• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

হিট স্ট্রোক বুঝবেন কীভাবে   

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

হিট স্ট্রোক হলো তাপজনিত সবচেয়ে গুরুতর অসুস্থতা। শরীর যখন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না: শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, ঘামের প্রক্রিয়া শরীরের তাপমাত্রা কমাতে ব্যর্থ হয় তখন হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোক হলে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি হতে পারে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না করলে হিট স্ট্রোক স্থায়ী পঙ্গুত্ব বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

এককথায় বললে, হিট স্ট্রোক হলো এমন একটি অবস্থা যা শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপের কারণে হয়। সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করলে বা কায়িক শ্রম দিলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি হলে হিট স্ট্রোক হতে পারে। গ্রীষ্মকালে এটি একটি সাধারণ সমস্যা।

হিট স্ট্রোকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। সময় মতো ও সঠিক চিকিৎসা না করালে হিট স্ট্রোকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, কিডনি এবং পেশির ক্ষতি হতে পারে। আর চিকিৎসায় দেরি হলে গুরুতর শারীরিক জটিলতা বা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

হিট স্ট্রোকের কারণ:

তীব্র গরম পরিবেশে বেশিক্ষণ অবস্থান করলে হিট স্ট্রোক হয়। এটিকে বলে নন–এক্সারশনাল (ক্ল্যাসিক) হিট স্ট্রোক। এই ধরনের হিট স্ট্রোক সাধারণত গরম, আর্দ্র আবহাওয়ার সংস্পর্শে বেশি সময় থাকলে হয়। প্রায়শই বয়স্কদের এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভোগা মানুষের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে।

আবার গরমের মধ্যে কঠোর কায়িক শ্রম দিলেও হিট স্ট্রোক হয়। এ কারণে আমাদের দেশে খেতমজুর বা মাঠে কাজ করার সময় কৃষকদের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। আবার তীব্র গরমের মধ্যে ব্যায়াম করলেও হিট স্ট্রোক হতে পারে।

আবার আরও কিছু কারণে হিট স্ট্রোক হতে পারে, যেমন:

অতিরিক্ত পোশাক পরা। এতে ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হয়ে শরীর ঠান্ডা হতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
অ্যালকোহল পান করা। এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমে যায়।
ঘামের মাধ্যমে হারানো তরল পূরণ করার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান না করা। অর্থাৎ পানিশূন্যতা থেকেও হিট স্ট্রোক হতে পারে।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

* চোখে অন্ধকার দেখা বা মতিভ্রম (হেলুসিনেশন) হওয়া
* মানসিক অবস্থার হঠাৎ পরিবর্তন
* কথা জড়িয়ে যাওয়া
* চেতনা হারানো (কোমা) 
* গরম, শুষ্ক ত্বক বা প্রচুর ঘাম
* খিঁচুনি
* শরীরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে যাওয়া

শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বুঝতে হবে হিট স্ট্রোক হয়েছে। এটিই হিট স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ।

হিট স্ট্রোকের আক্রান্ত ব্যক্তি মানসিক অবস্থার হঠাৎ পরিবর্তন আসে বা অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করে। মতিভ্রম হয়, অস্থির আচরণ করে, কথা জড়িয়ে যায়, বিরক্তিভাব আসে, প্রলাপ বকে, খিঁচুনি হয় অথবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

গরম আবহাওয়ার কারণে হিট স্ট্রোক হলে ত্বক অত্যন্ত গরম এবং শুষ্ক অনুভূত হয়। অবশ্য কঠোর ব্যায়ামের কারণে হিট স্ট্রোক হলে ত্বক সামান্য আর্দ্র বোধ হতে পারে।

বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া। পেটে অস্বস্তি বোধ থেকে বমি হতে পারে।

শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে।

শ্বাস–প্রশ্বাস দ্রুত এবং অগভীর হবে।

হৃৎস্পন্দন হঠাৎ বেড়ে যাবে। কারণ তাপের চাপ থেকে শরীরকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করার জন্য হৃৎপিণ্ড দ্রুত পাম্প করতে শুরু করে।মাথাব্যথা হতে পারে বা মাথা ঝিমঝিম করতে পারে।

প্রাথমিক চিকিৎসা

* রোগীকে দ্রুত ছায়াযুক্ত, শীতল জায়গায় নিয়ে যান এবং পোশাক খুলে ফেলুন।
* সম্ভব হলে ঠান্ডা পানি বা বরফ গোসলের ব্যবস্থা করুন।
* গোসল সম্ভব না হলে ভেজা কাপড় দিয়ে ত্বক ঘন ঘন মুছে দিন।
* ত্বকের ওপর ঠান্ডা ভেজা কাপড় রাখুন।
* দ্রুত শীতল করার জন্য বাতাস করতে থাকুন।
* মাথা, ঘাড়, বগল এবং কুঁচকিতে ঠান্ডা ভেজা কাপড় বা বরফ রাখুন। ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখা কাপড়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: মায়ো ক্লিনিক, সিডিসি

Place your advertisement here
Place your advertisement here