর্শে চিকিৎসা চলছে। এখন নিয়মিত কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে তাকে। তবে চিকিৎসক বলছেন, মজিদুলের একটি কিডনি ট্রান্সফার (সংযোজন) ও নিয়মমতো ডায়ালাইসিস করলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এজন্য সব মিলে খরচ হবে ৮-১০ লাখ টাকা।

এদিকে ছেলের চিকিৎসার জন্য দেশের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন বাবা আলতাফ হোসেন। দিনমজুর এই বাবা বলেন, আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে মজিদুলের কিডনি ডায়ালাইসিস করে আসছি। প্রতিবার ডায়ালাইসিস করতে  ৪০০ টাকার বেশি খরচ হয়। আর বাইরে করলে প্রতিবারে তিন হাজার টাকা লাগে। আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা কোথায় পাব? যে টাকা ছিল এই কয়েক মাসে তা শেষ হয়ে গেছে। এখন ছেলের চিকিৎসা চালানোর সামর্থ্য আমার নেই। তাই আপনাদের মাধ্যমে সরকারসহ সমাজের বিত্তবান মানুষদের কাছে আকুল আবেদন জানাই, আমার ছেলেটাকে বাঁচাতে সবাই সহযোগিতা করেন।

মজিদুলের স্ত্রী আরিফা বেগম বলেন, আমাদের সামর্থ্য নেই। আল্লাহ্ ছাড়া কেউ আমাদের কষ্ট বুঝবে না। এখন স্বামী-সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইছি। যদি সমাজের বিত্তবান মানুষরা এগিয়ে আসেন, তাহলে আমার স্বামীর কিডনি সংযোজন করা সম্ভব হবে।

মজিদুল কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে পরিবারের কারও মুখে আগের সেই হাসি নেই। সবার চোখে-মুখে এখন অজানা শঙ্কা। চিকিৎসার জন্য দেশবাসীর কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন তার ছোট ভাই মাস্টার্সপড়ুয়া মোকছেদুল ইসলাম। মোকছেদুল বলেন, আমার ভাই বাঁচতে চায়। প্রতি সপ্তাহে হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করতে নিয়ে যাই। ভাই তখন আমার দিকে চেয়ে  বলে আমার জন্য কিছু কর। কিন্তু আমাদের পরিবারের তো একসঙ্গে ৮-১০ লাখ জোগাড় করা সম্ভব নয়। এজন্য এখন গ্রামবাসী থেকে শুরু করে সারাদেশের মানুষের কাছে ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে ভিক্ষা চাইছি।    

শহীদবাগ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) রোস্তম আলী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মজিদুলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করেছি। কিছু দিন আগে গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে পরামর্শ করেছি। সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে কিডনি রোগে আক্রান্ত মজিদুলের সুচিকিৎসা করা যাবে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের কিডনি বিভাগের প্রধান মোবাশ্বের হোসেন জানান, কিডনির শেষ চিকিৎসা কিডনি সংযোজন ও ডায়ালাইসিস। এই রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কিডনি রোগের একটা ভীষণ খারাপ দিক হলো, প্রাথমিক অবস্থায় বোঝা যায় না। এটা হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগ বাড়িয়ে দেয়। তাই যত দ্রুত কিডনি সংযোজন করা যায়, রোগীর জন্য ততই ভালো।

মজিদুল ইসলামের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে অথবা সরাসরি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ০১৭৭৬৮২৭৯০৮ এই নম্বরে সহায়তা পাঠাতে পারবেন। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংক হরিপুর শাখায় (ঠাকুরগাঁও) মো. মজিদুল ইসলামের নামে খোলা (হিসাব নং-০২০০০১৫৯০৭০৬০) হিসাবে টাকা পাঠানো যাবে। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here