• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

করোনা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিলো যেসব সিনেমায়!

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে চলেছে মহামারি করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে থামছেই না মৃত্যুর মিছিল। বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিলো করোনার মতো নানা ধরণের মহামারি ভাইরাসের বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া সম্পর্কে। 

কভিড-১৯ খ্যাত নতুন এই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিল পাওয়া যায় হলিউড সিনেমা কন্ট্যাজিয়নের। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ চলচ্চিত্রের গল্পকে ২০২০ সালের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রায় নির্ভুল ভবিষ্যদ্বাণী বলছেন অনেকে। মানুষ অদূরভবিষ্যৎ ও সমসাময়িক বাস্তবতাকে বুঝতে কীভাবে ফিকশনকে ব্যবহার করে, তার এক উদাহরণ কন্ট্যাজিয়ন।

বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি নিয়ে তৈরি হয়েছে আরো বেশ কিছু চমৎকার ছবি। এগুলোর মধ্যে ডিস্টোপিয়ান, দি ওমেগা ম্যান, ওয়ার্ল্ড ওয়ার জেড ও প্যান্ডেমিক উল্লেখযোগ্য।

১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে নির্মিত ডিস্টোপিয়ান ছবির সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় ছিল পরমাণু অস্ত্রের ধ্বংসলীলা। এ পর্বের সমাপ্তি ঘটে এক সময়, পরমাণু অস্ত্রের জায়গা নেয় জীবাণু অস্ত্র। জীবাণু ঘাতক মানবজাতির অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে- এমন গল্পই বারবার উঠে এসেছে একালের ডিস্টোপিয়ান চলচ্চিত্রে।

এ ধারার শুরুর দিকের ছবি দি অ্যান্ড্রোমিডা স্ট্রেইন। ১৯৭১ সালে এটি মুক্তি পায়। মাইকেল ক্রাইটনের একটি উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি নির্মিত হয়। বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নতি মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করছে- এমন ধারণা বারবার ক্রাইটনের লেখায় উঠে এসেছে। টিভি সিরিজ ওয়েস্টওয়ার্ল্ড ও জুরাসিক পার্কে ধারণাটি সরাসরিই উপস্থাপন করা হয়েছে। দি অ্যান্ড্রোমিডা স্ট্রেইনও তার ব্যতিক্রম নয়।

একই ভাবধারার গল্প দেখা যায় ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী টুয়েলভ মাংকি ছবিতে। সম্ভাব্য ভয়াবহ প্লেগ মহামারীকে আগেই ঠেকিয়ে দিতে কাল ভ্রমণ হলো এ ছবির গল্প। এরপর ধরা যাক আউটব্রেকের কথা। বর্তমান সময়ের জন্য একটি মোক্ষম দৃষ্টান্ত হতে পারে। আফ্রিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হয়ে আসা একটি বানর থেকে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক এক ভাইরাস। একদল বিজ্ঞানী এ সংক্রমণ ঠেকাতে প্রাণান্ত চেষ্টা শুরু করেন।

এসব চলচ্চিত্রের গল্প কিন্তু সবসময় শুধু কল্পকাহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, কখনো কখনো তা বাস্তব ঘটনার সঙ্গে কল্পনার মিশেলে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছে। এই তো গত বছর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল দ্য হট জোন নামে একটি বাস্তব ঘটনানির্ভর সিরিজ সম্প্রচার করে। ১৯৮৯ সালে আফ্রিকা থেকে আনা শিম্পাঞ্জির মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসির এক শহরতলিতে স্থাপিত গবেষণাগারে ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এক বিজ্ঞানী প্রাণ বাজি রেখে এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকিয়ে দেন- এটিই এ ছবির গল্প।

তবে নতুন করোনাভাইরাসের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে মিল পাওয়া যাচ্ছে কন্ট্যাজিয়নের। ছবিতে এক মার্কিন নারী এমইভি-১ নামের ভাইরাসে আক্রান্ত হন হংকংয়ের এক বাবুর্চির সঙ্গে করমর্দনের মাধ্যমে। বাবুর্চি শূকরের মাংস কাটতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন। শূকরটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল বাদুড়ের মাধ্যমে। হংকং থেকে মিনেসোটা ফিরে ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক দিনের মধ্যে তিনি মারা যান। তার স্বামী আক্রান্ত না হলেও ভয়ানক মানসিক আঘাত পান। দ্রুতই অন্যরা আক্রান্ত হতে শুরু করে, ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী।

স্টিভেন সোডারবার্গ পরিচালিত ও স্কট জি বার্নসের লেখা চিত্রনাট্য এ ছবিকে ভাইরাস মহামারীর বাস্তব দৃশ্যের ভবিষ্যদ্বক্তায় পরিণত করেছে বলা যেতে পারে। এ ছবিতেও দেখানো হয় গুজব ও ভীতি কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষকে কোয়ারান্টাইনে নেয়া হয়। সন্ত্রস্ত ও হতাশাগ্রস্ত মানুষ, চুরি, ডাকাতি, প্রতারণা, জাল প্রতিষেধকের প্রচার, ভুতুড়ে বিমানবন্দর যেন আজকের কথাই বলে।

কন্ট্যাজিয়নের এ বাস্তব হয়ে ফিরে আসা অবাক করেছে চিত্রনাট্যকার স্কট বার্নসকে। ফরচুন ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কন্ট্যাজিয়ন চলচ্চিত্রের মূল ধারণাটি ছিল এটা তুলে ধরা যে মহামারীর প্রাদুর্ভাবের জন্য আধুনিক সমাজ কতটা নাজুক।

কেট উইন্সলেট, জুড ল, লরেন্স ফিশবার্ন, মারিয়ন কটিলার্ড ও ব্রায়ান ক্র্যাস্টনের মতো অভিনেতারা রয়েছেন এ ছবিতে। কন্ট্যাজিওনের কাহিনী অনেক চরিত্রের গল্পের সমষ্টি। ভুক্তভোগী ও ভ্যাকসিন তৈরি করতে মরিয়া বিজ্ঞানীদের গল্প আছে এতে। গল্পের যে অংশটি আজকের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য সেটি হলো, কীভাবে একটি ভুল সিদ্ধান্ত অথবা হঠকারী পদক্ষেপ ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়। বিশেষ করে আধুনিককালে পরস্পর সংযুক্ত বিশ্বে একটি ভুল সিদ্ধান্তের মধ্যে থাকতে পারে ধ্বংসের বীজ- এ চরম সত্যটি কন্ট্যাজিয়নে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে।

‘দ্য কামিং প্লেগ’ বইয়ের লেখক লরি গেরেট ছিলেন কন্ট্যাজিয়ন ছবির নির্মাণকালের পরামর্শক। সিনেমাটি মুক্তির সময় তিনি বলেছিলেন, এ ছবির গল্প কিছুটা কাল্পনিক, কিছুটা বাস্তব আর সামগ্রিকভাবে সম্ভাব্য।

Place your advertisement here
Place your advertisement here