রংপুরে প্রাচীন নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে বড়বিল জামে মসজিদ
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২২

Find us in facebook
ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ রংপুরে প্রাচীন নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে কলি ও দলি আমিন বড়বিল পাকা জামে মসজিদ। রংপুর মহানগরী থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে গঙ্গাচড়া উপজেলার পশ্চিমে বড়বিল মন্হনাহাট পার্শ্ববর্তী মিয়াপাড়া এলাকায় মসজিদটির অবস্থান। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন।
পাকা স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছিল বাংলা ১২৪৮ সনে (১৮৪১ খ্রিস্টাব্দ)। মাঝে পার হয়ে গেছে দীর্ঘ ১৮১টি বছর। মসজিদটির গায়ে আরবি হরফে লেখা ফলক দেখে প্রাচীন নিদর্শনটির বয়স সম্পর্কে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রাচীন এই মসজিদটি আজও নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। সেখানে এখনো নিয়মিত নামাজ আদায় চলছে।
কথিত আছে, মিয়াপাড়া গ্রামে আজগর মিয়ার বংশধর কলি আমিন ও দলি আমিন নামে সহোদর বাস করতেন। তাদের উদ্যোগেই মসজিদটি নির্মিত হয়। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি চুন-সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি। মসজিদের ভেতরে কারুকার্যখচিত অসংখ্য নকশা রয়েছে। বিশেষত্ব হলো- একটি নকশার সঙ্গে আরেকটির মিল নেই।
শুধু তাই নয়, ১৩ জন রাজমিস্ত্রি দীর্ঘদিন কাজ করে মসজিদটি নির্মাণ করেন। যাদের সবাই ছিল অচেনা মানুষ। ১৩ জন রাজমিস্ত্রি কাজ করলেও খাওয়ানোর সময় খুঁজে পাওয়া যেত ১২ জন মিস্ত্রিকে। তারা সবাই লম্বা এবং একই রকম দেখতে হওয়ায় খাওয়ার বাদ পড়া একজনকে খুঁজে বের করা যেত না। লোকজনের ভাষায় তাঁরা বিশ্বকর্মা নামে অভিহিত ছিলেন।
স্থানীয়দের দাবি, তাদের পূর্বপুরুষের কাছে শুনেছেন মসজিদটির নির্মাণকাজে ব্যবহৃত চুন-সুরকি, ইট ও নকশা ঘিরে ভাজা। বিশেষ করে নকশাগুলো তৈরির পর তা বিশাল আকৃতির একটি কড়াইয়ে ঘি ঢেলে তাতে ভেজে নেওয়া হতো। দীর্ঘসময় সেই কড়াই মসজিদ নির্মাতাদের উত্তরসূরিরা সংরক্ষণ করলেও এখন তা মসজিদের অযুখানার পাশে রাখা রয়েছে। ঐতিহাসিক এই মসজিদটিকে কেউ কেউ অলৌকিক মসজিদও মনে করেন। এর দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ আজও মানুষকে মোহিত করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বড়বিল মন্হনাহাট থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার পশ্চিমে বড়াইবাড়ি পাকা রাস্তার পাশে দৃষ্টি নন্দন এই মসজিদটি অবস্থিত। ৫২ ফিট দৈর্ঘ্য ও ২১ ফিট প্রস্থ বিশিষ্ট এ মসজিদের ছাদে রয়েছে ৩টি গম্বুজ। যার মাথায় রয়েছে ৪ ফিট উঁচু নকশা। মসজিদের প্রবেশ পথে রয়েছে গাম্ভির্যপূর্ণ তোরণ। মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে সুউচ্চ আজানের মিনার। মসজিদটির ৪ কোণায় ৪টি এবং পূর্ব-পশ্চিমে মাঝখানে ছোট আকারের ৪টি গম্বুজ। ভেতরের গাঁথুনিতে রয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকের নকশা। মসজিদটির গঠন শৈলী দেখে মনে হয় এটি মোঘল আমলের স্থাপত্যকলা অনুসরণ করা হয়েছে। বর্তমানে মূল মসজিদ ঠিক রেখে পশ্চিমে নতুন করে মসজিদের সম্প্রসারিত অংশ বাড়ানো হয়েছে।
কলি ও দলি আমিন মসজিদটি নির্মাণের পর ভূমিকম্পে এটি প্রায় কয়েক ফিট দেবে যায়। তাই অনেকের কাছে এটি দাবা মসজিদ হিসেবেও পরিচিত। তবে ভূমিকম্পে মাটিতে দেবে যাওয়ায় মসজিদের জানালাগুলো মাটির সঙ্গে লেগে গেছে। দরজাগুলো খাটো হয়ে যওয়ায় মসজিদে প্রবেশ করতেও কষ্ট হয়। ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। বর্তমানে মসজিদটি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কাও রয়েছে।
বর্তমানে মসজিদটিতে মুসল্লিদের নামাজের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এর গা ঘেঁষে ৩ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে আয়তন বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুরনো মসজিদটি প্রাচীনকীর্তি হিসেবে রেখে এলাকাবাসী মসজিদের সামনে সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণকাজ করছেন। তবে অর্থাভাবে এখনো নতুন অংশের পুরোপুরি নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।
ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটির বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম সুমন জানান, মসজিদটি নির্মাণের ইতিহাস তিনি তার পূর্বসূরীদের মুখে শুনেছেন। ওই মসজিদ সম্পর্কে লোকমুখে শোনা বিস্ময়কর তথ্যগুলো যুগের পর যুগ ধরে মুখে মুখে প্রচার হয়ে আসছে। বহু বছর ধরে মসজিদের চুন-সুরকি ও ইট ভাজতে ব্যবহৃত কড়াইটি তাদের কাছে সংরক্ষণে রেখেছিলেন। সবশেষ ২০১৬ সালে কড়াইটি মসজিদ কমিটিকে ওয়াকফ করেছেন।
মসজিদ কমিটির সহসভাপতি নূর আলম বলেন, প্রাচীন এই মসজিদটির নির্মাণ বাংলা ১২৪৮ সন এবং ইংরেজি ১৮৪১। পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শোনা মসজিদ নির্মাণে ১৩ জন লোক কাজ করেছে। কিন্তু খাওয়ানোর সময় একজন কম থাকত। এমনকি হাজিরা দেওয়ার সময়ও নাকি ১২ জন ছিল। ঐতিহ্যবাহি এই মসজিদটির গাথুনি ৪৮ ইঞ্চি। নির্মাণে ব্যবহৃত চুন-সুরকি ও ইট ভিয়ে ভাজা ছিল।
স্থানীয় প্রবীণ ও গঙ্গাচড়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, আমরা ছোটবেলায় এখানে মক্তবে আরবি শিক্ষা নিতে এসে মসজিদটি দেখেছি। তখনকার মুরব্বিদের কাছ থেকে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস জেনেছি। ছোটবেলায় মসজিদের নকশা দেখেছি, একটা সারির সাথে আরেকটা কোনো মিল নেই। এমন মসজিদে তিনটি কাতারের বেশি নামাজ আদায়ে জায়গা ছিল না। কিন্তু এখন এটির সংস্কার এবং সম্প্রসারিত হওয়াতে শত শত মানুষ একসাথে নামাজ আদায় করতে পারছেন।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলাল উদ্দিন সরকার বলেন, এটি নির্মাণের পর ১৯৪৯ সালে ভূমিকম্পে দেবে যায়। পরবর্তীতে গ্রামের লোকজন মিলে মসজিদের সংস্কার করা হয়। বর্তমানে পুরনো মসজিদটি প্রাচীনকীর্তি হিসেবে ঠিক রেখে এর সামনের অংশে তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও অর্থাভাবে কাজ থেকে আছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় গবেষক ও লেখক রানা মাসুদ জানান, ঐতিহাসিক এই মসজিদ রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্য। এই মসজিদের যেমন সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, তেমনি রয়েছে অলৌকিক কিছু অজানা তথ্য। এ কারণে এই মসজিদ সাধারণ মানুষকে আকর্ষিত করে। অনেকেই মসজিদটি দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে এখানে বেড়াতে আসে।
#ঢাকা পোস্ট
- মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের ৫১তম শাহাদতবার্ষিকী পালন
- বিএনপি-জামায়াত থেকে সতর্ক থাকতে হবে: আমিনুল ইসলাম
- রোজার প্রথম কয়েকদিন যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন মন্ত্রিসভার
- `ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব করার মতো অসংখ্য বিষয় রয়েছে`
- স্ত্রী সারাদিন টাকা-টাকা করলে যা করতে পারেন
- ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল হলে সব পক্ষ উপকৃত হবে: তথ্যমন্ত্রী
- বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর নূরে আলম সিদ্দিকী আর নেই
- পুতিনের পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের আলোচনা ‘বিপজ্জনক’: বাইডেন
- প্রথমবার মা হলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি
- সাকিব-লিটনদের মিস করছে কেকেআর
- তারাবি-তাহাজ্জুদ নামাজের পার্থক্য ও ফজিলত
- `স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে ডিজিটাল স্মার্ট ডাককর্মী অপরিহার্য`
- ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হবে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে
- নীলফামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা নিহত
- যে কোনো পর্যায়ে নির্বাচন বন্ধের ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে ইসি
- বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় ভূমি সম্মেলন
- ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিতে ৭ বছর সময় পাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো
- সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তীতে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন
- তিন মাস আগেই পূর্বাভাস পাবেন কৃষকরা
- দিনাজপুরের ‘প্রথম’ মসজিদ চেহেলগাজী
- দেশের স্টার্টআপগুলোতে ৮০০ মিলিয়নের ওপর বিনিয়োগ এসেছে
- বিএনপিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি: সিইসি
- দিনাজপুর সীমান্তে নীলগাইয়ের পর এবার এলো হনুমান
- দুর্নীতির দায় নিতে হবে ব্যাংকারদের
- দিনাজপুরে সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা
- রংপুরে ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন
- মধ্যপাড়া পাথর খনির শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান
- দিনাজপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচন, ৪৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা
- হাবিপ্রবিতে শুদ্ধাচার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালা
- তেঁতুলিয়ায় দুই নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু
- ‘বাড়িতে ভাই আসলেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে’
- পার্বতীপুরে একসঙ্গে চারটি বাছুর জন্ম দিয়েছে একটি গাভি
- স্টুডেন্টস রেজাল্ট প্রসেসিং সিস্টেম বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
- ৯ বছরে বিয়ে হওয়া সেই আছিরন আজ গ্রামের গর্ব
- বঙ্গবন্ধু ২৩ বছর সংগ্রাম করেছেন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে: স্পিকার
- নতুন চমক দেখাতে এবার আসছে চ্যাট জিপিটি ফোর
- ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ বাস্তাবায়নে মাঠে রেলওয়ের ৬ টাস্কফোর্স
- ‘পাওয়ার ন্যাপ’ উপকারী না ক্ষতিকর!
- শুরু হলো ‘অগ্নিঝরা মার্চ’
- হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গোসলে নেমে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
- শ্রীলংকাকে ২৯০ কোটি ডলার বেলআউট ঋণ দিলো আইএমএফ
- বিএনপিকে জনগনের রায় নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আগামীকাল বাংলাদেশে আসছে আর্জেন্টিনা দল
- নীলফামারীতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার সমাপনী
- স্বামীর সংসারের হাল ধরছেন হাজারো নারী
- দুই হাজার বছর পরও গালে টোল, মিশরে উদ্ধার রহস্যময় মূর্তি
- ভারত থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল আসছে আজ
- আর্জেন্টিনাকে কারখানা স্থাপনের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
- নীলফামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা নিহত