• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন সেই ১২ কৃষক

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

পাবনায় বাংলাদেশ সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেডের প্রান্তিক কৃষকদের নামে ঋণের দায়ে করা মামলায় সকল কৃষকের জামিন মঞ্চুর করেছে বিজ্ঞ আদালত। গত রোববার বেলা ১২ টার দিকে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এর বিচারক মো. শামসুজ্জামান এই আদেশ দেন। এর  কয়েক ঘন্টার মাথায় কারাগার থেকে মুক্তিপান ১২ কৃষক। 

মাত্র ২৫ হাজার টাকা করে ঋণ খেলাপির দায়ে জেলে যাওয়া ১২ কৃষকসহ ৩৭ জনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মধ্যরাতে গ্রামে অভিযান চালিয়ে ২৪ নভেম্বর রাতে ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটি নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁরা ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছিলেন। এই ঋণের বিপরীতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। 

জামিন প্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের শুকুর প্রামানিকের ছেলে আলম প্রামাণিক (৫০), মনি মন্ডলের ছেলে মাহাতাব মন্ডল (৪৫), মৃত কোরবান আলীর ছেলে কিতাব আলী (৫০), হারেজ মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৩), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ মজনু (৪০) ও মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০),মৃত সোবহান মন্ডলের ছেলে আব্দুল গণি মন্ডল (৫০), কামাল প্রামানিকের ছেলে শামীম হোসেন (৪৫), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ প্রামানিক (৪৩), মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে নূর বক্স (৪৫),  রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (৪৬) ও লালু খাঁর ছেলে মোহাম্মদ রজব আলী (৪০)। 

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সুমন, অ্যাডভোকেট মইনুল ইসলাম মোহন এবং সিনিয়ার অ্যাডভোকেট কাজী সাজ্জাদ ইকবাল লিটন। আর সেচ্ছায় আত্মসমর্পনকৃত ২৩ জন কৃষকের জামিনের বিষয়ে শুনানীতে অংশ গ্রহণ করেন অ্যাড. তৈফিক ইমান খান সহ অরো বেশ কয়েকজন আইনজীবী। 

মামলার  অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈফিক ইমাম খান বলেন, জেলা প্রান্তিক কৃষকদের নামে করা এই মামলায় বিজ্ঞ আদালত আটককৃত ও সেচ্ছায় আত্মসমর্পনকৃত দের জামিন মঞ্জুর করেছেন। ব্যাংকের বেশিরভাগ অর্থ কৃষকরা পরিশোধ করেছেন। এখন ব্যাংক তাদের নিকট সুদের টাকা পাবে। তবে যত সমস্যায় আসুক আমরা সব সময় আইনগত ভাবে কৃষকপের পক্ষে আইনী সহযোগিতা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।

এদিকে ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষে বাংলাদেশ কৃষক সোসাইটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান কুল ময়েজ অভিযোগ করে বলেন, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপিরা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেয়া হলেও  মাত্র ২৫ হাজার টাকার জন্য ১২ জন প্রান্তিক কৃষককে জেলে যাওয়ার ঘটনায় তার হতবাক হয়েছেন। ঋণ নেয়ার সময়ের পর থেকে দেশে নানা সময়ে নানা ধরনের দুর্যোগ এসেছে। তাই সরকারের কাছে এই সকল কৃষকের ঋণের অর্থ মওকুফের দাবি করেছন জেলা প্রান্তিক কৃষকেরা।

এদিকে পাবনা জেলা শহরের এলএমবি মার্কেটে বাংলাদেশ সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক এর কার্যালয় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।  তবে পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে কৃষকের নামে করা এই মমলার বাদী বাংলাদেশ সমবায় ভুমি উন্নয় ব্যাংকের নাটোর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহামুদকে পাওয়া যায়। 

তিনি বলেন, তাদের নিকটে এখনা আসল ও মুনাফার অর্থসহ ১৩ লাখ টাকা  উপরে পাওনা রয়েছে। 

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, এই কৃষকদের মামলার ঘটনা ইতমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌছে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন আমাদের। সেই সকল বিষয়ে মেনে সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও কৃষকদের সাথে আলোচনা করে মামলার বিষয়ে সমস্যার সাধানের চেষ্টা করছি আমরা।  

Place your advertisement here
Place your advertisement here