• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

১৫ দফা দাবিতে রোববার থেকে রংপুরের পেট্রোল পাম্পে ধর্মঘট

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন ও ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে রোববার (১ ডিসেম্বর) থেকে রংপুর বিভাগের আট জেলায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট (কর্মবিরতি) আহ্বান করেছে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এই ধর্মঘটে রংপুর বিভাগ ছাড়াও খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব ডিপোতে ধর্মঘট চলবে। এতে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিপণন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর জেলা পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু।

তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তে ১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে শুধু মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় পেট্রোল পাম্প পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই খাতটি এরই মধ্যে অলাভজনক হয়ে পড়েছে।

দাবিগুলো হলো- জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান-বিষয়টি সুনির্দিষ্টকরণ, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বিমা প্রথা প্রণয়ন, ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশদ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল।

ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দফতর ব্যতীত সরকারি অন্যান্য দাফতরিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিলার বা এজেন্টদেরকে অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।

এদিকে পেট্রোল পাম্প মালিক ও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী সমিতি রংপুর বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক শাহ মো. সেলিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে দাবি আদায়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আলোচনায় বসার নামে বহুবার কালক্ষেপণ করা হয়েছে। আমরা বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি।

রংপুর জ্বালানি তেল সংরক্ষণাগার মেঘনা, পদ্মা ও যমুনা পেট্রোলিয়াম কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, তাদের আওতায় রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে মোট ফিলিং স্টেশন রয়েছে ১৫২টি। এর মধ্যে রংপুরে রয়েছে ৮৫টি। এসব ফিলিং স্টেশন মজুদের ক্ষমতা রয়েছে ডিজেল ২৭ লাখ, কেরোসিন ১০ লাখ ৬০ হাজার, পেট্রোল ৬ লাখ ও অকটেন ৬ লাখ ৮০ হাজার লিটার। চাহিদা রয়েছে ডিজেল ১ কোটি ২৫ লাখ ডিজেল, পেট্রোল ২৫ লাখ ৫০ হাজার ও অকটেন ৪ লাখ ৪০ হাজার লিটার। অথচ চলতি বছরের মে মাসে পেয়েছে তারা অর্ধেকেরও কম জ্বালানি তেল।

সুরমা ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. আতিকুর রহমান জানান, প্রতিমাসে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন এবং কেরাসিন মিলে মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা চার লাখ পাঁচ হাজার লিটার। অথচ তিনি শতকরা ২৫ ভাগ জ্বালানি তেল পাচ্ছেন না। এতে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এরকম বিভিন্ন সমস্যা ও সংকটের কারণে তারা ১৫ দফা দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন।

এদিকে ধর্মঘটের প্রতি ট্যাংকলরির অধিকাংশ চালক-শ্রমিকরা সমর্থন জানিয়েছে। তারা মনে করছেন, ট্যাংকলরি চালাতে গিয়ে সড়কে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়। ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধসহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি।

আর কর্মবিরতিতে পাম্পগুলোতে রোববার থেকে জ্বালানি তেল বিপণন বন্ধ থাকার ঘোষণায় নগরীর বেশির ভাগ গ্রাহকদেরকে অতিরিক্ত তেল সরবরাহ করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ কর্মবিরতির নামে ডাকা এই ধর্মঘটে জ্বালানি তেলের জন্য যানবাহন নিয়ে চলাচলে ভোগান্তির শিকার হবেন বলে মনে করছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here