• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

পীরগাছায় তিস্তার চর কেটে অবাধে চলছে বালু বিক্রি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের পীরগাছায় তিস্তা নদীর চর কেটে অবাধে চলছে বালু বিক্রি। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই একটি প্রভাবশালী মহল গত পাঁচ বছর থেকে বালু উঠিয়ে আসছে। বর্ষায় শ্যালো মেশিন ও ড্রেজার বসিয়ে বালু উঠানো হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে চর জেগে ওঠায় কোদাল, বেলচা ও এক্সেভেটর দিয়ে বালু কেটে কাঁকড়া (ট্রলি) ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতি কাঁকড়া বালু ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশ্যে তিস্তার বালু বিক্রি চললেও প্রশাসন নীরব ভুমিকা পালন করছে।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার ছাওলা ইউপির পানিয়ালের ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক বার কাঁকড়ার মাধ্যমে তিস্তার চরের বালু কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পানিয়ালের ঘাট থেকে শিবদেব চর পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় তিস্তার ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। তিস্তার ভাঙন বাঁধের ৩০০ মিটারের মধ্যে এসে ঠেকেছে। তিস্তার গতিপথ পরিবর্তনের কারণে বর্ষায় নদীর স্রোত ডানতীর ঘেঁষে প্রবাহিত হয়। ফলে উপজেলার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউপির তিস্তা নদীর তীরবর্তী গাবুড়ার চর, শিবদের চর, কিশামত ছাওলা, পূর্ব হাগুরিয়া হাশিম, চর ছাওলা, চর কাশিম, শিবদেব চর, রহমতের চর, চর তাম্বুলপুর ও চর রহমত গ্রামের আবাদি জমি ও বসত ভিটা ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। চক্রটি বাঁধের ৫০০ মিটারের মধ্যে বালু কেটে বিক্রি করছে। এতে বর্ষা মৌসুমে বাঁধটি বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাওলা ইউাপর সাবেক ইউপি সদস্য আবু সাঈদ, হযরত আলী, আমজাদ হোসেন ও চকলেটের নেতৃত্বে একাধিক চক্র দীর্ঘদিন থেকে তিস্তা নদী থেকে বালু উঠিয়ে বিক্রি করে আসছে। চরাঞ্চলে এখন বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হচ্ছে। কিন্তু চক্রটি জমির মালিকদের ভয় দেখিয়ে প্রকাশ্যে মাটি কেটে নিচ্ছে। এতে কৃষকরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করারও সাহস পাচ্ছে না তারা।

স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় বিশাল বিশাল চর জেগে ওঠে। কৃষকরা ফসল ফলানোর জন্য মাঠে নামে। কিন্তু বালু খেকো চক্রটি নিজ ইচ্ছা মতো যত্রতত্র বালু কেটে গর্ত করে বিক্রি করে। এভাবে বালু কেটে নিয়ে যাওয়ায় নদীর গতিপথ বদলে ভাঙন ঝুঁকি বেড়েছে। 

ছাওলা ইউপির বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, প্রকাশ্যে দীর্ঘদিন থেকে বালু তোলা হচ্ছে। শতাধিক কাঁকড়া চরে যাতায়াত করতে করতে সড়ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ ছাড়া কখনই এমনভাবে বালু নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা সম্ভব না। বালু কাটার কথা স্বীকার করে সাবেক ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, জোর করে নয়, চরের জমির মালিকদের টাকা দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। 

পীরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাত আরা ফেরদৌস বলেন, তিস্তা থেকে বালু তুলে বিক্রির বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। স্থানীয়রা বিষয়টি জানালে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল সরকার বলেন, তিস্তা নদীর ওই অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। বালু উঠানো বাঁধকে আরো হুমকিতে ফেলবে। বালু উঠানোর বিষয়টি দেখে ডিসি’র কার্যালয়। তবে আমি বিষয়টি ডিসিকে অবগত করবো।

Place your advertisement here
Place your advertisement here