• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

৩০ বছর পর ভারমুক্ত হলো ৩০ কেজি ওজনের হাত

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর আবাসন এলাকার হবিবর রহমানের ছেলে আব্দুল লতিফ(৪০) পেশায় রিকশাচালক। জন্মের ১০ বছর পর বাম হাতে দেখা দেয় ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ। ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে।

পাঁচ বছর আগে একবার অপারেশন হলেও তা সেরে ওঠেনি। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বাড়তে থাকা হাতটির ওজন গিয়ে পৌঁছায় ৩০ কেজিতে। অসহ্য যন্ত্রণা আর দুর্ভোগ নিয়ে চলতে না পেরে আব্দুল লতিফ শরনাপন্ন হন চিকিৎসকের কাছে।

অবশেষে বুধবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে একদল চিকিৎসক তার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। ৩০ বছর পর ৩০ কেজি ওজন থেকে ভারমুক্ত হলো আব্দুল লতিফের হাত।

অপারেশনের আগে আব্দুল লতিফ জানান, ছোট বেলায় তার বাম হাতে রোগটি দেখা দেয়। প্রথম দিকে কিছু বুঝতে না পেরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতেন। এভাবে দিন যায় কিন্তু উপশম হয় না। বাড়তে থাকে হাতের ওজন ও রোগের পরিধি।

অভাবের সংসারে বেছে নেন রিকশা চালানোর পেশা। একটা সময় বিয়েও করেন। পাঁচ বছর আগে একবার অপারেশন করালেও তা সেরে ওঠে না। বরং তা বাড়তে থাকে। রিকশা চালানো সম্ভব হয় না আর। বাড়িতে বসে বসে কাটতো দিন।

কয়েকদিন আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন চিকিৎসার জন্য। অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ওষুধসহ আনুসাঙ্গিক খরচ বহনের সামর্থ্য না থাকায় চিন্তায় ভেঙে পড়েন লতিফ। এ অবস্থায় যাবতীয় ব্যয় বহনের কথা জানান চিকিৎসক।

অবশেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন রেজা চিকিৎসকবৃন্দের সহায়তায় তার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

লতিফের স্ত্রী বিলকিস বেগম বলেন, অভাব অনটনের সংসারে তিন বেলা খাবার জোটানো যেখানে সম্ভব হয়ে ওঠে না, সেখানে অপারেশন করার চিন্তা কীভাবে মাথায় আসে।

পাঁচ বছর থেকে স্বামীর রিকশা চালানো বন্ধ। আয় রোজগার নেই। অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম ও ধার দেনা করে সংসার চলে। এ অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা বিনা খরচে অপারেশন করার কথা জানান। তাই দীর্ঘ ৩০ বছর পর আজ রোগটির পুরোপুরি চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিলকিস।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, অনেকটা অবহেলার কারণে রোগটি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় তার বাম হাতটি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের সহযোগিতায় লতিফের সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার চিকিৎসকরা বহন করেছেন। আশা করি লতিফ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here