৯ বছরে বিয়ে হওয়া সেই আছিরন আজ গ্রামের গর্ব
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২৩

Find us in facebook
বাড়ির আঙিনায় গ্রামের নারীদের সঙ্গে নিয়ে হস্তশিল্পের কাজ করছেন আছিরন নেছা। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে পাটজাত পণ্য তৈরি করে চলেছেন এই নারী উদ্যোক্তা। ঝুড়ি, পাপোশ, ম্যাট, ব্যাগ, দোলনা, পুতুল, কলমদানি, খেলনা হরিণসহ অন্যান্য সব জিনিস তৈরি হচ্ছে তার শৈল্পিক হাতের স্পর্শে। আর এইসব পণ্য যাচ্ছে জাপান, জার্মানি, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে।
অথচ এই আছিরন নেছার জীবনের গল্পটা ছিল একেবারে ভিন্ন। নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্দের জয়রামপুর গ্রামে থাকেন আছিরন। সেই স্থানে জন্মেও বাল্যবিবাহ থেকে মুক্তি মেলেনি আছিরন নেছার।
যখন প্রাথমিকের গণ্ডি পার হবার কথা নয়, ঠিক তখনই বিয়ের পিড়িতে বসেছিলেন আছিরন। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাল্যবিবাহ হয়েছিল তার। বইখাতা ছেড়ে স্বামীর সংসারের হাল ধরেন তিনি। বছর দুয়েক ঘুরতে না ঘুরতেই কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে কন্যাসন্তান। কিন্তু অভাবের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে না পেরে সেই ফুটফুটে কন্যাকে সাত বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন তিনি। তখন আছিরনের বয়স ১৮।
সেই সময়ই লজ্জা আর চোখের পানি নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন আছিরন। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তব। বাল্যবিবাহ ও সংসারের অভাব দমাতে পারেনি অদম্য আছিরন নেছাকে। আছিরন শুধু নিজের দিন বদল করেননি। পায়রাবন্দের জয়রামপুর, খোর্দ মুরাদপুর, তকেয়া, কেশবপুর, জোতষষ্ঠি ও ইসলামপুর গ্রামে ঘুরে ঘুরে নারীদের বিনামূল্যে হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। পাট দিয়ে হস্তশিল্পের কাজ করে নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি স্বাবলম্বী করেছেন গ্রামের দেড় শতাধিক নারীকে। তাদের অনেকেই নিজেদের অবস্থান থেকে হস্তশিল্পের সঙ্গে কাজ করছেন। আবার অনেকে চাকরিও করছেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠান ‘অনেক আশা কুটির শিল্প’ থেকে তৈরি নানা পণ্য দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে যাচ্ছে বিদেশেও।
গ্রামের নারীরা বলছেন, গ্রামে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আছিরন। সে আমাদের গর্ব। সংসারের অভাব অনটন দূর করে তিনি শুধু নিজের দিনবদল করেননি, গ্রামের অন্যান্য নারীদেরও স্বাবলম্বী করে তুলেছেন। তবে তার শুরুর পথটা মসৃণ ছিল না।
জয়রামপুর গ্রামে আছিরন নেছার জীবনগল্প জানতে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন নারীর সঙ্গে। আছিরন নেছার হাত ধরে হস্তশিল্পের কাজ শিখেছেন রমেজা বেগম। এক সময় স্বামীহারা সংসারের ধকল গেছে তার ওপর দিয়ে। এখন আট বছর ধরে আছিরনের সঙ্গে পাট দিয়ে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী তৈরি করছেন তিনি।
পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী এই নারী জানান, সাত বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন। এরই মধ্যে দুই ছেলেমেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। আছিরন নেছার কাছ থেকে তিনি অনেক কাজ শিখেছেন। এরজন্য কোনো টাকা লাগেনি। আছিরনের সঙ্গে কাজ করে তিনি যে টাকা পাচ্ছেন, তা দিয়ে ভালোভাবেই তার সংসার চলছে।
একই গ্রামের কোহিনুর বেগম। তিনি প্রায় এক দশক ধরে আছিরনের সঙ্গে কাজ করছেন। উপার্জিত টাকা দিয়ে তিন সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগান দিচ্ছেন। এখন তার সংসারে অভাব নেই। আগের মতো দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য এখন কষ্ট করতে হয় না। আছিরনের সঙ্গে কাজ করে নিজে উপার্জন করার পাশাপাশি তিনি তার স্বামীকে একটা অটোরিকশাও কিনে দিয়েছেন।
এদিকে আছিরন নেছার পরিবারের সদস্যরা বলছেন, এক সময় ঠিকভাবে তারা দুবেলা দুমুঠো ভাত খেতে পারতেন না। এখন থাকা খাওয়ার অভাব দূর হওয়ার পাশাপাশি বসতভিটায় পাকা একটি শোরুম আছে। বাড়ির সামনে আছিরন তার স্বামী খলিলুর রহমানকে একটি মুদিদোকানও করে দিয়েছেন।
আছিরন নেছা জানান, ১৯৯২ সালে স্থানীয় এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সুদে চার হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। সেই ঋণের টাকার সুদ বাড়তে বাড়তে এক সময় তা গিয়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার। টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যান আছিরন কিন্তু সেখানেও চাকরি জোটেনি। শেষমেশ তার শাশুড়ি জমি বন্ধক রেখে সেই দাদন ব্যবসায়ীকে ঋণের টাকা পরিশোধ করে দেন। এরপর বাড়ি ফিরে আসেন আছিরন নেছা।
১৯৯৪ সালে শাশুড়ির দেওয়া সেলাই মেশিন দিয়ে টুকটাক কাজ শুরু করেন। পরে নিজে ও দুই মেয়েকে নিয়ে পাট দিয়ে হস্তশিল্পের পণ্য তৈরি করতে লাগলেন। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া আছিরন হস্তজাত পণ্য বুননের কাজে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তার কাজে প্রথম সহায়তা করেন তার দুই মেয়ে কোহিনুর বেগম ও গোলেনুর বেগম। হস্তজাত পণ্য তৈরি দেখে গ্রামের অন্য নারীরাও এগিয়ে আসেন। তখন বিনামূল্যে নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটিও শুরু করেন আছিরন।
আছিরন নেছা বলেন, ২০০৭ সালে হস্তশিল্প নিয়ে বগুড়ার নুনগোলার একটি বড় মেলায় অংশ নিয়েছিলাম। সেই মেলা থেকে কিছু লাভ হয়। সেই লাভের টাকায় ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকে। পরে ‘অনেক আশা কুটির শিল্প’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। এই প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মীর সংখ্যা প্রায় পঞ্চশের কাছাকাছি। পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকায় এখন উৎপাদনও বেড়েছে। রংপুর ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুরসহ বেশকিছু এলাকায়ে মেলার মাধ্যমে আমার প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্যবসার পুঁজি কম হওয়ায় এখনও একসঙ্গে বেশি কাজ করতে না পারছেন আছিরন নেছা। সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা পেলে বেকার নারীদের সঙ্গে নিয়ে আরও বড় পরিসরে এই কাজ শুরু করা সম্ভব বলে জানান এই উদ্যোক্তা।
এদিকে আছিরন নেছা সম্পর্কে পায়রাবন্দের রোকেয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এই গ্রামের নারীদের স্বাবলম্বী করতে আছিরনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, লড়তে হয় তা তিনি নারীদের শিখিয়ে চলেছেন। আছিরন অনেক নারীর জীবনে দিনবদলের অনুপ্রেরণা।
পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমান বলেন, মেয়েদের অবহেলা করা ঠিক নয়। আজ আমাদের আছিরন গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার হাত ধরে অনেকেই আজ কর্মমুখী। এভাবে তার মতো অন্য নারীরাও এগিয়ে এলে প্রতিটি গ্রামে আছিরনের মতো দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।
- যারা দেশই চায়নি, তারাই এখন ক্ষমতায় যেতে মরিয়া : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সেইসব অপশক্তিকে আমরা বাংলার মাটিতে দেখতে চাই না:ডা. দীপু মনি
- করোনায় মৃত্যু নেই, শনাক্ত ৮
- ‘পতাকার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই’
- `যারা পাকিস্তানের প্রেমে মগ্ন, তাদের এ দেশে থাকার কোন অধিকার নেই`
- বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি:টিপু মুনশি
- পদ্মা সেতুতে রেলপথের বাকি মাত্র ৭ মিটার
- সারাদেশে একদরে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি হবে
- এপ্রিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর ঘোষণা মিয়ানমারের
- শেষ পর্যন্ত দেশীয় কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত
- ১০ স্থানে অনুসন্ধানে বিশেষ চুক্তিতে যাচ্ছে বাপেক্স
- স্বাধীনতা দিবসে জিনপিংয়ের শুভেচ্ছা
- স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
- গরিবদের ইফতার সামগ্রী দিতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
- নায়কের সন্ধানে
- বাংলাদেশের জন্মের ঘোষণা
- স্বাধীনতার ইতিহাস ভুলতে বসেছিল একটি প্রজন্ম: আইজিপি
- দেশপ্রেম জাগ্রত করা জরুরি
- স্বাধীনতা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন
- মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্পীকারের শ্রদ্ধা
- গণহত্যার স্বীকৃতি চাইলেন সজীব ওয়াজেদ জয়
- স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে যে প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
- স্বাধীনতা দিবসে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
- যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফলমূল পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
- স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ৩১ বার তোপধ্বনি প্রদর্শন
- রাষ্ট্রপতিকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানালেন ব্রিটিশ রাজা
- রংপুরে পুলিশের অভিযানে আটক ২৯
- অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ
- প্রসবের পর টয়লেটে নবজাতক রেখে উধাও অবিবাহিত কিশোরী মা
- ঠাকুরগাঁওয়ে ১১৯ ইটভাটার মধ্যে ১১৪টি অবৈধ, তবুও চলছে পুরোদমে
- সিগারেট আর টুকরো পোশাকেই ধরা পড়লো ৫০ বছর আগের খুনি
- তেঁতুলিয়ায় দুই নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু
- ‘বাড়িতে ভাই আসলেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে’
- পার্বতীপুরে একসঙ্গে চারটি বাছুর জন্ম দিয়েছে একটি গাভি
- স্টুডেন্টস রেজাল্ট প্রসেসিং সিস্টেম বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
- ৯ বছরে বিয়ে হওয়া সেই আছিরন আজ গ্রামের গর্ব
- বঙ্গবন্ধু ২৩ বছর সংগ্রাম করেছেন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে: স্পিকার
- নতুন চমক দেখাতে এবার আসছে চ্যাট জিপিটি ফোর
- ‘যতই ষড়যন্ত্র করুক তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না’
- ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ বাস্তাবায়নে মাঠে রেলওয়ের ৬ টাস্কফোর্স
- ‘পাওয়ার ন্যাপ’ উপকারী না ক্ষতিকর!
- `আধুনিক শিক্ষার প্রসারে প্রধানমন্ত্রী যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছেন`
- শুরু হলো ‘অগ্নিঝরা মার্চ’
- হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গোসলে নেমে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
- শ্রীলংকাকে ২৯০ কোটি ডলার বেলআউট ঋণ দিলো আইএমএফ
- বিএনপিকে জনগনের রায় নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আগামীকাল বাংলাদেশে আসছে আর্জেন্টিনা দল
- নীলফামারীতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার সমাপনী
- স্বামীর সংসারের হাল ধরছেন হাজারো নারী