• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

বদরগঞ্জে বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম ‘মিয়াজাকি’ 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের বদরগঞ্জে বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম মিয়াজাকি এখন শোভা পাচ্ছে চাষি জাহেদুল হকের গাছে। তিনি পেশায় একজন ফলচাষি হলেও তিনি চারা গাছ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। তার বাড়ি উপজেলার রামনাথপুর ইউপির কিসমত ঘাটাবিল এলাকার সরকারপাড়ায়।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, তার বিশাল আম বাগানের এক পাশে লাগানো হয়েছে মিয়াজাকি আমের একটি মাত্র গাছ। বর্তমানে গাছে শোভা পাচ্ছে ১৬টি আম- যা ক্রমেই লাল টকটকে হয়ে উঠছে। 

তিনি জানান, চার বছর আগে যশোরের একটি নার্সারি থেকে এক হাজার টাকায় একটি চারা গাছ সংগ্রহ করেন। মূলতঃ গাছ থেকে চারা সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই ওই চারাটি তিনি সংগ্রহ করেন। কিন্তু ওই গাছের বৃদ্ধি এত ধীর গতিতে হয় যে তিনি তিন বছর পর্যন্ত হতাশই ছিলেন। কেননা ওই তিন বছরে তার গাছের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এ কারণে তিনি রাগে ও ক্ষোভে ফলের আশা না করে সেখান থেকে সায়ন সংগ্রহ করে চারা গাছ তৈরি করেন। তবে সেই চারা থেকেও তিনি কোনো ব্যবসায়িক মুনাফা অর্জন করতে পারেননি। নার্সারির শ্রমিকরা ভুল করে নাম মাত্র মূল্যে সব চারাই বিক্রি করে দিয়েছেন এক বাগান মালিককে। এবারে অবশ্য গাছে আম ধরেছে। রুগ্ন চেহারার ওই গাছের ১৬টি আম যেন এলাকাটিকে রঙিন করে তুলেছে।

চাষি জাহেদুল হক বলেন, আমটি সম্পর্কে প্রথমে কোনো ধারণাই ছিল না। তবে এখন শুনছি মিয়াজাকি আম দুর্লভ প্রজাতির হওয়ায় বিশ্ব বাজারে এর দাম সর্বোচ্চ। এর স্বাদ কেমন তাও জানা নেই। তবে এবারে আম হওয়ায় স্বাদ সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারব।

জানা গেছে, আমটির প্রকৃত নাম ‘তাইওনো তামাগো’ জাপানের কিউসো দ্বীপের মিয়াজাকি অঞ্চলে ওই আমের চাষ হয় বলে এর নাম হয়েছে ‘মিয়াজাকি’। তবে আমটি টকটকে লাল হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এটি ‘রেড ম্যাংগো’ নামে পরিচিত। আর বাংলাদেশে পরিচিত ‘সূর্য ডিম’ নামে। মিয়াজাকির আবহাওয়া সব আম চাষের উপযোগী না হওয়ায় সেখানে গ্রীণ হাউস পদ্ধতিতে কঠোর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওই আমের চাষ করা হয়। ওই আমের গাছ সাধারণতঃ ছয় ফুটের বেশি লম্বা হয় না। গাছে মুকুল আসার পর ৮০ শতাংশ মুকুল ছেঁটে ফেলা হয়। এছাড়া একটি গাছে ৫০-৬০টির বেশি আম নেয়া হয় না। ওই আমকে মহামূল্যবান সম্পদ মনে করে শৈল্পিক পরিচর্যা করেন সেখানকার চাষিরা। 

মিয়াজাকি আম ৫০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। তিন মাসের মধ্যে আম পরিপক্ক হলে গাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই আম মিয়াজাকি অঞ্চলে নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। মাত্র ৩০-৫০টি আম সর্বোচ্চ মূল্য পায়। এছাড়া সবচেয়ে সেরা দু’টি আম বাংলাদেশি টাকায় চার লাখে বিক্রির রেকর্ডও আছে সেখানে।

উপজেলা কৃষি অফিসার গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, মিয়াজাকি আম চাষে খুব বেশী জায়গার প্রয়োজন হয় না। সামান্য জায়গায় যদি বেশি আয় হয় তাহলে চাষিরা লাভবান হবেন- এটাই স্বাভাবিক। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম এখন বদরগঞ্জে দেখা যাচ্ছে- এটাতো সবার গর্বের বিষয়। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here