বাবা চাতালে, মা কাজ করেন অন্যের বাড়িতে, ছেলে পেলেন বুয়েটে সুযোগ
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৫ জুলাই ২০২২
Find us in facebook
বাবা চাতালে কুলির কাজ করেন। আর মা করেন অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ। ছোটবেলা থেকেই মা-বাবাকে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে দেখে বড় হয়েছেন। অসুস্থতা ছাড়া কোনো দিন তাদের বাড়িতে বসে থাকতে দেখেননি। তবে কাজ করা ছাড়াও তাদের কোনো উপায়ও ছিল না। আছে শুধু একটুকরা বসতভিটা। সেই দিনমজুর বাবা-মায়ের সন্তান মেহেদী হাসান সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যলয়ে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের কুজিশহর ঘুরনগাছ গ্রামের আবুল হোসেন ও নাসিমা বেগম দম্পতির বড় ছেলে মেহেদী হাসান। তারা দুই ভাই ও এক বোন। মেহেদী ব্রাইট স্টার স্কুল থেকে প্রাথমিক ও রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এবার বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
জানা গেছে, অভাবের সংসারে পড়াশোনা করে বড় স্বপ্ন দেখা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। তাইতো পরিবারে অর্থের যোগান দিতে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাজ শুরু করে মেহেদী। পরে আবার কাজের পাশাপাশি চলতে থাকে পড়াশোনা। তবে বাইরে প্রকাশ করতে না পারলেও মনে মনে বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন মেহেদী। এ স্বপ্ন আরও প্রবল হয়ে ওঠে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার পর। এই ফলাফল তাকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
তবে অভাব যেন তার সফলতার প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। এসএসসি পরীক্ষার পর অর্থাভাবে পড়ালেখা বন্ধ হতে বসেছিল। এ সময় সে কাজের জন্য ঢাকায় চাচাত ভাইয়ের কাছে গিয়ে ওঠে। চাচাত ভাই তার মেধা দেখে কাজ করতে দিলেন না। অনেক বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন। এসএসসি পরীক্ষায় দেখা গেল সে জিপিএ–৫ পেয়েছে। পরে ভর্তি হয় দিনাজপুর সরকারি কলেজে।
কলেজে ভর্তির পর শুরু করেন টিউশনি। টিউশনি আর বন্ধুদের সহযোগিতায় পাস করেন এইচএসসি। এবারও পেয়েছেন জিপিএ-৫। ভর্তির সুযোগ পেয়েছনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। তবে পড়ালেখার খরচ নিয়ে পরিবার চিন্তিত থাকলেও স্বপ্নে স্থির মেহেদী। দক্ষ প্রকৌশলী হয়ে পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি করতে চান দেশসেবা। তার এমন সফলতায় এলাকাজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মেহেদীর চাচী আলেফা খাতুন বলেন, আমার ছোট দেবরের বড় ছেলে মেহেদী। অনেক কষ্টে মানুষ হয়েছে সে। সকাল হলে দেবর আর জা কাজের জন্য বাইরে চলে যেত। খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে আজ সে ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সকলে তার জন্য দোয়া করবেন ও তার পাশে থাকবেন।
ব্রাইট স্টার স্কুলের পরিচালক অশ্বীনি বর্মণ বলেন, মেহেদী অনেক মেধাবী। আমরা তাকে অনেক বিষয়ে সহযোগিতা করেছি। তার মেধাকে সে কাজে লাগিয়েছে। তার জন্য সবসময় শুভকামনা থাকবে।
মেহেদীর মা নাসিমা বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে মেহেদী। তাকে আমি অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। এখন তিনবেলা খেতে পারছি। একটা সময় ছিল তিনবেলা খেতে পারতাম না। আমার স্বামী চাতালে কুলির কাজ করে আর আমি অন্যের বাড়িতে দিনমজুরির কাজ করি। ছেলেকে ঠিকমতো পড়াশোনার খরচ দিতে পারিনি। ভালোমন্দ খাওয়াতে পারিনি। আজ সে বুয়েটে চান্স পেয়েছে, আমার কষ্ট স্বার্থক হয়েছে। সকলে ওর জন্য দোয়া করবেন।
মেহেদীর বাবা আবুল হোসেন বলেন, আমি চাতালে বিশ বছর ধরে কুলির কাজ করি। সকালে আসি আবার রাতে বাড়ি যাই। ছেলের পড়াশোনার খোঁজ-খবরও কোনো দিন নেওয়া হয়নি। বাড়িতে বসে থাকলে পরিবার অচল হয়ে যায়। আমার স্ত্রীও অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ছেলে-মেয়েগুলোকেও অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। এখন ছেলে বুয়েটে চান্স পেয়েছে। সবাই আমার সুনাম করছে। এতেই আমি অনেক খুশি। সকলে আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। সে যেন ভালো ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে।
নিজের সফলতার সবটুকু মা-বাবাকে উৎসর্গ করে মেহেদী বলেন, আমার মা-বাবাকে আমি কেনো দিন বাসায় বসে থাকতে দেখিনি। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, তারা আমাদের ভালো রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমার বাবা চাতালে কাজ করেন আর মা দিনমজুরির। এমন একটি পরিবার থেকে পড়াশোনা করা অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। তবে আমার মা-বাবা আমাকে পড়াশোনায় সব সময় উৎসাহ দিত।
তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করার সময় সংসারে অভাব বেড়ে যায়। আমি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতাম। তাই প্রতি মাসে বেতন দিতে হতো। সে সময় পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। মা-বাবা আরও বেশি পরিশ্রম করেছেন। শিক্ষকরাও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমাকে বিনা পয়সায় প্রাইভেট পড়িয়েছেন। জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার পর আরও বেশী মনযোগী হই। কিন্তু এসএসসিতে আবার টাকার অভাবে পড়াশোনা থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়। বাড়ির একটি কাঁঠালগাছ বিক্রি করে আবার পড়াশোনা চালাই। এরপর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে দিনাজপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হই। বাড়ি থেকে সামান্য টাকা পেতাম মেসের খরচের জন্য। পরে নিজে টিউশনি করে, স্যার-বন্ধুদের সহযোগিতায় সেখান থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাই।
মেহেদী বলেন, এইচএসসি পাসের পর ঘুড্ডি ফাউন্ডেশনে বৃত্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে তাদের মাধ্যমে থাকা-খাওয়া বিনা মূল্যে পেয়ে ঢাকায় বুয়েটের জন্য কোচিং করি। পরে বুয়েটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন পরিবারের পাশাপাশি দেশসেবা করতে পারি। সবমিলে বলব, পরিশ্রম করলে অভাব কখনো সফলতাকে আটকাতে পারে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সারোয়ার হোসেন বলেন, মেহেদীর পরিবার একেবারে নিম্ন মধ্যবিত্ত। তার বাবা কুলি হিসেবে মিলে কাজ করেন আর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। হাজারো কষ্টেও তারা তাদের সন্তানকে পড়াশোনা শিখিয়ে ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। সেইসঙ্গে তার আগামীতে যদি প্রয়োজন হয়, আমি ও স্থানীয় প্রশাসন তার পাশে থাকবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, আমরা সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। এটি আসলে অনেক আনন্দের বিষয়। এমন পরিবার থেকে বুয়েটে ভর্তি হওয়া কঠিন বিষয়। সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন তার পাশে থাকবে।
- ৭ বছর ধরে নিজ বাড়িতে শিকলে বন্দী নুর
- রাণীশংকৈলে কৃষকের মাঝে বিনামূল্য পাটবীজ ও সার বিতরণ
- সৈয়দপুরে ফেসবুক লাইভে থেকে যুবকের আত্মহত্যা
- কুড়িগ্রামে ভুটানের রাজার মধ্যাহ্নভোজের মেন্যুতে যা যা ছিল
- সুন্দরগঞ্জ হৃদরোগে আক্রান্ত রুসদাকে বাঁচাতে মায়ের আকুতি
- বালিয়াডাঙ্গীতে বাড়ির আঙিনায় গাঁজা চাষ, গ্রেপ্তার ১
- ভেজাল খাদ্যপণ্য সরবরাহ, বিরামপুরে ২ জনের কারাদণ্ড
- রংপুরে আলু পরিবহনে ফিরেছে ঘোড়ার গাড়ি
- বিরামপুরে এক পা বিশিষ্ট্য সন্তানের জন্ম
- রংপুরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় আগেই
- ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
- হাতীবান্ধায় জেলের জালে উঠে এল প্রতিবন্ধী যুবকের মরদেহ
- শখের ড্রাগন বাগানে স্বাবলম্বী জহুরুল ইসলাম
- চিরিরবন্দরে সেচের কাজে এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে সেঁউতি-দোন
- পার্বতীপুরে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাই-সাইকেল বিতরণ
- কিশোরগঞ্জে হতদরিদ্র ১৬০ নারীর মাঝে বকনা গরু বিতরণ
- কুড়িগ্রাম পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা ফিরলেন নিজ দেশে
- রংপুরে ইফতারে পছন্দের তালিকায় ‘মস্কট শাহী হালুয়া’
- নাগেশ্বরীতে ল্যাম্ব’র উদ্যোগে শিখন বিনিময় কর্মশালা
- ডোমারে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা
- কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা
- পলাশবাড়িতে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার ১
- বীরগঞ্জে জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ দুই নারী আটক
- স্বপ্নজয়ী মা নাজমা রহিমের দাফন সম্পন্ন
- সারাদিন না খেয়ে থাকায় মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে, সমাধানে করণীয়
- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা
- দায়িত্বহীনতার কারণে ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা: রেলমন্ত্রী
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- ফজর সালাতের প্রতি আর গাফেলতি-অলসতা আসবে না, যদি...
- ঢাকায় ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করবে সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ঠাকুরগাঁওয়ে অ্যাম্বুলেন্স-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১
- রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
- কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে অব্যাহতি
- গাজায় শিশুহত্যা চলছে, কোথায় বিশ্বমানবতা- প্রধানমন্ত্রী
- ১২ বছরে প্রাথমিকে ২ লাখ ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
- রমজানে মুমিন মুসলমানের প্রতিদিনের আমল
- রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে যা করবেন
- সেবক হয়ে জেলা প্রশাসকদের কাজ করে যেতে হবে : স্পিকার
- জলবিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- চলছে কর্মযজ্ঞ, অক্টোবরে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু
- সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের শপথ আজ
- শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ শুরু হবে যখন
- রোজা রাখার ৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- নীলফামারীতে বিটরুট চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার
- মধ্যপন্থা: মুমিনের বৈশিষ্ট্য
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে