• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

এগিয়ে চলো সূর্যোদয়ের দল

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

মাহবুবউল আলম হানিফ

কালের পরিক্রমায় আজ ৭৩ বছরে পা রাখলো দেশের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালের এদিনে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠা হয় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী এ দলটির। তারপর এ দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।

আওয়ামী লীগ শুধু দেশের পুরনো ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলই নয়, এটি হচ্ছে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শের মূলধারাও। প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ আমাদের সমাজ-রাজনীতির এ ধারাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে নিচ্ছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের অন্যতম পুরনো, অসাম্প্রদায়িক, সর্ববৃহৎ ও বাঙালির জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল। আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের গড়ার কাজ প্রথম শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিস্তানি সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৩ বছরের আপোসহীন লড়াই-সংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা হলেও দীর্ঘ ২১ বছর লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলটির প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় এই দলটি। পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে।

এ দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে সফলতার নতুন পথ দেখিয়েছেন, দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সহ অসংখ্য মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক সূচকে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হিসেবে সত্যিকারার্থেই উত্থান ঘটেছে বাংলাদেশের। যে কারণে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ প্রভৃতি কারণেই বাংলাদেশ বিশ্ব পরিমণ্ডলে স্বাতন্ত্র্য অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর এবং আন্তর্জাতিক নানা সূচকে সুদৃঢ় অবস্থান আমাদেরকে মর্যাদাপূর্ণ জাতিতে পরিণত করেছে।

তরুণ প্রজন্মের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যত বিনির্মাণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল দেশ। আমাদের তরুণ প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবী। তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদা এই তারুণ্যকে ধারণ করে।

৭২ বৎসরের এই দীর্ঘ পথ চলায় বারবার এ দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের উপর আস্থা রেখেছে এবং আওয়ামী লীগ সেই আস্থার প্রতিদান ও দিয়েছেন। সেই কারণেই আজ বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্খা এবং ভরসার একটাই জায়গা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা।

৭৩ বছরে পদার্পণের শুভ মুহূর্তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। শ্রদ্ধা জানাই জাতীয় চার নেতা সহ আওয়ামী লীগের লক্ষ লক্ষ নেতা কর্মীদের প্রতি যারা বাঙালীর মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন ।

বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল থেকে সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার সংগ্রামই হোক আজকের দিনে আমাদের অঙ্গীকার। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থকদের জানাই সংগ্রামী শুভেচ্ছা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক: যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

Place your advertisement here
Place your advertisement here