• শনিবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ২৪ ১৪৩০

  • || ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

চা বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সাইফুল

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের পীরগাছায় পরিবারের পাঁচ সদস্য নিয়ে থাকেন সাইফুল ইসলাম। অল্প কিছু জমিতে কৃষি কাজ করে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করতেন এক সময়। মাঝে মাঝে রংপুর শহরে এলে নতুন কিছু করার ইচ্ছা হতো তার।

ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বপ্ন পূরণে রংপুর শহরের পার্কমোড়ে দোকান ভাড়া নেন। সেখানেই গড়ে তোলেন চা-এর দোকান। ধীরে ধীরে এখন তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।

সারাদিনে মোটামুটি চা বিক্রি হলেও সন্ধ্যার পর দোকানটিতে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পরা ভিড়। এ সময় ভিড় ঠেলে চা খেতে হয় চা প্রেমীদের। অনেকে জায়গা না পেয়ে বাইরে দাঁড়িয়েই বন্ধুদের সঙ্গে খোশগল্প করতে করতে চা পান করেন। এখানে চা আড্ডায় মেনে ওঠাদের সিংহ ভাগই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।  

প্রতিদিন সন্ধ্যার পর চায়ের অর্ডার ও পরিবেশনে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় দোকান মালিক সাইফুল ইসলাম ও তার তিন কর্মীকে।

দোকানের একপাশে বিশাল পাতিলে জ্বাল দেওয়া হয় দুধ। গরম দুধ, চিনি ও চায়ের লিকারের মিশ্রণে মহূর্তেই তৈরি হয় মজাদার চা।

সাইফুল ইসলাম জানান, ২০১১ সালে দোকান দেই। তখন তেমন একটা বেচাকেনা হতো না। কোনো কোনো দিন মাত্র ৫০ কাপ, কখনো এরও কম চা বিক্রি হতো। এখন দিনে কমপক্ষে ২ হাজার কাপ চা বিক্রি করি। 

আমার বিশ্বাস ছিলো ভালো চা তৈরি করতে পারলে মানুষ চায়ের জন্যই আসবে। আমি ভাল চা তৈরিতে মনোযোগ দেই।

এখন একজন একদিন এ দোকানে চা খেলে পরদিন দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে আসে। এভাবেই দোকানে ক্রেতা বাড়তে থাকে। এখন দোকানে জায়গা দিতে পারি না। এলাকায় ভাল চায়ের দোকান হিসেবে এক নামেই চিনে সবাই দোকানটিকে। চা খেয়ে যখন কেউ প্রশংসা করে তখন খুব ভালো লাগে। 

তিনি আরও জানান, দোকান ভাড়া, তিন কর্মচারী, দুধ, চা পাতির খরচ বাদ দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে বর্তমান উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বাজারেও সচ্ছলতার সাথে দিন পার করছি। চা বিক্রির টাকায় বাড়ি ছাড়াও কিছু জমিজমাও কিনেছেন বলে জানান তিনি।

দোকানের কর্মচারী জয়নাল আবেদিন বলেন, এ দোকানে তিন ধরণের চা তৈরি হয়। দুধ চা, মালাই চা আর রঙ চা। দুধ চা ১০ টাকা, লাল চা ৫ টাকা, মালাই চা প্রতি কাপ ২০ টাকায় বিক্রি হয়। মানুষ দুধ চা বেশি পছন্দ করে। এ দোকানে প্রতিদিন ৫০ লিটারেরও বেশি দুধ ব্যবহার হয়। বড় পাতিলে দুধ জ্বাল দেওয়া হয়। দুধ ভালভাবে জ্বাল হলেই তবে ভাল চা তৈরি করা যায়। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত চা পাওয়া যায়।

সাইফুল ইসলামের দোকানে প্রতিদিন চা খেতে আসেন স্থানীয় নূর আলম। তিনি জানান, আমি দীর্ঘদিন থেকে এ দোকানে চা খাই। দোকানের চা অনেক ভালো লাগে। এই দোকানের সব কিছুই পরিষ্কার-পরিছন্ন। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ চা খেতে আসেন। অনেকে আবার পরিবার নিয়ে চা খান এখানে।

মেয়েকে নিয়ে চা খেতে এসেছেন ছামাদ মন্ডল। তিনি জানা,ন এই দোকানের মালাই চা স্পেশাল। অল্প টাকাতেই এই চা পাওয়া যায় এখানে। মাঝে মধ্যেই এ দোকানে এসে মালাই চা খাই।

দোকানে বন্ধুদের সাথে চা খাচ্ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাগোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা। তিনি বলেন, এ দোকানের চায়ের সুনাম শুনে চা খেতে এসেছি। চা অনেক ভালো লাগলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মনির হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় বের হলেই এই দোকানে এসে চা খাই। এখানে চা খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া যায়। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here