• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

ভারতে করোনা ঠেকাতে মোদির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা ল্যানসেটের

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারত। বর্তমানে দেশটির করোনা পরিস্থিতি যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। এমন ভয়ংকর অবস্থা তৈরি হওয়ার জন্যে বারবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে আলোড়ন উঠেছে। এবার মোদির চরম সমালোচনা করেছে প্রখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’।

নিজেদের সম্পাদকীয়'র প্রথম অনুচ্ছেদেই ল্যানসেট ভারতের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে লিখেছে, ‘ভারতে ভয়ঙ্কর করোনা-আবহেও সংক্রমণ ঠেকানোর থেকে সমালোচনার টুইট মুছতে বেশি আগ্রহ ছিল মোদি সরকারের।’ সেইসঙ্গে মোদি সরকারের ভূমিকা ও কেন্দ্রীয় সরকারের এই মনোভাব ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে জার্নালটির সম্পাদকীয়তে।

পৃথিবী বিখ্যাত ওই জার্নালে ভারত সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘ভারতের হাসপাতালগুলিতে বেড নেই। গোটা দেশের শ্মশানে গণচিতা জ্বলছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা টানা কাজ করে ও করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে বিধ্বস্ত। ভারতের এই দুর্যোগ সত্যিই চোখে দেখা যায় না।’

তারা আরও লিখেছে, দেশের মধ্যে সংক্রমণ হাতের বাইরে চলে যেতে পারে জেনেও সরকার ধর্মীয় উৎসব আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে। যাতে দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মানুষ জড়ো হয়েছেন। সঙ্গে ছিল বড় বড় রাজনৈতিক মিছিল ও সমাবেশ। এতে মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট।

প্রায় ভেঙে পড়া ভারতীয় স্বাস্থ্য অবকাঠামোর অবস্থা তুলে ধরে দ্য ল্যানসেটের সম্পাদকীয়তে সরকারের আত্মতুষ্টির সমালোচনা করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, কয়েক মাস আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসার পর সরকার এমন ইঙ্গিত দিয়েছে যাতে মনে হয়েছে ভারত করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হয়েগেছে। যদিও দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিপদ ও নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে বারবার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।

মডেলিং পদ্ধতিতে ভুলভাবে তুলে ধরা হয় যে ভারত হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছে। এতে আত্মতুষ্টি বেড়েছে ও প্রস্তুতি যথাযথ ছিল না। কিন্তু জানুয়ারিতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের সেরোসার্ভেতে দেখা গেছে, মাত্র ২১ শতাংশ মানুষের দেহে করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলার আগাম সাফল্যের কারণে সরকারের কোভিড-১৯ টাস্কফোর্স কয়েক মাস বৈঠকেই বসেনি।

সম্পাদকীয়তে ভারতের করোনা ভ্যাকসিন কর্মসূচিরও সমালোচনা করা হয়েছে।

সংকট উত্তরণের জন্য দুই স্তরের কৌশলের কথা তুলে ধরা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। প্রথমত টিকাকরণ কর্মসূচি দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা। দ্বিতীয়ত সময়মতো প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ এবং আগেই জনগণকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা যাতে মহামারি ঠেকাতে করণীয় এবং নতুন জাতীয় লকডাউন জারির সম্ভাবনাও থাকতে পারে।

এদিকে ভারত সরকারের এই বিতর্কিত ভূমিকার মধ্যে দেশটিতে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৩৮ জন। এ নিয়ে পরপর ৪ দিন আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হলো। দেশটিতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও ৪ হাজারের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৯২ জনের।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রোববার (৯ মে) পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৪ জন। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here