• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

স্বপ্নছোঁয়ার গল্প বাস্তবতায় বিশ্বাসী মৃদুলার

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

ছোট্টোবেলা থেকেই চঞ্চল স্বাভাবের। স্কুলের গণ্ডি শেষ করতে না করতেই নেপাল ছুটেছিল প্যারাগ্লাইডিং ও রাফটিং করতে। তাছাড়া কলেজে ছিলো বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) ক্যাডেট সার্জেন্ট। পাহাড় দাপিয়ে বেড়ানোর মানসিক শক্তিটা সেখান থেকেই জন্ম। বলছিলাম পাহাড় কন্যা মৃদুলার কথা।পুরো নাম মৃদুলা আমাতুন নূর। পড়ছে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষে। বাবা মো. আবু হেনা ও মা ফরিদা আক্তারের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মৃদুলাই বড়।গ্রামের বাড়ি ফেনীতে হলেও মৃদুলার জন্ম,বেড়ে ওঠা সবকিছুই ঢাকায়।

অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মৃদুলা দেশ-বিদেশের পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বেড়ায়। দক্ষতা বাড়াতে পর্বতারোহণের ওপর প্রশিক্ষণও নিয়েছে। পাহাড়কে ঘিরেই তার স্বপ্ন। গতবছর এপ্রিলে বের হয় এভারেস্ট অভিযানে। তাদের দলে মোট পাঁচজন। প্রতিকূল আবহাওয়া আর দলের আহত একজনের পাশে দাঁড়াতেই এভারেস্টের ২২ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে নেমে আসতে হয়। কিন্তু স্বপ্ন থেমে যায়নি।

এবছর ৪ মার্চ বাংলাদেশের কনিষ্ঠ নারী পর্বতারোহী হিসেবে জয় করেছে ১৯ হাজার ৩৪১ ফুট উচ্চতার আফ্রিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কিলিমাঞ্জারো! গত ২৭ আগস্ট ভারতের ইউনাম চূড়ায় উড়ায় বাংলাদেশের পতাকা। সব ঠিক থাকলে আবারও এভারেস্টের চূড়ায় উড়বে বাংলাদেশের পতাকা।এজন্য প্রচুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানায় মৃদুলা।

নিজের সম্পর্কে জানতে চাইলে মৃদুলা বলে, "আমার ছোটবেলা কেটেছে দাদা-দাদি, নানা-নানির সাথে। নানা মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন। নানার কাছে অনেক অনুপ্রেরণার গল্প শুনতাম। আব্বু-আম্মু দুজনেই চাকুরীজীবি ছিলেন। আমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তাম। আব্বু-আম্মু সবসময়ই চাইতো আমি যেন সব থেকে ভালো ফলাফল করি। এটা আমার উপর এক ধরনের চাপ ছিল। তবে তাদের খুব একটা নিরাশ হতে হয়নি।’

পারিবারিক সাপোর্ট কেমন ছিল জানতে চাইলে মৃদুলা বলে, ‘পরিবার তো কারো খারাপ চায় না।আর বাবা-মা তো না ই। তবে প্রথম প্রথম বাবা-মা অবশ্য আমার আবদার মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু আমার আগ্রহ আর ভালো করা দেখে সমর্থন দিয়েছেন।’

এসবের অনুপ্রেরণা কার কাছ থেকে পেয়েছে প্রশ্নের উত্তরে যেমনটা বলছিলো, "অনুপ্রেরণা বেশি পেয়েছি আমার পর্বতারোহী প্রশিক্ষকদের থেকে।উনারা সবসময় আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন।আমার সাথের বন্ধুরা সবসময় বলতো 'তুই পারবি'। তাছাড়া ভারতে যখন গেলাম তখন সেখানকার ডিফেন্স আর্মিরা যখন জানলো যে আমি বিএনসিসি ক্যাডেট এবং মেডিকেল এর শিক্ষার্থী তারা আমাকে অগ্রাধিকারের পাশাপাশি সহযোগিতা করেছে অনেক ।

মা, মাটি এবং মানুষের জন্য কাজ করতেও ভালোবাসে মৃদুলা। দেশ এবং দেশের বাইরে নিজের ডাক্তারী শিক্ষাকে কাজে লাগাতে চায়।বিশেষ করে পর্বতারোহীদের জন্য।

দেশের নারীদের প্রসঙ্গে মৃদুলা বলে, "সামাজিক গোড়ামি আর পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার কারণে এ দেশের নারীরা চ্যালেঞ্জিং কাজে জড়াতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে থাকেন। এসব ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে আসতে হবে। ইচ্ছাশক্তি আর মনোবল নারীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবেই।এজন্য দরকার প্রবল আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্নের বাস্তবায়ন।" ইচ্ছাশক্তি আর মনোবল নারীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবেই।মৃদুলাও তার ব্যতিক্রম নয়।

স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে মৃদুলা জানায়, "আমি স্বপ্নে নয় স্বপ্নের বাস্তবতায় বিশ্বাসী।বলতে পারো বাস্তববাদী মেয়ে! সর্বোচ্চ পাহাড়গুলো জয় করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজের পদচিহ্ন রাখার সঙ্গে সঙ্গে নিজের দেশকে উপস্থাপন করা। সেই ভাবনাতেই মৃদুলার এখন পর্যন্ত লক্ষ্য, সাত মহাদেশের সাত শীর্ষ পবর্তশৃঙ্গ জয়ের (সেভেন সামিট) অভিযান শুরু করা।"

আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন দেখা মেয়েটা তার স্বপ্নের পথেই হাটছে।করে যাচ্ছে প্রাণপণ প্রচেষ্টা। কে জানে মৃদুলা আমাতুন নূরের হাত ধরেই এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়বে আরো একবার।

Place your advertisement here
Place your advertisement here