• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

Find us in facebook

দিনাজপুরে তীব্র গরমে ধস নেমেছে টমেটোর বাজারে 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

তীব্র দাবদাহে দিনাজপুরে ধস নেমেছে টমেটোর বাজারে। গরমে বাজারে পচে যাচ্ছে টমেটো। এই গরমে মাঠে মিলছে না টমেটো তোলার শ্রমিক। যার কারণে খেতেই নষ্ট হচ্ছে এসব টমেটো।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জেলার বিরামপুর টমেটোর হাট ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় টমেটোর হাট; তা চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই হাটে পাইকাররা আসেন টমেটো কিনতে। প্রতিদিন ট্রাকে লোড করে এসব টমেটো যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। আবার ভোর থেকে কৃষকেরা খেত থেকে টমেটো তুলে আনেন এই হাটে।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে জেলায় ৯৬০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে টমেটো নিয়ে বিপাকে রয়েছেন ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা।

খাদ্যশস্যে ভরপুর এবং আম-লিচুর রাজ্য দিনাজপুর। জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে বিরামপুর, ফুলবাড়ী, চিরিরবন্দর, বিরল, খানসামা, বীরগঞ্জ ও সদর উপজেলার মাটি টমেটো চাষের জন্য উপযোগী। শীত ও গ্রীষ্মকালে আবাদ হয়ে থাকে সব ধরনের রবি শস্য। এবার নবি জাতের টমেটোর বাম্পার হয়েছে। তবে এ বছর তীব্র গরমে খেতে আর বাজারেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে টমেটো।

বিগত দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে এই হাটে টমেটো চাষিরা টমেটোর দাম পেয়েছিলেন ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ অর্থাৎ ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। বর্তমানে কৃষক দাম পাচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা প্রতিমণ অর্থাৎ ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি দরে। তীব্র গরমের কারণে বাজারে আমদানি হচ্ছে বেশি পাকা টমেটো। এসব পাকা টমেটো মোকামে পৌঁছানোর আগমুহূর্তে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে হাটে পাইকার কম এবং দামও কমে যাচ্ছে।

বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের বিভিন্ন টমেটোর খেত ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে এসব টমেটো। ডিসেম্বরের শুরুতেই কৃষক মাঠে ফেলেছে টমেটোর বীজ। আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে টমেটো আসতে শুরু করে। তা বেচাকেনা হয়ে থাকে এপ্রিল ও মে মাস পর্যন্ত।

বিরামপুর হাটে ঢাকা থেকে আসা পাইকার রফিকুল ইসলাম বলেন, এই হাট থেকে প্রতিদিন আমি দুই থেকে তিন ট্রাক টমেটো ঢাকায় নিয়ে যাই। তবে আজ কয়েকদিন যাবৎ টমেটো আর বেশি কিনছি না। কেননা প্রচণ্ড গরমে হাটেই টমেটো পচে যাচ্ছে। এসব পাকা টমেটো মোকামে নিয়ে যেতেই পচে-গলে যাবে। মোকামে নিয়ে গেলে লোকসান হবে।

টমেটো চাষি মোজাহার আলী বলেন, এবার আমি ৮ কাঠা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ফলন অনেক ভাল হয়েছে। প্রথমে দাম অনেক ভাল পেয়েছিলাম। বর্তমানে দাম অনেক কম, এতো কম দাম হলে টমেটো চাষের খরচও উঠবে না। তীব্র গরমে মাঠেই তাড়াতাড়ি টমেটো পাক ধরছে এবং তা পচে যাচ্ছে। খেত থেকে টমেটো তোলার শ্রমিকও পাচ্ছি না, বড় বিপাকে পড়েছি। হাট-বাজারে পাচ্ছি না এসব টমেটোর ন্যায্য দাম।

দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে জেলায় এবার ৯৬০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। ফলনও বাম্পার হয়েছে। তবে তীব্র গরমে খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কৃষকের কাঙ্ক্ষিত এই ফসল।

তিনি আরও বলেন, টমেটো সংরক্ষণের জন্য বীরগঞ্জ ও চিরিরবন্দর উপজেলায় দু’টি মিনি হিমাগার তৈরির কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত এই হিমাগার স্থাপন করা হবে। হিমাগার দু’টি তৈরি হলে টমেটো নিয়ে কৃষকদের আর বিপাকে পড়তে হবে না।

Place your advertisement here
Place your advertisement here