• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির ঢাকা সফর ছিল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দুই দফায় ৭০ মিনিটের বেশি সময় আলোচনা হয়েছে। এ সময় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে খোলামেলাভাবে কথা বলেছেন শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

বাবা শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানির সফরের ১৯ বছর পর ঢাকায় এসে তিনি মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। ঢাকা আর কক্সবাজারে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, মেট্রোরেল আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো অবকাঠামো নির্মাণ দেখেছেন নিজ চোখে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কাতারের আমির।

বাংলাদেশ ও কাতারের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংযুক্তি, পর্যটনসহ নানা খাতে বিনিয়োগ ও ব্যবসার সম্ভাবনা খুঁজতে কাতারের আমির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে তিনি দেশে ফিরে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। কাতারের আমিরের ঢাকা সফরে ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বার্তাও পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, কাতারের আমির নিজের চোখে বাংলাদেশ দেখে যে অভিভূত, সেটা তিনি নিজেই বলে গেছেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এবং মন্তব্য করেন- সিয়িং ইজ বিলিভিং। ফলে এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কাতারের দৃষ্টিভঙ্গির যে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তিনি আরো বলেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক বহুমাত্রিক হবে এবং সম্পর্ক রাজনৈতিক পর্যায়েও একটা উত্তরণ ঘটেছে। সামগ্রিকভাবে সম্পর্ক কয়েক ধাপে এগিয়েছে বলেই আমরা আশা করি।

বাংলাদেশে জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার কাতার মনে করছে, এ দেশে যে ধারায় উন্নয়ন এগিয়ে চলছে, এলএনজির চাহিদা আরো বাড়বে। ফলে জ্বালানির পাশাপাশি অন্য কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ আছে, সেটা যাচাই করা জরুরি।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, কাতার এখন যে এলএনজি বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করে, সেগুলো জাহাজে করে বন্দরে বহির্নোঙরে এনে সরবরাহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এলএনজি সরবরাহের জন্য তাদের টার্মিনাল তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দর অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে কাতার এলএনজি সরবরাহব্যবস্থায় যুক্ত হতে আগ্রহ দেখিয়েছে।

কাতারের আমির বাংলাদেশের সঙ্গে পর্যটন খাতেও সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ বিষয়ে দুই দেশের আলোচনা হয়েছে। আলোচনার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে বিনিয়োগের জন্য কাতারের আমির শেখ তামিমকে অনুরোধ জানান। তিনি জানান, কক্সবাজারে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ হচ্ছে। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হচ্ছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে পর্যটন খাতের বিকাশে কক্সবাজারে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে পারে কাতার।

এছাড়া কাতারের জন্য দেশের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সুযোগ তো থাকছেই। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন কাতারের আমির। তিনি দেশে ফিরে কাতারের বিনিয়োগ বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এসব সুযোগকে কাজে লাগানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে গেছেন।

দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও সর্বশেষ ইরান-ইসরায়েল উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রসঙ্গটি এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা অস্থিরতা ও সহিংসতা নিয়ে দুই শীর্ষ নেতা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তারা ফিলিস্তিন সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে বৈশ্বিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ও কাতারের সম্পর্কে বড় একটি ক্ষেত্র জনশক্তি রফতানি। বাংলাদেশের জনশক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার কাতার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে এ মুহূর্তে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কাজ করেন। কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের সময় স্টেডিয়ামসহ অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক শ্রমিক অবদান রেখেছেন। তবে অন্য অনেক দেশের মতো কাতারও এখন দক্ষ শ্রমিক চায় বাংলাদেশ থেকে। কাতার এখন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশলসহ নানা ক্ষেত্রের দক্ষ লোকজনকে কাজে নিতে চায়। তবে অল্প দক্ষ শ্রমিকদেরও যেন নেয়া হয়, সেই অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। কাতার এতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here