• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

রাখাইনে ‘গণহত্যার’ কথা কৌশলে স্বীকার করলো মিয়ানমার!

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

অবশেষে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার কথা কৌশলে স্বীকার করলো মিয়ানমার। কৌশল অবলম্বন করে এও স্বীকার করেছে যে- রাজ্যটিতে সংখ্যালঘুদের ওপর ‘জেনোসাইড’ বা ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে এই জেনোসাইডের দায় চাপাচ্ছে কথিত রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরসার ওপর।

দেশটির গণমাধ্যম ইলেভেন মিডিয়ার বরাত দিয়ে ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাসের ফেসবুক পেজে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেয়া এক পোস্টে জানানো হয়, ‘মংডু টাউনশিপের হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ইয়াঙ্গুনের পার্ক রয়্যাল হোটেলে আরসা সন্ত্রাসীদের হাতে তাদের প্রিয়জনদের জেনোসাইডের দ্বিতীয় বার্ষিকী পালন করে।’

‘বেঁচে যাওয়া হিন্দু নারীরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশে শিবিরগুলোতে সহিংসতার অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন ওই অনুষ্ঠানে। হিন্দু ত্রাণ সংস্থাগুলোও রেঙ্গুনে মাঠ পর্যায়ে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।’

মিয়ানমার হিন্দু রিলিজিয়াস অর্গানাইজেশনের চেয়ারপারসন ইউ নন্দাকে উদ্ধৃত করে ওই ফেসুবক পেজে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ সালের আগস্টে যা হয়েছে তার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের প্রতি মিয়ানমারের সরকার ও জনগণ সহমর্মিতা দেখিয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, বিদেশি সরকার ও সংস্থাগুলো তাদের দুর্দশা স্বীকার করেনি। তাই এই অনুষ্ঠান থেকে আমরা প্রত্যাশা করি, তাদের নীরব কান্নার কথা বিশ্ব জানবে।’

২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রায় ২৭ জন হিন্দু রোহিঙ্গা নিজ উদ্যোগে মিয়ানমারে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। পরে মিয়ানমার সরকার দাবি করে, ওই হিন্দুদের ওপর মুসলিম রোহিঙ্গারা নিপীড়ন চালিয়েছিল।

এদিকে গেল সপ্তাহে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার বেশ চাপে পড়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর মংডুর হিন্দু ধর্মাবলম্বী কিছু রোহিঙ্গাকে দিয়ে জেনোসাইডের বার্ষিকী পালন করে।

কূটনীতিকরা বলছেন, মিয়ানমার দূতাবাস ‘জেনোসাইড’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকলে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর ব্যাপারে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। আন্তর্জাতিক তদন্তের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত মিয়ানমারের। স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তেই গণহত্যার সঙ্গে ‘আরসা’ নাকি মিয়ানমারের সেনারা জড়িত তা বেরিয়ে আসবে।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড প্রতিরোধবিষয়ক আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী, জেনোসাইড বলতে শুধু ব্যাপক হত্যা বা হত্যাযজ্ঞকেই বোঝায় না। একটি জাতি, নৃতাত্ত্বিক, গোত্র বা ধর্মীয় নৃগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সেই গোষ্ঠীর লোকদের হত্যা, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতিসাধন, শারীরিক ক্ষতির জন্য জীবনযাত্রায় বাধা, জন্ম রোধ করার ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া এবং ওই গোষ্ঠীর শিশুদের অন্য কোনো গোষ্ঠীর কাছে স্থানান্তর— এগুলোর কোনো একটি সংঘটিত হলে তা ‘জেনোসাইড’ বা গণহত্যা অথবা জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবে বিচেচিত হয়।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে সীমান্ত ও সাগর পাড়ি দিয়ে সাড়ে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমার শুধুমাত্র ৪৪৪ জন হিন্দু রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে ফেরত নিজে বরাবরই সম্মতি প্রকাশ করেছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here