• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

ভাষাসৈনিক মতিউর রহমান বসনীয়া আর নেই

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

ভাষাসৈনিক মতিউর রহমান বসনীয়া মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রংপুরের রাধাবল্লভে নিজ বাসভবনে ৮৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার বাদ যোহর রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে নগরের মুন্সিপাড়া করবস্থানে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু।

মতিউর রহমান বসনীয়া দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে শয্যাশয়ী অবস্থায় ছিলেন। তিনি একাধারে লেখক, সংগঠক ও ইতিহাসবিদ ছিলেন। মতিউর রহমান বসনীয়া ব্যক্তিজীবনে তিন ছেলে ও তিন মেয়ের জনক।

কাব্যনিধি ভাষাসৈনিক মতিউর রহমান বসনীয়ার মৃত্যুতে রংপুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রংপুর সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও ক্রীড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু জানান, তিনি একজন লেখক, সংগঠক ও ইতিহাসবিদ ছিলেন। একজন ভাষাসৈনিক ও মানবদরদি মানুষ হিসেবে সর্বমহলে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। এতসব গুণে গুণান্বিত মতিউর রহমান ছিলেন একজন সদালাপী মানুষ।

ভাষা আন্দোলনে মতিউর রহমান বসনীয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। তখন তিনি নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছিলেন। সে সময় সালাউদ্দিন নামক তার এক সহযোগীর সঙ্গে বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে দুইদিনের জন্য সুন্দরগঞ্জ বন্দর অচল করে রেখেছিলেন। এসব কারণে রোষানলে পড়েন তিনি। গ্রেফতার করা হয় তাকে। স্কুলছাত্র হওয়ায় ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছিলেন।

মতিউর রহমান বসনীয়ার ৯টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এবং তিনটির পাণ্ডুলিপি তৈরি আছে। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে একটি হলো- ‘রংপুরের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান ও প্রয়োগ রীতি’। এছাড়া রংপুর পরিচিতি, কিংবদন্তির রাজ্য রংপুর, হিজরি মসজিদ ও রংপুরের দীনি দাওয়াত, প্রেমধারা, হোমিও চিকিৎসা সংকেত, শতদল, জীবনের পথে-ঘাটে, মারেফাত জগতের মুসাফির, হজরত মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রহ.) ও রংপুরের ইসলাম, বহুবচন, খিচুড়ি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

মতিউর রহমান বসনীয়া শুধু লেখালেখিই করেননি, একজন সম্পাদকও ছিলেন। তার সম্পাদনায় ১৯৬৪ সালে ‘বুনিয়াদ’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা বের হয়েছিল। এ সময় সাংবাদিকতাও করেছিলেন কিছুদিন। 

সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য মতিউর রহমান বসনীয়াকে ১৯৫৯ সালে যশোরের গৌড়বঙ্গ সাহিত্য পরিষদ থেকে ‘কাব্যনিধি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। রংপুর নাগরিক নাট্যগোষ্ঠী পদক ১৯৯৬, রংপুর জেলা প্রশাসন ২০০০, অভিযাত্রিক ২০০৫, অভিযাত্রিক ২০০৭, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রংপুর ২০০৭, রাধাবল্লভ উন্নয়ন উন্নয়ন সংসদ ২০০৯, গাইবান্ধার বন্ধন ২০০৯, সুধীর সংস্কৃতি পদক ২০১০ ও রংপুর পৌরসভার সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড, জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা লাভ করেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here