• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

শেখ হাসিনার দারিদ্র বিমোচন মডেলে স্বনির্ভর বাংলাদেশ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধ থেকে শুরু করে, মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা- সবকিছুই ঘটেছে তার চোখের সামনে। স্বাধীনতা এসেছে, হাঁটি হাঁটি পা-পা করে উঠে দাঁড়িয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। কখনো পুরনো শকুনেরা খামচে ধরেছে জাতীয় পতাকা। আবার কখনো তুমুল উল্লাসে ভোটাধিকারে মেতেছে জনতা। কিন্তু তবুও থমকে ছিল কারো কারো ললাটের ভাগ্যরেখা। করিমন বেওয়া তাদেই একজন; দুঃসহ জীবনের ঘানি টানতে টানতে- যারা ভুলে গিয়েছিল- আগামীর স্বপ্ন-দেখা।

জৈষ্ঠ্যের তাপদাহ, শ্রাবণের ঝড়োধারা, কিংবা মাঘের হাঁড় কাঁপানো শীত- পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, খোলা আকাশটাই এতোদিন ছিল তাদের একমাত্র ছাতা। আজ একজনের বাড়ির আঙ্গিনায়, তো- কাল আরেকজনের দোকানের ঝাঁপের নিচে। কারো কারো হয়তো একটু থাকার জায়গা ছিল, কিন্তু ছিল না দুবেলা পেটপুরে অন্নের ব্যবস্থা। জোড়া-তালি দেওয়া কাপড় আর অন্যের কৃপা- এভাবেই ধুঁকে ধুঁকে চলছিল অসহায় মানুষদের জীবন।

তবে সেই পরিস্থিতি আজ বদলে গেছে। প্রান্তিক মানুষেরা একসময় স্বপ্নেও যা ভাবেননি, তার চেয়েও বেশি কিছু পেয়ে গেছেন তারা।

হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ছিন্নমূল পরিবারকে জমিসহ একটি করে বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে সরকার। শিগগিরই আরও ১ লাখ পরিবারকে ঘর হস্তান্তরের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর, তাদের উপার্জনের জন্যেও নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। বাংলাদেশের উন্নয়মুখী অবকাঠামোগত সুবিধা ব্যবহার করে সচ্ছল হয়ে উঠছে এসব পরিবার। এছাড়াও বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে সরকারি ভাতা। ফলে শ্রম-জীবন থেকে ফিরে আসছে তাদের সন্তানেরা। বিনামূল্যে শিক্ষা ও উপবৃত্তি প্রদানের কারণে এখন স্কুলমুখী হয়েছে অসহায় মানুষদের নতুনপ্রজন্ম। স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে যাচ্ছে ঘরে ঘরে, একদম প্রান্তিক মানুষটির চোখেও উড়ছে আগামীর স্বপ্নডানা।

স্বল্প আয়ের মানুষদের আর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রামের কৃষক, শ্রমিক, বেকার যুবক, দরিদ্র, অসহায় ও স্বল্প পূঁজির মানুষদের সহায়তার জন্য প্রতিটি উপজেলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। পশু-পাখি পালন, সবজি চাষ বা কৃষিকাজের জন্য জামানত ছাড়াই এখন ঋণ পাচ্ছে মানুষ। যোগাযোগ ও আর্থিক ব্যবস্থাসহ সব খাত ডিজিটাইজড হওয়ায়- সৃজন হয়েছে নতুন নতুন পেশা। ইউনিয়ন পরিষদের ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহার করে প্রান্তিক চাষিদের উৎপাদিক পণ্য সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে গ্রামের একেবারে অসহায় মানুষটিও আজ ভোগ করছে প্রতিটি মৌলিক সুবিধা।

মূলত, ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই- আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে- সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন- বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সেই ধারাবাহিকতায়- সমাজের দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এমনকি করোনাকালের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেও গরিব ও দুঃস্থদের জন্য খাদ্য ও অর্থ সহায়তা নিশ্চিত করেছে সরকার। এমনকি সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি প্রকল্পগ্রামে রোপণ করা হয়েছে ফলদ, বনজ ও ওষধি বৃক্ষ। নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা। এমনকি অসহায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের জন্যেও টং ঘর ও বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন দেশ পুনর্গঠনের শুরুতেই- অসহায় মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন; তার কন্যা ও জননেত্রী শেখ হাসিনাও তেমনি গণমানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। দুর্যোগে-দুর্বিপাকে বাঙালি জাতির অতন্দ্র প্রহরী হয়ে জেগে রয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তার নেতৃত্বের আলোতেই আলোকিত হয়ে উঠেছে লাখ লাখ নিঃস্ব মানুষের চোখের আভা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাইলফলক অতিক্রম করে, আজ প্রতিটি কর্মমুখর দিনের শেষে- একেকটি ছিন্নমূল মানুষের নীড়ে ফেরার পরিতৃপ্ত হাসির রেখায়- বেড়েই চলেছে পড়ন্ত গোধূলির অমলিন স্নিগ্ধতা। মানবিক সমাজ গঠনের- এক অপরূপ রূপ ছড়িয়ে- আগে বাড়ছে- আমার সোনার বাংলা।

আন্তর্জাতিক বিশ্ব যখন ক্ষুদ্র ঋণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে পৃথিবী থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে, ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনায় সাফল্য ধরা দিয়েছে। তিনি প্রথমে ভূমিহীনদের জন্য এককালীন ভূমি ও বাড়ি করে দিয়েছেন। হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করেছেন জামানত-ছাড়াই সুদমুক্ত ঋণ-ব্যবস্থা। ফলে, থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়ায় পর- ছিন্নমূল মানুষ নিজেরাই ফিরে পেয়েছে কর্মস্পৃহা, খুঁজে নিয়েছে নিজেদের কর্ম। শিক্ষার আলোয় হাসতে শুরু করেছে তাদের নতুন প্রজন্ম। এটাই শেখ হাসিনার দারিদ্র-বিমোচন মডেল। বিশ্ব যদি এই মডেল অনুসরণ করে, তাহলে পৃথিবীতে আর একটিও হতদরিদ্র মানুষ থাকবে না।

Place your advertisement here
Place your advertisement here