• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন মন্ত্রিসভার

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনীর প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পরবর্তীতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনে কি কি সংশোধনী করা হবে, তা চূড়ান্ত করা হবে। তবে প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় জাতীয় নির্বাচনে এখনকার মতো জেলা ভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখার পাশাপাশি আসন ভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে নির্বাচন কমিশন প্রতি আসনে একজন করে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে পারবে। বর্তমানে প্রতি জেলার সবগুলোর নির্বাচনী আসনের জন্য একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকেন। সাধারণত জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) তার জেলার নির্বাচনী আসনগুলোর জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।

মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনী প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সময় ঐসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 


পরে দুপুরের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।

তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনী হবে সেটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে বৈঠকে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

তিনি বলেন, এর মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার বিষয়ে জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা অথবা আসনভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এখন কোনটি থাকবে তা সরকার ঠিক করবে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের কার্ডধারী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা দিলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কেউ এই অপরাধ করলে তাকে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
 
বিদ্যমান আরপিও অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাতদিন আগেই ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ইত্যাদি বিল) জমা দিতে হতো। এখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত এসব বিলের কপি জমা দেওয়ার সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর প্রার্থীদের টিআইএন সনদ এবং আয়করের রসিদ জমা দিতে হবে। 

সচিব আরো বলেন, আজকে আইনের সংশোধন হবে সেটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন পরবর্তীতে কি কি সংশোধনী হবে তা চূড়ান্ত হবে।

তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩’র খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে একই পরিবারের তিনজনের বেশি পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে একই পরিবারের সর্বোচ্চ ৪ জন সদস্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারেন। এছাড়া ঋণের ক্ষেত্রেও কিছুটা কড়াকড়ি বিধান যুক্ত করা হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাও ঋণ নিতে হলে জামানত দিতে হবে।  

মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় ৩৪টি ধারা রয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বা আত্মীয় যেই হোক না কেন তাদেরও জামানত দিয়ে ঋণ নিতে হবে। 

প্রস্তাবিত আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ও ঋণগ্রহীতার সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সচিব। 

তিনি বলেন, সামর্থ থাকার পরেও ঋণ পরিশোধ না করলে, জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে ঋণ নিলে, যে উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়েছিল সেই উদ্দেশ্যে তা ব্যয় না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির সংজ্ঞায় আনা হয়েছে।  

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হওয়ার পর কেউ ঋণ পরিশোধ না করলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকে সেই তালিকা দিতে হবে। তারপর বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও কোম্পানি নিবন্ধনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যবস্থা করতে পারবে।

তিনি বলেন, নোটিশ প্রাপ্তির দুই মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণ গ্রহীতা তার প্রাপ্ত টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে অর্থ ঋণ আদালতের মাধ্যমে টাকা আদায়ের প্রচলিত ব্যবস্থা চলমান থাকবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে সে আর ঐ ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকতে পারবেন না।  কোনো ব্যাংক ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকা না পাঠালে বাংলাদেশ ব্যাংক কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে।

তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২৩’র খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এই আইনানুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের বর্ষটি বিদ্যমান দেশের অর্থবছর (জুন-জুলাই) অনুযায়ী হবে। এতদিন তা বাংলা সন (বৈশাখ-চৈত্র) অনুযায়ী এটি হতো। এছাড়া সব ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। কার কত ভূমি উন্নয়ন কর তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় এবং ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে টানিয়ে দেওয়া হবে। তা নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে সেটির নিষ্পত্তি করারও সুযোগ রাখা হয়েছে।

এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি যে ভাষণ দেবেন, তার খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here