• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

পঞ্চগড়ে তরুণীকে বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কলেজ পড়ুয়া এক তরুণীকে বিয়ের কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগে প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বর্তমানে প্রেমিক রবিউল ইসলামসহ মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। আহত ওই তরুণীকে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রবিউল ইসলাম নামের ওই যুবক ৪ বছর ধরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই তরুণীর সাথে জোরপূর্বক দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। রবিউলের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে সমঝোতার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে দরিদ্র ওই তরুণীকে।

মামলার অভিযোগ ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার খুটাগছ এলাকার আব্দুল হাইয়ের ছেলে রবিউল ইসলাম। সদ্য ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছেন। রবিউলের বর ভাই হাসিবুল ইসলামের স্ত্রী রূপালী আক্তারের সহপাঠী ভুক্তভোগী ওই তরুণী। রূপালীর বিয়েতে রবিউলের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। চার বছর ধরে বিয়ের কথা বলে রবিউল ওই তরুণীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে। কিন্তু ওই তরুণীর বিয়ের তাড়া দিলেও রবিউল বিয়ে করছিল না। ওই তরুণী বর্তমানে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে একটি বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। 

গত ২৭ অক্টোবর রবিউল বিয়ের কথা বলে মোবাইলে পঞ্চগড় থেকে তাকে তার বাড়িতে ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের লোকজন ওই তরুণীকে মারধর করতে থাকে। এ সময় তার স্মার্টফোনটি নিয়ে সব ডিলেট করে দেয় তারা। এক পর্যায়ে ওই তরুণীর চিৎকারে স্থানীয় কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে ওই তরুণী সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর রবিউল তেঁতুলিয়ার কালান্দিগঞ্জ এলাকার আব্দুল মতিনের মেয়ে আখি আক্তারকে বিয়ে করেন। ঘটনার পরদিন ২৮ অক্টোবর ওই তরুণী বাদি হয়ে রবিউলসহ ৪ জনের উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন। অপর আসামিরা হলেন রবিউলের বড় দুই ভাই আনোয়ার হোসেন (৩৩) ও আহম্মদ আলী (৪৫) এবং রবিউলের ভাবী রূপালী বেগম (২০)। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক রয়েছে। 

মারধরের শিকার ওই তরুণী বলেন, আমি তখন একাদশ শ্রেণিতে পড়তাম। পরিচয়ের পর থেকেই রবিউল আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি সাড়া দেইনি। ওই সময় একদিন রূপালীর বাড়িতে রবিউল আসলে রূপালী আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সেখানে রূপালীর সহযোগিতায় রবিউল আমাকে ধর্ষণ করে। পরে নিরুপায় হয়ে আমি তার সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। এরপর রবিউল বিভিন্ন স্থানে নিয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। সম্প্রতি আমি তাকে বিয়ের চাপ দিতে থাকলে সে টালবাহানা শুরু করে। এরপর আমাকে বিয়ের কথা বলে তার বাড়িতে নিয়ে মারধর করে। এখন আমি মানুষকে মুখ দেখাবো কেমন করে। ওরা অনেক প্রভাবশালী। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আর কোন মেয়ের সাথে কেও এমনটা করার সাহস না পায়।   

রবিউলের মা আম্বিয়া বেগম ওই তরুণীর সাথে তার ছেলের সম্পর্ক ছিলো স্বীকার করে বলেন, ওই মেয়ের সাথে রবিউলের এক বছর আগে সম্পর্ক ছিলো। পরে তাদের মধ্যে কাটাকাটি হয়ে গেছে। রবিউলের বিয়ের কথা শুনে ২৭ অক্টোবর ওই তরুণী বাড়িতে ঢুকতে চাইলে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে তবে মারধর করা হয়নি। 

এ বিষয়ে রবিউলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ওই তরুণী কলেজ ছাত্রী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। আসামি সবাই পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ওই তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here