• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

তেঁতুলিয়ায় জরিমানার বদলে খাবার তুলে দিলেন ইউএনও

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

সারাদেশের মতো পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চলমান লকডাউন বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। রোববার (১১ জুলাই) বিকেলে উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের বোয়ালমারী বাজার মনিটরিং করছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা। এ সময় তিনি এক অসহায় মাছের দোকানদারকে জরিমানা না করে হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন।

জানা গেছে, মাছের দোকানাদার আলাউদ্দিনের বাড়ি উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ গ্রামে। চার মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। মাছ বিক্রি করেই চলে তার সংসার। 

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা ৬টায় তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় জাতীয় মহাসড়কের পাশে কালান্দিগঞ্জ সংলগ্ন বোয়ালমারী গ্রাম্য বাজার মনিটরিং করতে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা। এ সময় তিনি লক্ষ্য করেন রাস্তার পাশে একটি দোকানের সামনে জীর্ণ শরীরে ৮-১০টি ছোট মাছ নিয়ে বসে আছেন আলাউদ্দিন নামে ওই দোকানদার। এ সময় তিনি সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে দোকানটি বন্ধ করতে গিয়ে দেখেন, ওই দোকানদারের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। 

পরে তিনি তার কাছে দোকান খোলার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা তেমন ভালো চলছে না। কয়েক দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে চলছে তার সংসার। তাই পেটের দায়ে অসুস্থ শরীর নিয়েও বিধি নিষেধ অমান্য করে কয়েকটি মাছ বিক্রির অপেক্ষায় আছেন। তার কথা শুনে পরিস্থিতি ও মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকারি বিধিনিষেধ ভাঙার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক (ত্রাণ) সহায়তা তুলে দেন। 

এদিকে দণ্ডের পরিবর্তে ত্রাণ সহায়তা পেয়ে খুশি আলাউদ্দিন। তিনি জানান, আমি গরিব মানুষ। অসুস্থ শরীর নিয়ে মাছ বেচাকেনা করে কোনো রকমে সংসার চলত। লকডাউনে মানুষ তেমন বাজার আসে না তাই মাছ বিক্রি করতে না পেরে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখি। পরে ইউএনও স্যার আমার দোকানে এসে আমাকে জরিমানা না করে খাবারে ব্যাগ হাতে তুলে দেন। স্যারকে ধন্যবাদ জানাই আমার মতো গরিবকে জরিমানা না করে সহযোগিতা করার জন্য। আমি খুব খুশি। কয়েকদিন পর ছেলে-মেয়েকে নিয়ে দুবেলা পেট ভরে খেতে পারব। 

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, লকডাউন বাস্তবায়ন করতে দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়ায় মাঠে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও যৌথবাহিনী। প্রশাসনের কঠোর অবস্থান থাকায় বেশির ভাগ মানুষ সচেতন হচ্ছে। অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি কমেছে। 

রোববার উপজেলার বোয়ালমারী এলাকায় বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় আলাউদ্দিন নামে ওই মাছের দোকানদারের অসহায়ত্বে কথা শোনার পর তাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সচেতন করি এবং খাদ্যসামগ্রী তুলে দেই। পরবর্তীতে তাকে আরও সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকৃত গরিব-অসহায়দের খুঁজে খুঁজে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আগামীতেও এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here