শেখ রেহানা: আত্মসচেতন ও ঔদার্যে অনন্যা
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
Find us in facebook
গ্রিক নাট্যকার সফোক্লিসের আন্তিগোনে ট্র্যাজেডিতে ইডিপাসের কন্যা আন্তিগোনে রাজা ক্রিওনের নির্দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের ভাইয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিল। রাজার আইনি হুকুম না মেনে আন্তিগোনে রাজশক্তির বিরুদ্ধে পারিবারিক ধর্মে প্রতিষ্ঠিত নৈতিকতার আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার দুঃসাহসিকতা দেখিয়ে প্রতিবাদী নারী চরিত্র হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। সাহসী উচ্চারণে রাজা ক্রিওনের প্রশ্নের জবাবে নিজের ভাই পলিনিকেসের প্রতি শোক প্রকাশ ও তার শব সংরক্ষণ করার যুক্তি তুলে ধরেছিল। ঐ পরিস্থিতিতে রাজত্বের স্বার্থ রক্ষা করে নিজেকে মহিমান্বিত করেনি সে। এজন্য আন্তিগোনে কালোত্তর এক নৈতিকতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এক প্রতিবাদের নাম, সাহসের নাম আন্তিগোনে। পরিপ্রেক্ষিত এক রকম নয়; কিন্তু আন্তিগোনের সাহস, স্বজনের জন্য আত্মত্যাগ এবং খুনি চক্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজে কষ্ট স্বীকার করার প্রত্যয় লক্ষণীয় শেখ রেহানার জীবনেও। আসলে খুনি ও পাকিস্তানপন্থিদের বিরুদ্ধে নৈতিক সংঘাতের কাহিনী রয়েছে শেখ রেহানার জীবনেও। আত্মসচেতন এই নারীর ঔদার্যের পরিচয়ও অনন্য।
১৩ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার জন্মদিন। ১৯৫৫ সালের এই দিনে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালের ৩০ মে থেকে ১৯৫৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন। পুনরায় তিনি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন ১৯৫৮ সালের ১২ অক্টোবর। অর্থাৎ শেখ রেহানার জন্ম থেকে বেশ কয়েক বছর বঙ্গবন্ধুর মুক্ত জীবনে বিচরণের সুযোগ ঘটেছিল। বড় মেয়ের মতোই ছোট মেয়ের প্রতি ছিল তার অপত্যস্নেহ ও মমত্ববোধ। তার প্রকাশ রয়েছে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’য়। যেমন :একটি অংশ—‘ছোট মেয়েটার (শেখ রেহানা) শুধু একটা আবদার। সে আমার কাছে থাকবে। আর কেমন করে কোথায় থাকি তা দেখবে। সে বলে, থেকে যেতে রাজি আছি।’ (১৫ জুন ১৯৬৬, বুধবার, কারাগারের রোজনামচা) ১৯৭৫ সালে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের হারানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বাল্যকাল থেকেই পিতার রাজনৈতিক আদর্শে বেড়ে উঠেছেন। এজন্য তাদের ঔদার্য বিশাল। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক ঘটনা দিয়ে এই উদার হৃদয়ের মানুষদের আমরা চিনতে পারি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। ব্রিটিশ সরকার তার প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। সেখানেই অদ্যাবধি অবস্থান করছেন তিনি। তবে প্রতি বছর বাংলাদেশে কিছুদিনের জন্য অবস্থান করেন।
২০০৭-২০০৮ সালে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে বন্দি করা হলে শেখ রেহানা তার পক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হাল ধরেন। নেত্রীর মুক্তির জন্য দেশ-বিদেশে আইনি লড়াই চালিয়ে যান। ২০০৯ সাল থেকে বড় বোনকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে সহযোগিতা করে আসছেন। তিন সন্তানের জননী শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছেন। আর দুই কন্যা— টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকও উচ্চশিক্ষিত। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা হিসেবে ব্রিটেনের সর্বশেষ নির্বাচনে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আসনে টানা তৃতীয় বারের মতো এমপি হন। ২০২০ সালে তিনি ব্রিটেনের শিশুবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি এতদিন শ্যাডো আর্লি ইয়ারস মিনিস্টার (প্রাক-প্রাথমিক ছায়ামন্ত্রী) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর প্রতিকূল পরিস্থিতি জয় করে শেখ রেহানা নিজের সন্তানদের সুশিক্ষিত ও রাজনীতিসচেতন করে গড়ে তুলেছেন। শেখ রেহানার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার শক্তি আন্তিগোনের সাহসের কথা মনে করিয়ে দেয়। আসলে আন্তিগোনে স্পর্ধা দেখিয়েছিল। রাজা ক্রিওনকেও সে বুঝিয়ে দিয়েছিল স্বৈরাচারের আইন অমান্য করে সে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছে কেবল ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে। আপন বোন ইসমেনি কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা থেকে বিরত ছিল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকতে হয়েছে বড় বোন শেখ হাসিনাসহ শেখ রেহানাকে। পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলো কেউ তাদের প্রতি সদয় হয়নি। শেখ হাসিনা ভাইবোনদের মধ্যে সবার বড়। তার তিন ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পিতামাতা, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে নৃশংসভাবে নিহত হন। ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন বলেই প্রাণে রক্ষা পান তিনি। কলেজপড়ুয়া রেহানার লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছিল দেশে। কারণ তাদের ছোট বাড়িতে অনেক মানুষ; আর রাজনৈতিক পরিবারে বিচিত্র মানুষের আনাগোনা বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এজন্য বড় বোনের সন্তানদের দেখাশোনা ও নিজের পড়ার কাজের সুবিধার জন্য মাতৃনির্দেশ পালন করে বিদেশে পাড়ি দেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হয়েও বঙ্গবন্ধু একটি ছোট বাড়িতে থাকতেন। কারণ বেগম মুজিবের বিশ্বাস ছিল বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তার সন্তানরা নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কখনো রাষ্ট্রপতি ভবনে বসবাসের উদ্দেশ্যে যাননি বরং সাদামাটা জীবন যাপন করেছেন। দেশে ফিরতে না পেরে ১৯৭৬ সালে রেহানা লন্ডনে পৌঁছান। বিয়ে করেন পিতার পছন্দের পাত্রকেই। ১৯৭৭ সালে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তিনি প্রথম রাজনৈতিক বক্তব্য দেন সুইডেনে একটি কনফারেন্সে। ১৯৮০ সালে শেখ হাসিনা লন্ডনে বক্তব্য রাখেন। এ সময় দুই বোন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা নিয়ে সোচ্চার হন।
মূলত এ দেশে মানুষের ভালোবাসা ছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিবার কিছুই পায়নি। উপরন্তু শেখ রেহানা রাষ্ট্রের কাছে থেকে কিছুই নেননি। রাষ্ট্রপতি পরিবার হিসেবে তো রাষ্ট্রের কাছ থেকে সবাই পায়, শুধু তারাই কিছু নেননি। কারণ তার ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ নেই; ছিল না কখনো। এজন্য জনগণের স্বার্থ রক্ষা করেছেন; জনগণের দিকে তাকিয়েছেন; জনগণের জন্য কিছু করেছেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রীয় সম্পদে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা কর্তব্য মনে করে নিজের বরাদ্দকৃত বাড়িটি পুলিশকে দিয়ে দিয়েছেন। কেবল নিজের বাড়ি দেওয়া নয়, এ দশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে সব সময়, প্রতিটি দুর্যোগে। শেখ রেহানার মহানুভবতার তুলনা নেই। মানবদরদি ও মহৎ বলেই নতুন প্রজন্মের আদর্শ তিনি।
লেখক : ড. মিল্টন বিশ্বাস; অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
- রাণীশংকৈলে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী
- বোদায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থীরা পেল শিক্ষাবৃত্তি
- পার্বতীপুরে ক্রীড়া সামগ্রি ও হুইল চেয়ার বিতরণ
- সুন্দরগঞ্জে গ্রাম পুলিশদের অবহিতকরণ প্রশিক্ষণ
- আবারও তিনদিন বাংলাবান্ধার ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা
- পীরগঞ্জে তীব্র দাবদাহে প্রস্তুতি সভা
- সুন্দরগঞ্জে তাপদাহে গরুর মৃত্যু
- আরপিএমপি ট্রাফিক বিভাগের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ
- পীরগাছায় উপজেলা নির্বাচনের প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
- ডোমারে ৩ দিনব্যাপী সমন্বিত পুষ্টি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন
- বেরোবিতে একাউন্টিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান উমর ফারুক
- রংপুরে ২০০ রিকশাচালককে ক্যাপ ও ছাতা দিলেন বিথী
- কালীগঞ্জে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি আটক
- হাতীবান্ধায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ
- ভ্রু ম্যাজিক
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে
- ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’
- ট্রেনের টিকিট এবার ভেন্ডিং মেশিনে, দাঁড়াতে হবে না লাইনে
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- পাকিস্তান-ইরানের সম্পর্কের নতুন মাত্রা
- ‘জলবায়ু অভিযোজনে সফলতার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জরুরি’
- পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব হলেন ১৩০ জন
- আমিরাতে পৌঁছেছে জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ, সুস্থ আছেন নাবিকরা
- ঢিলেঢালা পোশাক ও যথাসম্ভব ছায়ায় থাকুন: চিফ হিট অফিসার
- দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড
- দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- ‘যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত’
- ফজর সালাতের প্রতি আর গাফেলতি-অলসতা আসবে না, যদি...
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- বুয়েটে জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম তদন্ত করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- ফুলবাড়ীতে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- জলবিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- সুন্দরগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য
- আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- শরীরে মেদ জমেছে নাকি পানি, বুঝবেন যেসব লক্ষণে
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- পুলিশের আজান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীরা