• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

কাউনিয়ায় বাবার মরদেহ মর্গে রেখে পরীক্ষার কেন্দ্রে সুমনা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের কাউনিয়াতে বাবার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সুমনা আক্তার। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনেই অশ্রুসিক্ত চোখে বাড়ি থেকে বের হয় ওই শিক্ষার্থী। কেন্দ্রে ঢুকে নিজেকেও সামলাতে পারেনি সুমনা। প্রশ্নপত্র নিয়ে এক হাতে চোখ মুছে ও অন্য হাতে খাতায় লিখেছে উত্তর। মাঝে মধ্যে ফুঁপিয়ে কেঁদেও উঠেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কাউনিয়া উপজেলার মোফাজ্জল হোসেন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে ওই শিক্ষার্থীকে। সুমনা আক্তার কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের স্বাব্দী গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে।

জানা গেছে, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সারাদিন আর ফেরেননি সুমনার বাবা শাহজাহান আলী। ওইদিন সন্ধ্যায় বালাপাড়া ইউনিয়নে মৌলভীবাজার এলাকায় তিস্তার শাখা মানাষ নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শুরুতে পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে সুমনার স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করে।

সেখান থেকে পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়। হঠাৎ সুমনার বাবার এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো পরিবারে।

এ ঘটনায় সুমনার পরীক্ষা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটে। গ্রামের অন্য পরীক্ষার্থীরা যখন বই নিয়ে পড়ার টেবিলে, তখন বাবা শোকে কাঁদতে কাঁদতে দিশেহারা সুমনা। সবার ধারণা ছিল এবার হয়তো এসএসসি পরীক্ষায় বসা হবে না তার।

কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার আগেই চোখ মুছতে মুছতে বাড়ি থেকে বের হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় সুমনা। সহপাঠী ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় প্রথম দিনের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। পরীক্ষার্থী সুমনার চোখে পানি দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। সান্ত্বনার হাত বাড়িয়ে কেঁদেছে তার সহপাঠীরাও।

সুমনার সহপাঠী মিথিলা ও শাবানা জানায়, পরীক্ষার হলে বাবার শোকে পুরো সময়ই কেঁদেছে আর খাতায় লিখেছে সুমনা। এ দৃশ্য দেখে আমরা ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। বাবার মরদহে মর্গে রেখে এসে পরীক্ষা দেওয়া সত্যি কঠিন। সুমনার কান্না দেখে আমাদের শিক্ষকরাও শোকাহত।

কাউনিয়া মোফাজ্জল হোসেন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মো. আইযুব আলী জানান, পরীক্ষার্থী সুমনা আক্তারের বাবার মৃত্যুর ঘটনা আমরা শুনেছি। আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা দিতে উৎসাহ দিয়েছি। সবার সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিলে তার জন্য ভালো হবে ভেবে কোনো বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here