• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

আয়া সোফিয়া মসজিদে শুক্রবার থেকে নামাজ শুরু

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

তুরস্কের ঐতিহাসিক স্থাপত্য নির্দশন ও জাদুঘর আয়া সোফিয়া। দেশটির রাজধানী ইস্তাম্বুলে এটি অবস্হিত। তুরস্কের আদালতের রায়ে আয়া সোফিয়া এখন থেকে ফের মসজিদ হিসেবেই ব্যবহার হবে। 

মসজিদটির জন্য ইতোমধ্যে ২ জন ইমাম ও ৪ জন মুয়াজ্জিন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তুরস্কের ধর্মবিষয়ক অধিদফতরের প্রধান অধ্যাপক ড. আলি আরাবাশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ২৪ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের মাধ্যমে আয়া সোফিয়া নামাজ শুরু হবে। 

অমুসলিম বিশ্বের ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও তুরস্কের ঐতিহাসিক ‘আয়া সোফিয়া’ জাদুঘরকে মসজিদ বানানোর সিদ্ধান্তে অটল দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ান। এ সিদ্ধান্তকে তিনি তুরস্কের ‘সার্বভৌম অধিকারের ব্যবহার’ বলে উল্লেখ করেছেন।

শনিবার এক ভিডিও কনফারেন্সে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যারা নিজ দেশে ইসলামোফোবিয়ার (মুসলিমদের ওপর ঘৃণা) বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় না… তারা তুরস্কের সার্বভৌম অধিকার ব্যবহারের ইচ্ছার ওপর আক্রমণ করছে।’

শুক্রবার (১০ জুলাই) তুরস্কের সর্বোচ্চ আদালত আয়া সোফিয়াকে মসজিদে প্রত্যাবর্তনের রায় দেয়। ধর্মবিষয়ক অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে আগামী ২৪ জুলাই শুক্রবার থেকে তাতে নিয়মিত নামাজ শুরু হবে।

ফিরে দেখা: তুরস্কের ইস্তাম্বুলে স্থাপিত এ স্থাপনাটি অর্থোডক্স গির্জার জন্য সর্বপ্রথম তৈরি করা হয়। ১২০৪ সাল পর্যন্ত এ স্থাপনাটি গির্জা হিসেবে উপাসনা চলে।

১২০৪ সালের পর এটি ক্যাথলিক গির্জায় রূপান্তরিত হয়। যা প্রায় ৫৭ বছর ক্যাথলিক গির্জা হিসেবে ব্যবহারের পর ১৯৬১ সালে তা আবার অর্থোডক্স গির্জায় রূপান্তরিত হয়। আর তা ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৯২ বছর স্থায়ী হয়।

১৪৫৩ সালে (পঞ্চদশ শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে) এ অঞ্চলটি উসমানিয় খলিফাদের দখলে আসে। উসমানিয় শাসকরা এ স্থাপনাটিকে মসজিদে পরিণত করে। যা প্রায় ৫০০ বছর স্থায়ী হয়। সে সময় এ স্থাপনাটিকে ‘ইম্পেরিয়াল মসজিদ’ নামে ঘোষণা দিয়ে প্রধান মসজিদের মর্যাদা দেয়া হয়।

৪৮২ বছর মসজিদ থাকার পর ১৯৩৫ সালে আধুনিক তুরস্কের স্থপতি ও রাষ্ট্রপতি কামাল আতাতুর্ক এ স্থাপনাটিকে জাদুঘরে পরিণত করেন। এক পর্যায়ে স্থাপনাটি নিয়ে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের দ্বন্দ্বের কারণে নতুন নিয়ম চালু হয়। আর তাহলো- এ স্থাপনার মূল হলরুমটি ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সেটি মুসলিম কিংবা খ্রিস্টান কেউই ব্যবহার করতে পারবে না।

তবে উভয় ধর্মের অনুসারিদের জন্য এ স্থাপনায়ই রয়েছে আলাদা আলাদা স্থান। আবার জাদুঘরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আলাদা আলাদা ইবাদতের স্থানও নির্মাণ করা হয়।

২০১৯ সালের মার্চে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, পর্যটকরা হাজিয়া সোফিয়ার ব্লু মসজিদে আসা যাওয়া করতে পারবেন। এজন্য তাদের হাজিয়া সোফিয়া জাদুঘরের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে মসজিদটি পরিদর্শন করতে হবে বলে জানান। পাশাপাশি এটি মসজিদে পরিণত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন।

আয়া সোফিয়াকে ঘিরে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তুরস্কের বাইরে বিশ্বব্যাপী চরম সমালোচিত হচ্ছেন। তবে এই সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে উল্টো বহির্বিশ্বকে এ বিষয়ে নাক গলাতে নিষেধ করেছেন মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী এই নেতা।

উল্লেখ্য, আয়া সোফিয়া ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সম্রাজ্যের অর্থডোক্স খ্রিস্টানদের সর্ববৃহৎ গির্জা হিসেবে নির্মাণ করা হয়। ১৪৫৩ সালে সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ ইস্তাবুল বিজয় করে তা ক্রয় করেন এবং মসজিদ হিসেবে ওয়াকফ করে দেন বলেও জানা যায়। ৪৮১ বছর পর ১৯৩৪ সালের ২৪ নভেম্বর মোস্তফা কামাল (আতাতুর্ক) পাশার মন্ত্রীপরিষদ এটিকে জাদুঘরে পরিণত করে। 

অবশেষে ৮৬ বছর পর আবার তা মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দেয় তুর্কি আদালত। যেখান থেকে নিয়মিত ৪ মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে সুমধুর আজানের সুর।

Place your advertisement here
Place your advertisement here