• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী সিদল তৈরির পদ্ধতি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

মাছে ভাতে বাঙালি হলেও বাংলার একেক অঞ্চলে রয়েছে নিজস্ব কিছু খাবার। রসনাবিলাসি বাঙালির পাতে তাই নানান রকম ঐতিহ্যবাহী খাবার আজো শোভা পায়। দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের খাবারের মধ্যে রয়েছে অনেক বৈচিত্র্য। তেমনি একটি উল্লেখযোগ্য খাবার হল সিদল, সিদল ভর্তা।

শুঁটকি মাছ ও কচুর ডাটা দিয়ে তৈরি একটি খাবার। অন্যান্য অঞ্চলে এটি থাকলেও খাবারটি উত্তরাঞ্চলের (রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়) খাবার হিসেবে পরিচিত।

বৃহত্তর ময়মনসিংহের অনেক অঞ্চলে চ্যাঁপা শুটকিকে সিদল/হিদল বলা হয় যা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রান্নার দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তরাঞ্চলের সিদল হতে ভিন্ন। তবে ভিন্নতা থাকলেও সিদল তৈরিতে সব স্থানেই ছোট মাছের শুটকি ব্যবহার করা হয়। পারিবারিক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠানো সওদা হিসেবে কিংবা নিজ বাড়িতে আপ্যায়নের ক্ষেত্রে একসময় সিদল ছিল অন্যতম একটি উপকরণ। শুধু তা-ই নয়, হাটে-বাজারে বিক্রিও হতো গ্রামীণ পরিবারের নারীদের হাতের তৈরি এই মুখরোচক খাবার।

এটি ভর্তা করে ভাতের সঙ্গে খাওয়া যায়। আবার বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে মিশিয়েও রান্না করা যায়। তবে সিদল তৈরি অথা কিন্তু খুব একটা সহজ কাজ নয়। চলুন আজ জেনে নেয়া যাক এই ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরির রেসিপিটি- 
উপকরণ: পুঁটি বা দারকিনা মাছের শুটকি  ১/২ কেজি কচুর ডাটা, হলুদ গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ মরিচ গুঁড়া, জিরা বাটা ২ টেবিল চামচ,আদা বাটা ১ টেবিল চামচ,  পিঁয়াজ বাটা, ১০টি রসুন বাটা, ১০টি সয়াবিন বা সরিষার তেল ১০০ মিলি।

প্রণালী: প্রথমে শুটকি মাছগুলো ভালো করে রোদে দিয়ে নিন। হালকা ভেজেও নিতে পারেন। এবার মচমচে শুটকি মাছ পাটা/হামান দিস্তা/ঢেঁকিতে খুব ভালো করে গুঁড়া করে নিতে হবে। শুটকির গুঁড়া চালুনিতে চেলে নিতে হবে। এর ফাঁকে কচুর ডাটা ধুয়ে ছিলে নিয়ে এক-দেড় ঘণ্টা রোদে রেখে পানি ঝড়িয়ে নিন। পানি ঝরানো হলে পাটা/হামান দিস্তা/ঢেঁকিতে ভালো ভাবে পিষে মিহি পেস্ট তৈরি করতে হবে।

এবার কচুর ডাটার মণ্ড পেস্ট ও শুটকির গুঁড়া ভালো করে মেশাতে হবে। এজন্য পাটা/হামান দিস্তা/ঢেঁকি যে কোনোটাই ব্যবহার করতে পারেন। এবার মণ্ডতে বাকি সব উপকরণ মিশিয়ে হাতের তালুতে গোল করে চেপে সিদলের আকৃতি দিন। সিদল চাটাই/কুলা/চালুনে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকানোর প্রথম দিকে সিদলের উপরি ভাগ ফেটে গেলে প্রতিটা সিদল আলাদা আলাদা করে উঠিয়ে পুনরায় হাতের তালুতে গোল করে চেপে সিদলের আকৃতি দিয়ে রোদে শুকাতে হবে তা না হলে সিদল ফেটে যাবে। এভাবে ১৫-১৬ দিন রোদে শুকালে সিদল সংরক্ষণের উপযোগী হবে।

তৈরির সময়: কড়া রোদ থাকলে বছরের যে কোনো সময় সিদল তৈরি করা যায়। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় এসময় সিদল তৈরির জন্য ভালো। বছরের অন্যান্য সময়ে তৈরি করা শুটকি থেকে সারা বছরই খুব সহজেই সিদল তৈরি করা যায়।

সংরক্ষণ পদ্ধতি: সিদল রোদ থেকে এনে ঠাণ্ডা করে প্লাস্টিক/টিন/কাঁচের মুখবন্ধ পাত্রে সংরক্ষণ করা যায়। তবে, মাঝে মাঝে বের করে রোদ দেয়া আবশ্যক। রোদে দেয়া সিদল পুনরায় ঠাণ্ডা করে মুখবন্ধ পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। কিছু দিন পর পর রোদে দিলে সিদল দেড়-দুই বছর ভালো থাকে।

রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ শুকনো সিদল প্লাস্টিকের কাগজে মুড়িয়ে প্লাস্টিকের বক্সে রেফ্রিজারেটরে রাখলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। এ ক্ষেত্রেও মাঝে মাঝে রোদ দেবার প্রয়োজন রয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here