• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১০ লাখ টিকা আসছে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা প্রায় ১৬ লাখ লোকের মধ্যে প্রায় ১০ লাখের টিকা জোগাড় হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল শুক্রবার ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছেন, কোভ্যাক্স উদ্যোগের আওতায় ১০ লাখ ৮০০ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা শিগগিরই পাওয়া যাবে। এদিকে চীনের দ্বিতীয় দফায় উপহার হিসেবে দেওয়া ছয় লাখ ডোজ সিনোফার্ম টিকা এখন দেশে পৌঁছার অপেক্ষায়। ঢাকায় চীনের মিশন উপপ্রধান হুয়ালং ইয়ান গতকাল শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিকার চালান বহনকারী গাড়ির বেইজিং বিমানবন্দরে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করেছেন। জানা গেছে, বাংলাদেশ দুটি এয়ারক্রাফট পাঠিয়ে টিকার চালান দেশে আনবে। আগামীকাল রবিবার সিনোফার্মের ছয় লাখ ডোজ টিকা দেশে আসতে পারে। এর আগে গত মাসে চীন পাঁচ লাখ ডোজ সিনোফার্ম টিকা পাঠিয়েছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, টিকার পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে উপহার হিসেবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দেওয়া কভিড সুরক্ষাসামগ্রী আসছে চীন থেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সরকার যেভাবে কভিড টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েছিল, তাতে অনেক দেশের চেয়েই বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার কথা ছিল। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার জন্য সমঝোতা ও মূল্যও পরিশোধ করেছিল। সমঝোতা অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা পাঠাতেও শুরু করেছিল। কিন্তু ভারতে গত মার্চ মাসে কভিড পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ আকার ধারণ করে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার কাঁচামাল রপ্তানিও বন্ধ করে। এমন প্রেক্ষাপটে ভারত তার অভ্যন্তরীণ কভিড পরিস্থিতি সামাল দিতে বিদেশে টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এর আগ পর্যন্ত ভারত থেকে এক কোটি ৩৩ লাখ ডোজ কভিড টিকা এসেছে। এর মধ্যে ভারত উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দিয়েছে তিন দফায় ৩৩ লাখ ডোজ, বাণিজ্যিকভাবে পাঠিয়েছে ৭০ লাখ ডোজ টিকা।

ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশকে টিকার জন্য অন্য দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে চীন এগিয়ে এসেছে। চীনের সিনোফার্ম টিকার পর সিনোভ্যাক টিকাও বাংলাদেশ অনুমোদন করেছে। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সিনোভ্যাক টিকা আমদানি নিয়েও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা শুরুর কথা বলেছেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, চীন ও রাশিয়া দুই দেশ থেকেই বাণিজ্যিকভাবে টিকা আমদানির চেষ্টা চলছে। প্রথম দফায় চীন থেকে সিনোভ্যাকের দেড় কোটি ডোজ টিকা আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিপত্রের খসড়া বিনিময় হয়েছে। সরকার রাশিয়া থেকে প্রথম দফায় এক কোটি ডোজ স্পুিনক টিকা আনতে চায়। এ ছাড়া বাংলাদেশেই চীন ও রাশিয়ার টিকা উৎপাদনের বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দেশের কোন কম্পানি যৌথভাবে টিকা উৎপাদন করবে তা বাংলাদেশ নয় বরং মূল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানই ঠিক করবে।

এদিকে কোভ্যাক্সের আওতায় ফাইজার বায়োএনটেকের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এরই মধ্যে দেশে এসেছে। এ সপ্তাহে ঢাকার নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালে ওই টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে। কোভিশিল্ড বাংলাদেশের জন্য এক কোটি ৯ লাখ আট হাজার ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা বরাদ্দ দিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সেই টিকা সরবরাহ করার কথা ছিল।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৩২ কোটি থেকে ৩৩ কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা মজুদ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এখনো সেই টিকা অনুমোদন করেনি। বাইডেন প্রশাসন এরই মধ্যে ছয় কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকাসহ অন্যান্য টিকা মিলিয়ে মোট আট কোটি ডোজ অন্য দেশগুলোকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্র আড়াই কোটি ডোজ টিকা ছাড়বে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ওই টিকাগুলোর ৭৫ শতাংশ দেওয়া হবে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশের জন্য ৭০ লাখ ডোজ টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র নিম্ন ও নিম্ন মধ্য আয়ের ৯২টি দেশের জন্য ৫০ কোটি ডোজ ফাইজারের টিকা কেনার ও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। ওই ৯২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও আছে বলে জানা গেছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের জন্য আপাতত চ্যালেঞ্জ হলো ১৬ লাখ লোকের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করা। কোভ্যাক্সের কাছ থেকে ১০ লাখ ডোজ টিকা পেলে বাকি থাকবে আরো ছয় লাখ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করার ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তাদের টিকা নিশ্চিত হলে গণটিকা প্রদান কার্যক্রম ভালোভাবেই এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সরকার আশা করছে। পরিকল্পনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে চীন ও রাশিয়া থেকে বাণিজ্যিকভাবে কেনা টিকা আসা শুরু করবে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় কোভ্যাক্স থেকেও টিকা আসবে। এ ছাড়া ভারতে কভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে চলতি বছরের শেষ দিকে ভারত থেকে টিকা রপ্তানি শুরু হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশেও যৌথভাবে টিকা উৎপাদনে অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here