• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

যেভাবে কুম্ভ মেলার তীর্থযাত্রীরা ভারতজুড়ে করোনা ছড়িয়েছেন

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

মহামারি করোনাভাইরাসে জর্জরিত ভারত। অথচ একমাস আগেই দেশটিতে নতুন সংক্রমণ ছিলো এক লাখের ঘরে। সে সময়েই হরিদ্বারে কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ সনাতন ধর্মাবলম্বী সমবেত হয়েছিলেন। এই জমায়েত থেকেই ভারতে ভাইরাসটি বিধ্বংসী দ্বিতীয় ঢেউ সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহৎ এই মেলা শুরুর আগেই আশংকা প্রকাশ করে এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছিলো, এই কুম্ভ মেলা এক 'সুপার-স্প্রেডার ইভেন্ট' অর্থাৎ করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়ানোর এক বড় অনুষ্ঠানে পরিণত হবে।

বিবিসির সেই আশংকাই এখন মনে হচ্ছে সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। কুম্ভ মেলা থেকে ফিরে আসা লোকজনকে পরীক্ষা করে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ছে এবং তারা যে সম্ভবত আরও লোকজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছে সেরকম খবর আসছে ভারতের অনেক এলাকা থেকে।

জানা যায়, মাহান্ত শংকর দাস হরিদ্বারে এই উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন ১৫ মার্চ। তখন ভারতের অনেক অংশেই কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।

মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার ৪ দিন পর, এপ্রিলের ৪ তারিখে ৮০ বছর বয়সী এই হিন্দু পুরোহিত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে ধরা পড়েন এবং তাকে একটি তাবুতে ফিরে গিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু একাকী আলাদা থাকার পরিবর্তে মাহান্ত শংকর দাস তার ব্যাগ গুছিয়ে একটি ট্রেন ধরলেন এবং প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিজ এলাকা বারাণসী পৌঁছালেন।

স্টেশনে পৌছে তার ছেলে নগেন্দ্র পাঠক তাকে নিতে আসেন। এসময় তারা আরও কিছু লোকের সঙ্গে একটি ট্যাক্সি শেয়ারে ভাড়া করে ২০ কিলোমিটার দূরের জেলা মির্জাপুরে তাদের গ্রামে পৌঁছান।

মাহান্ত দাস দাবি করছেন, তার কাছ থেকে কেউ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়নি। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই তার ছেলে এবং গ্রামের আরও কিছু মানুষের মধ্যে কোভিডের উপসর্গ দেখা গেল।

তার ছেলে নগেন্দ্র পাঠক জানালেন, তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন, কিন্তু গত দুই সপ্তাহে গ্রামে জ্বর এবং কাশির উপসর্গ নিয়ে ১৩ জন মারা গেছে।

এই গ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মাহান্ত দাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকতে পারে, আবার এটা নাও হতে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, মাহান্ত দাস দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করেছেন। যাত্রীর ভিড়ে ঠাসা একটি ট্রেনে ভ্রমণ করে, শেয়ারের ট্যাক্সিতে চড়ে তিনি হয়তো পথে পথে অনেক জায়গায় ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছেন।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, এপ্রিল মাসে হরিদ্বারে কুম্ভ মেলায় যোগ দেন ৯০ লাখের বেশি তীর্থযাত্রী।

হরিদ্বারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেলায় তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ২,৬৪২ জন কোভিড-পজিটিভ বলে ধরা পড়েছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় নেতাও ছিলেন।

উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব, নেপালের সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ এবং সাবেক রানি কমল শাহ এই কুম্ভমেলা থেকে ফিরে আসার পর পরীক্ষা করে তারাও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

বলিউডের সঙ্গীত পরিচালক শ্রাবণ রাঠোরও এই কুম্ভমেলা থেকে ফেরার কদিন পর মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে মারা যান। মেলায় যোগ দিতে যাওয়া আরেকটি দলের নয় জন হিন্দু ঋষি মারা যান।

গত সপ্তাহে কুম্ভ মেলার আয়োজকরা জানিয়েছিলেন, এবার হরিদ্বারে গিয়েছিলেন ৯১ লাখ তীর্থযাত্রী। উত্তরাখণ্ডে হাইকোর্ট বলেছিল, একটা ভয়ংকর মহামারির মধ্যে এই মেলার আয়োজন করতে দিয়ে এই রাজ্যটি সবার হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে। মেলার শুরু থেকেই এমন আশঙ্কা ছিল যে এটির আয়োজন করা মানে অনেক ঝুঁকি ডেকে আনা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here