• সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৫ ১৪৩১

  • || ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

পানির তোড়ে ভেঙে গেছে এলাকাবাসীর স্বপ্ন

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

নীলফামারীর জলঢাকার পূর্বাংশ দিয়ে বয়ে গেছে চাড়ালকাটা নদী। এ নদীর নাওঘাট স্থানে একটি সেতুর স্বপ্ন দেখছিলেন সদরের রামনগর, জলঢাকার শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। নিজেদের উদ্যোগে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। সেতু নির্মাণ করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলেন তারা। তবে অসময়ের ভারী বর্ষণে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ভেঙে যায় কাঠের দৃষ্টিনন্দন সেতুটি। এতে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে এলাকাবাসীর স্বপ্নও।

জানা গেছে, চাড়ালকাটা নদীর ঘুঘুমারী নাওঘাটে ১৯৭১ সালে একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। বন্যায় সাঁকোটি ভেঙে গেলে স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও সেখানে কোন সাঁকো নির্মাণ হয়নি। সেতুর অভাবে নদীর দুই প্রান্তের মানুষ অতিরিক্ত ১৫ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতেন। এ কারণে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা। সম্প্রতি সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য (নীলফামারী-৩) রানা মোহাম্মদ সোহেল দুই লাখ টাকা অনুদান দেন। এরপর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঘুঘুমারী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও স্থানীয় লোকজনের আর্থিক সহযোগিতায় সাত লাখ টাকা ব্যয়ে সেখানে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করা হয়। রড-সিমেন্টের খুঁটি করে ওই খুঁটির ওপর কাঠের সাঁকোটি নির্মাণে সময় লাগে প্রায় দুই মাস। তবে সেতু নির্মাণের এক মাসের মাথায় টানা চার দিনের ভারি বৃষ্টির পানির তোড়ে ভেঙে যায় কাঠের দৃষ্টিনন্দন সেতুটি।

স্থানীয়রা জানান, ভেঙে যাওয়া সাঁকোর উত্তরে শিমুলবাড়ি, বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ, রাজবাড়ি, ডিয়াবাড়ি, ঘুঘুমারী, বালাপুকুর, মীরগঞ্জ হাট, জলঢাকা উপজেলা সদরসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান। দক্ষিণে হরিশচন্দ্র পাঠ, নীলফামারী জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ, রামগঞ্জ, টুপামারী ও জেলা সদর। শিমুলবাড়ি থেকে এই পথে নীলফামারী জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। ঘুরে গেলে ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। এছাড়া নদীর দুই প্রান্তেই অনেক কৃষকের জমি আছে। তাদের জমির ফসল ঘরে তুলতে ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়। সাঁকো নির্মাণের পর ভেবেছিলেন সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে। তবে নির্মাণের এক মাসের মাথায় সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আগের মতো দুর্ভোগ আর ভোগান্তি পোহাতে হবে তাদের।

ঘুঘুমারী গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু দেখে আমরা নিজেদের চেষ্টায় কাঠের সাঁকো তৈরি করে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছিলাম। কিন্তু আমাদের সেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।

হরিশচন্দ্র পাঠ গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা আবার সমস্যায় পড়লাম। আমাদের দাবি সরকার এখানে একটা পাকা সেতু করে দিক।

ঘুঘুমারী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সদস্য মো. মোমিনুর রশিদ বলেন, আমার জানামতে ২০ বছরেও নদীতে এরকম বন্যা হয়নি। সেতুর দক্ষিণাংশের পিলার ভেঙে যাওয়ার কারণে নদীতে হেলে গেছে। পুরো সেতু এখন পানির নিচে। নদীতে মাত্রাতিরিক্ত স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এরকম স্রোত যদি সারাদিন থাকে তাহলে মনে হয় পুরো সেতুটি ভেঙে যেতে পারে।

জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ওই সেতু আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রাকচার নয়। তবে নদীতে পানি কমলে ঠিক হয়ে যাবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নীলফামারী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফিরোজ হাসান বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় পরে কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে এ সেতুটি নির্মাণ করা হবে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, সেতুর খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here