• রোববার   ২৬ মার্চ ২০২৩ ||

  • চৈত্র ১২ ১৪২৯

  • || ০৩ রমজান ১৪৪৪

Find us in facebook
সর্বশেষ:
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল গণহত্যার স্বীকৃতি চাইলেন সজীব ওয়াজেদ জয় মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্পীকারের শ্রদ্ধা স্বাধীনতা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন

নতুন প্রজন্মকে জানাতেই শহিদ কম্পরাম সিংহের স্মৃতি কমপ্লেক্স

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

প্রজন্মের পর প্রজন্মকে তেভাগা থেকে ভাষা আন্দোলন ও পরবর্তী স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের গল্প জানাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সালডাঙ্গা গ্রামে শহিদ কমরেড কম্পরাম সিংহের স্মরণে শিক্ষা, গবেষণা ও সামাজিক উন্নয়নমূলক স্মৃতি কমপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হয়েছে।

১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রশাসন ওই গ্রামে শহিদ কমরেড কম্পরাম সিংহের বাড়ির কাছে এই স্মৃতি কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করে। সম্প্রতি রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল, পাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী রুবেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন ইতিহাসের অতলে হারিয়ে যাওয়া কম্পরাম সিংহের জীবন আদর্শ ও দেশপ্রেম নতুন প্রজন্মকে জানাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। 

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, আজ একটি আবেগি দিন। ১৯৪৭ সালে উপনিবেশিক শত্রুমুক্ত হলেও ১৯৪৮ সালে প্রথম শহিদ হন কমরেড কম্পরাম সিংহ। কম্পরাম সিংহের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ আজ বহুদূর এগিয়েছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম বলেন, ১৯৪৬ সালে ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চলে তেভাগা আন্দোলন। বর্গা বা ভাগ চাষিরা এতে অংশ নেয়। মোট উৎপন্ন ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে চাষি, এক ভাগ জমির মালিক এই দাবি থেকে তেভাগা আন্দোলনের সূত্রপাত। দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় এই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছিল। এই আন্দোলনের অন্যতম কৃষক নেতা ছিলেন কমরেড কম্পরাম সিংহ। তিনি রাজবন্দির সঙ্গে ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে গণহত্যায় শহিদ হন। মৃত্যুর আগে তিনি তার জীবনের সমস্ত সঞ্চয় কমিউনিস্ট পার্টিকে দান করে যান।

তিনি বলেন, কম্পরাম সিংহের আত্মদান আজ অনেকেই ভুলে গেছেন। যার নেতৃত্ব জমিদারি প্রথা এবং চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বিলুপ্ত ঘটে। কৃষক পায় তার ন্যায্য অধিকার। অবসান ঘটে শত বছরের শোষণ, নিপীড়ন ও অন্যায়-অবিচার।

কম্পরাম সিংহ ১৮৮৭ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের সালডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪০ সালে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৪৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বারে গ্রেফতার হন। তৎকালীন স্বৈরশাসক সরকারের অমানবিক অত্যাচার ও উৎপীড়নের প্রতিবাদে রাজশাহী কারাগারে রাজবন্দিরা যে আন্দোলন করেন, এতে তিনি নেতৃত্বে দেন।

কম্পরাম সিংহের স্মৃতি কমপ্লেক্স-টি ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রামী প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ হাজী দানেশ, ইলামিত্র, চারু মজুমদার, ভবানী সেন, মনি সিংহ, মনিগুহ, গুরুদাস তালুকদার, সৈয়দ মনসুর হাবিবুল্লাহসহ অনেকের ছবি স্থান পেয়েছে। ছবির গ্যালরিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও রয়েছেন বাঙালির হৃদয়জুড়ে। 

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর মনতোষ কুমার দেন বলেন, শহিদ কম্পরাম সিংহ স্মৃতি কমপ্লেক্সটি তেভাগা থেকে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনের গৌরবের সেই ইতিহাসগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

Place your advertisement here
Place your advertisement here