• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

পার্টস ফেরিওয়ালা থেকে তৌহিদ এখন রংপুর অঞ্চলের সেরা করদাতা

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

সদ্য লোকসানে পড়া বাবার পক্ষে একটি সাইকেল ক্রয় করা সম্ভব ছিলনা বলে ৪ কিঃমিঃ পথ পায়ে হেঁটে টিউশন পড়ানো তৌহিদ হোসেন আজ অনেকের প্রেরণার উৎস। কে জানত? খুচরা যন্ত্রাংশ কাঁধে বয়ে বেড়ানো তৌহিদ হোসেনের অনিশ্চিত যাত্রাই হবে সাফল্যের স্বপ্নযাত্রা। সেই তৌহিদ হোসেন এবার হয়েছেন রংপুর অঞ্চলের সেরা করদাতা। সোমবার রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে তাঁকে রাষ্ট্রীয় এই সেরা করদাতার সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এই উদ্যোক্তার সংগ্রাম মুখর বেড়ে উঠার গল্প উঠে এসেছে তৌহিদের সাথে আলাপচারিতায়। তৌহিদ হোসেন ১৯৮৭ সালের ১০ ই মে জন্ম গ্রহন করেন রংপুরের স্টেশন রোডের সাফায়েত হোসেন ও ইশরাত জাহান দম্পত্বির কোলে। জন্ম নিয়ে পারিবারিক আর্থিক আভিজাত্যে বড় হতে থাকেন তিনি। ভর্তি হন রংপুরের ঐতিহ্যবাহি ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট সায়মন কিন্ডার গার্টেনস্কুলে। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৭ সাল ১২ বছর সাফায়েত হোসেন ছিলেন রংপুর অঞ্চলের সব চেয়ে বড় ইলেকট্রনিক্স ও মোটরসাইকেল ব্যবসায়ি। স্টেশন রোডের হোসেন ব্রাদার্স ইলেক্ট্রনিক্সের নাম তখন রংপুর জুড়ে। রংপুরের বাইরেও বেশ কয়েকটি শাখা। এরই মধ্যে সৈয়দপুর এবং জলঢাকা ব্রাঞ্চের ম্যানেজাররা পুরো ব্যবসায় নামিয়ে দেন ধ্বস। সেই ধ্বসে একেবারেই পুঁজি হারিয়ে ফেলেন সাফায়েত হোসেন। শুরু হয় তৌহিদদের পরিবারে আর্থিক দৈন্যদশা। ব্যবসায়িক লোকসানের টেনশনেই সাফায়েত হোসেন ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মতো ব্রেন স্টোক করে ভর্তি হন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ৭ দিন চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসেন বাসায় । কিন্তু তাকে তাড়া করে বেড়ায় লোকসানের বিষয়টি। আবারও ১৭ দিনের মাথায় তিনি ব্রেন স্টোক করেন। এরপর শয্যাশয়ি হন। আর উঠে দাড়াতে পারেন নি। এখনও তিনি শয্যাশয়ী। এমতাবস্থায় ৫ সন্তানসহ সাফায়াতের সংসার চলতে থাকে দোকান থেকে পাওয়া ভাড়ার টাকায়। খুব দৈন্যদশার মধ্যে চলতে থাকে সংসার। তৌহিদ হোসেন জানান, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত সেন্ট সায়মুন কিন্ডার গার্টেনে (বর্তমানে ল কলেজ) বাবার প্রাইভেট কারে স্কুলে যেতাম। কিন্তু ব্যবসায়িক লোকসানের কারনে সব ফিঁকে হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে ভর্তি হই গুপ্তপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনিতে। সেখান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ভর্তি হই রংপুর হাই স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে। সংসারের দৈন্যদশার কারনেই শুরু করি টিউশনি। প্রথম মাসের টিউশনের সম্মানি ২০০ টাকা পাওয়ার পর তা দিয়ে মাকে শাড়ি কিনে দেই। সেই শাড়ি পেয়ে আমার মায়ের সেই খুশি মুখ আমাকে এখনও তাড়া করে বেড়ায়। পড়ালেখা ও টিউশনির পাশাপাশি আমি সংসারের আর্থিক অনটন কিভাবে কাটানো যায় সেই চিন্তা করতে থাকি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here