• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

শীতের আগমনে সুস্থতা ও চনমনে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

ঋতু বদলের পালায় আসি আসি করছে শীতকাল। ইতিমধ্যেই প্রকৃতিতে হিম বাতাস বইতে শুরু করেছে। শীতের আগমনী বার্তায় প্রকৃতির রুপ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়তে থাকে মানুষের শরীর ও মনে।

এসময় হঠাৎ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ছেলে-বুড়ো সব বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাড়া খুব সহজে আক্রান্ত হয়ে পড়েন ঠাণ্ডা জনিত যে কোন অসুখে। শীতকালে সাধারণত সর্দি, কাশি, মাথাব্যাথা, জ্বর, গা ব্যাথা, অ্যাজমাসহ নানা রকম বায়ুবাহিত রোগ আক্রান্ত করে। আর কথায়ই আছে শরীর ভালো তো মন ভালো। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাই কোনো কাজও ঠিক মত করা যায় না।

আর যেহেতু শীত মৌসুমে যে কোন মানুষ ভ্রমনে যেতে পছন্দ করেন । বিশেষ করে শীতের ছুটিতে ঘুরার জন্য যেন অপেক্ষাতেই থাকেন । তবে ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে শীতে শুষ্কতা ও রুক্ষতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে রোগ-ব্যাধির প্রবণতাও বাড়তে থাকে। তাই আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠার পাশাপাশি অবশ্যই এই সময় স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া খুব বেশি প্রয়োজন।

শীত আসার শুরুতেই যদি নিত্যদিনের জীবনধারায় কিছু বিষয়ে মনোযোগ দেয়া যায় তাহলে ফুরফুরে মেজাজে হিমেল পরশকে সুস্থতার সঙ্গে উপভোগ করা সম্ভব। তবে শরীর নামের যন্ত্রটা যাতে ঠিকঠাক মতন চলতে থাকে সেই নিশ্চয়তাটুকু করে নিতে হবে নিজেরই।

শীতকালে সুস্থ থাকতে কিছু সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দীপণ চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রত্যেক বয়সের মানুষকেই শীতকালের উপযোগী করে রাখতে খানিকটা বাড়তি খেয়াল রাখার প্রয়োজন আছে। শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত রোগ বা ফ্লু একটি সাধারণ রোগ। প্রায় ২০০ এর বেশি ভাইরাসের আক্রমণের কারণে হয়ে থাকে এই ফ্লু।এটি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে।  ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তার জন্য যা করতে হবে: 

হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় নাকে মুখে টিস্যু পেপার বা রুমাল চেপে ধরুন।হাঁচি বা সর্দি কাশির পর হাত ভালোভাবে সাবান অথবা পানি দিয়ে ধৌত করুন।হাতের কাছে পানি বা হ্যান্ডওয়াশ না থাকলে অ্যালকোহল ভিত্তিক ট্রাভেল হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। ঠাণ্ডা বা ফ্লু জনিত রোগে আক্রান্ত এমন লোকের সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হলে প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নিন। বাড়ির বাইরে বেরোনো একটু কমিয়ে দিন। মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, পেশী ব্যথা ও জ্বর কমাতে সাহায্য করে প্যারাসিটামল। প্রয়োজনে  প্যারাসিটামল খেয়ে নিন।বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন। প্যারাসিটামল গ্রহণ এর আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
শীতকালে উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন খাদ্য খাওয়া উচিত।এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শীতকালে আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন-প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার।ভিটামিন বি, সি, ডি ও ই জাতীয় উচ্চ ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার।শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য কম খাবেন। টাটকা ফল ও সবজিতে আছে বায়োটিন যা ত্বক ও চুল সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফুলকপি, মটরশুটি, বাঁধাকপি, শিম ও গাজর বেশি করে খাবেন।লেবু জাতীয় ফল যেমন- মালটা, কমলা, বাতাবি লেবু বেশি করে খাবেন ।এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি’ থাকে। ভিটামিন সি টক ও মাড়ি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
শীতের দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। কারণ শীতে শরীর শুষ্ক হয়ে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই নিজেকে পানি পান করে হাইড্রেট রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।যাদের ঠাণ্ডা পানিতে এলার্জি সমস্যা থাকে তারা গরম পানি পান করুন।
শীতকালে কর্ম উদ্দীপনা কম থাকে, শরীর অসার বোধ হয়, মনে হয় সকাল টা বিছানায় ঘুমিয়ে পার করে দেই। কিন্তু এরকম বদ অভ্যাস অবশ্যই বর্জনীয়। নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন, পরিশ্রম করুন, শরীর থেকে ঘাম ঝরান। এতে শরীর সুস্থ ও তরতাজা মনে হবে। বাঙালি জাতি আসলেই ভাগ্যবান কারণ শীতকালে যেমন  আবহাওয়া অনেক শীতল থাকে তেমনি  রৌদ্রোজ্জ্বল দিন ও আমরা উপভোগ করি।তাই প্রতিদিন নিয়ম করে একটু হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করা যেতেই পারে এতে শরীর সুস্থ থাকবে।
শরীর উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। শীতকালে গরম কাপড় পরিধান করুন। সম্ভব হলে প্রতিবার হালকা কুসুম গরম পানি পান করুন। সকালের নাস্তা ও দুপুরের নাস্তার পর গরম স্যুপ, ফলের রস ও ডাবের পানি খেতে পারেন। চা-কফি বাদ যাবে কেন? এতে শরীর পানিশূণ্যতার অভাব পূরণ করে, পাশাপাশি শরীর উষ্ণ থাকে।
শীতে হজম শক্তি কমে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে বদ হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তাই শীতকালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম জরুরি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here