• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

অর্থের অভাবে থেমে যাচ্ছে ফরিদুলের উচ্চ শিক্ষার চাকা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

নীলফামারীতে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পড়ালেখা চালাতে পারছে না শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. ফরিদুল ইসলাম। সে নীলফামারী চাঁদের হাট ডিগ্রী কলেজে ইতিহাস বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

পারিবারিক  অস্বচ্ছলতার মধ্যদিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেও উচ্চ শিক্ষার ব্যয় চালিয়ে যাওয়া তার জন্য দুঃসহ হয়ে পড়েছে। ফরিদুল নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ী চাঁদের হাট পাইলাভাঙ্গা এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।

পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ‍‍`জন্মের পরে পায়ের সমস্যা নিয়ে ফরিদুল ইসলামের জন্ম হয়। জন্মের চার বছর পর হঠাৎ করে কানের সমস্যা দেখা দেয়। তারপর থেকে কানেও কম শোনে। কানে কম শোনা ও পায়ের সমস্যার কারণে স্বাভাবিকভাবে কোনো কাজ করতে পারে না ফরিদুল।

ফরিদুল ইসলামের পিতা রফিকুল ইসলাম একজন দিনমুজর। তার দুই ছেলে দুই মেয়ে। সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। আছে শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই। অনেক কষ্টে চলে তাদের সংসার। অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছেন দুই মেয়েকে। আরেক ছেলেও পড়ছে হাফিজিয়া মাদরাসায় হেফজ বিভাগে। কষ্ট করে হলেও বাবা রফিকুল ইসলাম তার সন্তান ফরিদুলের পড়াশোনা করাচ্ছেন। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ নানা কারণে ফরিদুলের পড়াশোনা চালানো তার জন্য দুঃসহ হয়ে উঠেছে।

ফরিদুল ইসলামের পিতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন গরীব মানুষ। সহায় সম্বল বলতে কিছু নাই। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলাতে খুব কষ্ট হয়। স্যার বলেছে, আমার ছেলেটা পড়াশোনায় অনেক ভালো। তাই তাকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছি। আমারও স্বপ্ন ছেলেটা উচ্চ শিক্ষা অর্জন করুক। তবে টাকার অভাবে তা মনে হয় আর সম্ভব হবে না।‍‍`

ফরিদুল ইসলামের প্রাইভেট শিক্ষক শাইখুল ইসলাম বলেন, ‍‍`৪র্থ ও ৫ম শ্রেণিতে আমার কাছে যখন ফরিদুল প্রাইভেট পড়তো তখন থেকেই সে কানে কম শুনতো। আমি যখন সকল শিক্ষার্থীদের অঙ্ক বুঝতাম তখন ভাবতাম ফরিদুলকে কিভাবে অঙ্কগুলো বুঝবে।

তবে দেখলাম স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে সে অনেক ভালোভাবে অঙ্কগুলো বুঝতো। তাকে একাধিক বার কোনো বিষয় দেখে দিতে হয়নি। সে নিজের চেষ্টায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‍‍`আমি তার একজন শিক্ষক হিসেবে চাই ফরিদুল ইসলাম উচ্চ শিক্ষা অর্জন করুক এবং উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য তাকে আর্থিকভাবে সকলে সহযোগিতা করুক। অর্থের অভাবে যেন সে উচ্চা শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়ে না যায়।‍‍`

ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‍‍`আমার কাজ করতে তেমন সমস্যা হয় না। কৃষিকাজ থেকে শুরু করে বাঁশ ও বেতের কাজ, রাজমিস্ত্রী, কম্পিউটারসহ অনেক কাজ করতে পারি। আমি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে চাই। আমার বাবা একজন দিনমজুর। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া খরচসহ সংসার চলায়। টাকার অভাবে লেখাপড়া করতে কষ্ট হচ্ছে। আমার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য সকলের সহযোগিতা চাই।‍‍`

Place your advertisement here
Place your advertisement here