• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

মামলার বিবরণীতে সিনহার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook


প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৪ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও পরে আত্মসাৎ-অর্থ পাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করে এই মামলা করলো তারা।

সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিবরণীতে উঠে এসেছে তার নানা অপকর্মের কথা। আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সংস্থাটি।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে চার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ নিয়ে একই দিনে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন। পরে ওই টাকা ব্যক্তিগত হিসাব থেকে অস্বাভাবিক নগদে এবং চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য হিসাবে হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। পাশাপাশি ওই টাকার উৎস ও অবস্থান গোপনের মাধ্যমে পাচার বা পাচারের চেষ্টায় সম্পৃক্ত ছিলেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, জনৈক মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় আলাদা দুটি চলতি হিসাব খোলেন। এর পরদিনই তাঁরা দুই কোটি করে চার কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। ব্যাংকে হিসাব খোলা এবং ঋণ আবেদনপত্রে দুজনই তাঁদের ঠিকানা বাড়ি নম্বর ৫১, সড়ক নম্বর ১২, সেক্টর ১০, উত্তরা আবাসিক এলাকা উল্লেখ করেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই বাড়িটি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যক্তিগত বাড়ি। ঋণ আবেদনে ঋণের বিপরীতে জামানত হিসাবে রঞ্জিত চন্দ্র সাহার স্ত্রী সান্ত্রী রায়ের সাভারে অবস্থিত ৩২ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করেন। তাঁরা দুজনও সাবেক প্রধান বিচারপতির পূর্বপরিচিত ও ঘনিষ্ঠজন।

এজাহার বলছে, ঋণসংক্রান্ত আবেদন দুটি কোনো রকম যাচাই-বাছাই, রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ এবং ব্যাংকের কোনো নিয়ম-নীতি না মেনেই শুধু গ্রাহকের আবেদনের ওপর ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঋণ প্রস্তাব তৈরি করে হাতে হাতে ঋণ প্রস্তাব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে যান। প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটির কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই ছাড়াই অফিস নোট তৈরি করে তাতে স্বাক্ষর দিয়ে সাবেক এমডি এ কে এম শামীমের কাছে নিয়ে যান। ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ নীতি অনুযায়ী ঋণ দুইটির প্রস্তাব অনুমোদন করার ক্ষমতা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের না থাকা সত্ত্বেও তিনি এ–সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই বা নির্দেশনা না দিয়ে ওই ঋণ প্রস্তাব দুটির অনুমোদন দিয়ে দেন।

ঋণ অনুমোদন হওয়ার পরের দিনই আবেদনকারীদের আবেদনের ভিত্তিতে ঋণ হিসাবে অনুমোদিত চার কোটি টাকার পৃথক দুটি পে-অর্ডার সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে ইস্যু করা হয়। পরে ওই পে–অর্ডার সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় এস কে সিনহার হিসাবে জমা হয়। তিনি বিভিন্ন সময়ে অস্বাভাবিক ক্যাশ ও চেক/পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলেন।

মামলার আসামিরা হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীম, ব্যাংকটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাবেক ক্রেডিট প্রধান গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ, গুলশান শাখার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, এস কে সিনহার কথিত পিএস রণজিৎ চন্দ্র সাহা, রঞ্জিতের স্ত্রী সান্ত্রী রায় (সিমি), টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here