• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুর নগরীর একটি ছাত্রাবাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শহিদুল ইসলাম শহীদ (২২) নামের ওই শিক্ষার্থীর পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট পায় পুলিশ।

শনিবার (৫ মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে নগরীর কলেজ রোড দর্শনা এলাকার নীলাঞ্জনা ছাত্রাবাসের একটি কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

শহিদুল ইসলাম শহীদ রংপুরের পীরগঞ্জের হলদিবাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য রংপুরে এসে কোচিং করছিলেন।

ছাত্রাবাসের মালিক শামীম বলেন, শহিদুল শুক্রবার রাতে রুমে একা ঘুমিয়েছিলেন। সকালে উঠতে দেরি হওয়ায় সন্দেহ হলে অনেক ডাকাডাকি করেন তারা। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে দরজা ভেঙে দেখেন শহীদ ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায়। দ্রুত থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে তাজহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইজার আলী জানান, শহিদুল এই বছর উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির কোচিং করতে রংপুরে আসেন। সকাল থেকে তার ঘরের দরজা বন্ধ দেখে মেস থেকে আমাদের খবর দেওয়া হয়। আমরা দরজা ভেঙে দেখি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মরদেহ ঝুলছে।

তিনি আরও জানান, মরদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। এতে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় উল্লেখ করে কিছু কথা লেখা রয়েছে। তার মৃত্যুতে যেন কোনো মামলা না হয়, সেটিও নোটে বলা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে এই আত্মহত্যার পেছনে প্রেমঘটিত ব্যাপারকে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

শহিদুল সুইসাইড নোট লেখা ছাড়াও নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টও করেছিলেন। পোস্টে লিখেছেন, ‘প্রথমবার এই চিঠি লিখছি এবং শেষবারও। আমায় ক্ষমা করবেন, আমার কথার অর্থ যদি না বোঝেন। আমার জন্ম এক দুর্ঘটনার মতো। শৈশবের একাকিত্বের অভাব আমি কখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। হতে পারে পৃথিবী আমার জন্য কঠিন।’

আরেকাংশে লিখেছেন, ‘আমি সব সময় একজন মানুষকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম। আর তাকে ভালোবেসে একটা উপন্যাস লিখতে শুরু করলাম। সেই উপন্যাসে পাঠকদের মুগ্ধ করে রাখতে চাইছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুধু এই ভয়ংকর লেখাটাই লিখতে পারলাম।’

শহিদুলের ওই পোস্টের শেষাংশে রয়েছে, ‘লেখাটা যখন আপনারা পড়বেন, তখন আমি আপনাদেরকে ছেড়ে অনেক দূরের না ফেরার দেশের যাত্রী। আমি জানি আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা আমাকে ভালোবাসেন। খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলাম না হয়তো কারোর কাছে। তবে ছিলাম তো..? আমি বারবার বাঁচতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি আর বাঁচতে পারলাম না। আমার পরিবারের কাছে একটা আর্জি, আমার জন্য কোনো প্রকারের অভিযোগ দায়ের করবেন না।’

এদিকে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান প্রধান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, হতাশ হয়ে ছেলেটি মারা গেছে। মরদেহ থানায় নেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here