বিয়ের চেয়ে উপার্জনশীল হওয়াটা মেয়েদের জন্য বেশি দরকারীঃ মানসী রায়
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০১৯
Find us in facebook
'প্রাক্তন ' ছবিটার কথা মনে আছে? বছর তিনেক আগের এই অত্যন্ত জনপ্রিয় ছবিতে দেখানো হয়েছিল এক উচ্চাকাঙ্খী নারী, তার উচ্চাকাঙ্খাহীন, স্ত্রীর প্রতি উদাসীন, গোঁয়ার, ক্ষুদ্র মানসিকতার স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে না পেরে শেষমেশ বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নেয়। এই ঘটনার বেশ কিছু বছর পরে সেই স্বামী (ছবির নায়ক) এবং তার বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে তার ট্রেনের কামরায় হঠাৎ করেই দেখা হয়ে যায়। এর পর ছবি যত এগোতে থাকে ছবির গল্প ও চরিত্ররা আস্তে আস্তে দর্শককে বোঝাতে থাকে একটি মেয়ের কাছে সংসারের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব ঠিক কতখানি! ঠিক কতটা আপোষ এবং ত্যাগ করতে হয় একটি মেয়েকে সংসার টিকিয়ে রাখতে গেলে। পুরো ছবি জুড়েই এই বিষয় নিয়ে নায়কের বর্তমান স্ত্রী প্রাক্তন স্ত্রীকে জ্ঞান দান করে চলেন এবং শেষপর্যন্ত দর্শকের প্রত্যাশা মতোই প্রাক্তনের বোধোদয় হয় ও সে তার পূর্ব সংসার জীবনে নিজের 'ভুল' গুলো বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়। ছবি শেষ হয়। দর্শকও খুশি। মহিলা দর্শকেরা আরও খুশি । মূল সমস্যাটা কিন্তু একই জায়গায় অবিচল থেকে যায় – মেয়েদের স্বামী – সংসারের কনসেপ্ট বা মজ্জাগত ধারণা। স্বামী সংসারকে এই রকম ভাবে গ্লোরিফাই সিনেমা-সিরিয়াল সর্বত্রই করা হয়ে থাকে। এর কারণ আর কিছুই না, 'সংসার' শব্দটার প্রতি মানুষের, আরও নির্দিষ্ট করে বললে, মেয়েদের বিশ্বাস এবং এই ধরণের গল্পের মধ্যে দিয়েই মেয়েদের বর্তমান সামাজিক অবস্থান ও তাদের প্রায়োরিটি পরিষ্কার হয়ে যায়।
বলাই বাহুল্য, আজও, এই একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও অধিকাংশ মেয়েই বিবাহোত্তর সংসারকেই জীবনযাপনের এক ও একমাত্র অবলম্বন বলে মনে করে বা তাদের সেটাই মনে করানো হয়। যে মেয়েটির গায়ের রঙ কালো বা যে মেয়েটি তথাকথিত অসুন্দর, তার মাথায় ছেলেবেলা থেকেই তার বিয়ে নিয়ে এবং তার বাবার সেই সংক্রান্ত খরচের বিপুলতার চিন্তা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো বহুল চর্চিত, বহুল বর্ণিত, বহুল সমালোচিত অথচ সজ্ঞানে বহুল উপেক্ষিত বিষয়। সমস্যা হচ্ছে, বেশির ভাগ মেয়েই কিন্তু এতে কোনও আপত্তি করে না। যেন তেন প্রকারেণ তারা বিয়েটা করতেই চায়। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরিই হয় মূলতঃ অর্থের ভিত্তিতে। মেয়ের বাবা অর্থ সহযোগে ( খালি হাতে কখনওই নয়) মেয়েকে তুলে দেন একটি পুরুষের হাতে, যাতে সেই পুরুষটি পরবর্তীকালে মেয়েটির সমস্ত খরচাপাতি এবং দেখভালের দায়িত্ব নেয়। সেজন্যই একটি মেয়ের কাছে তার স্বামী-সংসার এবং জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এক হয়ে যায়। ফলস্বরূপ ,যে মেয়েটি পুরোপুরি স্বামীর উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল, নিজের ভরণপোষণের বিনিময়ে সে সংসার নামক স্বেচ্ছাদাসত্ব মাথা পেতে নেয় বা নিতে বাধ্য হয়। এই রকম অনেক মেয়েই আছে যারা দিনের পর দিন স্বামীর কাছে অত্যাচারিত হওয়ার পরও তাকে ছেড়ে আসে না। এর প্রথম কারণটা যে অর্থনৈতিক, সেটা সহজেই অনুমেয়। ধরে নেওয়া যেতে পারে দ্বিতীয় কারণটা হয়তো সামাজিক। কিন্তু এর একটা তৃতীয় কারণও আছে – সংসারের মোহ! সংসারই তার জগৎ। সেটাই তার পরিচয়, আইডেন্টিটি! সেখান থেকে বেরিয়ে এলে কে সে? মা, কাকিমা, জ্যেঠিমা, মামীমা, বৌদি বা কারুর স্ত্রী – এই পরিচয় এবং ডাকে সে নিজেকে সুরক্ষিত বোধ করে! মেয়েদের এই বোধটাই যে সর্বনাশা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না!
অনেক ক্ষেত্রেই, বা বলা ভালো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছেলের বিয়ে দেওয়ার পরে বাড়ির পরিচারিকাকে তার কাজ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয় তার জায়গাটা পুত্রবধূকে দেওয়া হবে এই মানসিকতায়। ছেলের পরিবার তো অবশ্যই, মেয়েটির পরিবার এমনকি মেয়েটি নিজেও এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করে না, উপরন্তু সর্বত ভাবে মনে করে সেই নতুন সংসারের খুঁটিনাটির দায়িত্ব এর পর থেকে তার। বিয়ে হয়েছে অথচ শ্বশুরবাড়িতে সংসারের কাজ করতে হয় না- এটা মেয়েদের কাছে প্রায় অবিশ্বাস্য এবং বিস্ময়কর একটি ব্যাপার। কারণ একটাই, স্বামী, সংসার ও পরবর্তীতে সন্তান পালন – এর বাইরে মেয়েদের ভূমিকা নিয়ে মেয়েরা নিজেরাই আত্মবিশ্বাসী নয়। কেবল অর্থনৈতিক ভাবে স্বামীর ওপর নির্ভরশীল গৃহবধূরাই নয়, অনেক চাকুরিরতা, রোজগারী মহিলাও সংসার সম্বন্ধে অত্যধিক সচেতন, সংসারকে কেন্দ্র করেই তাঁদের যাবতীয় ভাবনাচিন্তা এবং তাঁর বাইরের জগৎ বা কর্মজগৎটাকে গৌণ ও স্বামী-সংসারকে মুখ্য ভেবে তৃপ্তি লাভ করেন। বেশকিছু কাজের জায়গায় নারীরা পুরুষদের চেয়ে কম বেতন, কম পারিশ্রমিক পান (ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যার অন্যতম উদাহরণ) এবং এই বৈষম্য তাঁরা অনেকেই বিনা প্রতিবাদে মেনে নেন কারণ তাঁরা নিজেরাই বিশ্বাস করেন তাঁদের স্বামী / পুরুষ সঙ্গীর রোজগারটাই আসল, তাঁদেরটা অতিরিক্ত, না হলেও চলে!
একই ভাবে, সংসারের চাপ নিজেদের প্রতিভার চর্চা বা স্ফূরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে – এই ধরণের অনুযোগও নিতান্তই অজুহাত বই কী! এসব ক্ষেত্রে তাঁরা যে আসলে নিজেদের গুণের জোরে পরিচিত হওয়ার চেয়ে সংসারে পাঁচজনের একজন হতে চাওয়াকেই বেশি প্রায়োরিটি দিতে চেয়েছেন বা দিয়েছেন, সে বিষয়ে কোনও দ্বিমতের অবকাশ নেই।
ব্যতিক্রম যে নেই, তা তো নয়! প্রচুর মহিলা আছেন যাঁরা এই রকম ছাঁচে ঢালা নন। তবুও, কোনও সুউপায়ী, স্বাবলম্বী, আত্মনির্ভর বিবাহবিচ্ছিন্না নারীকে যখন দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার বিয়ে করতে দেখা যায়, তখন বিয়ে যে শুধু স্থায়ী পুরুষসঙ্গী এবং তথাকথিত 'রক্ষক'-এর মিথ নয়, একটা সুস্থ সংসারের বাসনা, সেটা মনে হওয়া বোধকরি খুব অস্বাভাবিক না! এখানে পরিচয় নয়, অবলম্বনটাই প্রধান।
অন্যদিকে, অবিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে এই সংসার সম্পর্কিত সমস্যাগুলো আরও জটিল এবং মনস্তাত্ত্বিক। অনেককেই দেখা যায় বিপথে চলে যেতে এবং সেই সিদ্ধান্ত বা জীবনের জন্য তাঁরা তাঁদের বিয়ে না হওয়াকেই দায়ী করেন। আবার এমনও কেউ কেউ আছেন, যাঁরা স্বামী, সন্তান, শ্বশুর, শাশুড়ী সহ নিজের একটি সংসার কল্পনা করে নেন এবং সবার সঙ্গে সেই কাল্পনিক সংসারের গল্প খুব স্বাভাবিক ভাবেই করেন যাতে কেউ তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা না ভাবে। অর্থাৎ, বিবাহোত্তর সংসার সমাজের একটি প্রয়োজনীয় উপাদানও বটে!
আশ্চর্যের বিষয় হল, এই বিপুল সংখ্যক নারী যাঁরা স্বামী এবং সংসারকে অবলম্বন করে বেঁচে থাকেন বা বাঁচার কথা ভাবেন, তাঁদের খুব কম সংখ্যকই কিন্তু নিজে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা ততক্ষণ ভাবেন না যতক্ষণ না তাঁদের স্বামী বা পুরুষসঙ্গীটি উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। এখানেও সেই সংসার বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টাই মুখ্য, নিজের পায়ে দাঁড়ানোটা নয়।
কাজেই, মেয়েদের আগে বুঝতে হবে যে, সংসার বস্তুতঃ একটি পরিবারে থাকা প্রতিটি মানুষের সম্মিলিত যাপন। এটি চালনা করার জন্য প্রত্যেকেরই সমান ভূমিকা থাকা উচিত। সংসারে থাকাটা একটা চয়েস বা বাধ্যতা, কিন্তু তা কোনওভাবেই কারুর একমাত্র পরিচয় হতে পারে না। উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত স্তরে মেয়েদের কদর কম হওয়া বা বিয়ের সময় পণপ্রথার ভয়ে অবৈধ ভাবে কন্যাভ্রূণ হত্যার জন্য অনেকাংশে দায়ী কিন্তু মেয়েদের এই শুধুমাত্র স্বামী-সংসার অবলম্বন করে থাকার মানসিকতা, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চারিয়ে গেছে এবং এখনও যাচ্ছে। ঘরের সাংসারিক কাজকর্মকে অধিকাংশ মানুষই 'কাজ' বলে মনে করে না যেহেতু তা অর্থকরী নয়। সংসার যে কেবলমাত্র পারস্পরিক সহাবস্থানের একটি পদ্ধতি, জীবনধারণের অবলম্বন নয় এবং বিয়ের চেয়ে উপার্জনশীল হওয়াটা যে মেয়েদের জন্য বেশি দরকারী, মেয়েরা যতদিন না নিজেরা বুঝছে, নারীবাদ এবং নারী-পুরুষের সমানাধিকার শুধুমাত্র কথার কথা হয়েই থেকে যাবে।
- রৌমারীতে মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি ও জীবনাশের অভিযোগে মানববন্ধন
- `জগবন্ধু ঠাকুরবাড়ি` ব্রিটিশ স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন
- আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ২ কর্মীকে জরিমানা
- হাবিপ্রবিতে কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন
- ফুলবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের শরবত বিতরণ
- তেঁতুলিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন
- সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব
- হাকিমপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই
- হাতীবান্ধায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নতুন কমিটি ঘোষণা
- গঙ্গাচড়ায় মাদ্রাসার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করলেন এমপি
- বিশাল কারখানায় নেই ফ্যান-এসি
- হেলিকপ্টারে করে বউ আনলেন পোশাকশ্রমিক
- গোবিন্দগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত, আটক ২
- চিলমারীতে প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ
- পীরগঞ্জে মাদকসহ গ্রেফতার ২
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক : শসার মাস্ক
- মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে
- বাংলাদেশ-গাম্বিয়া জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব
- ডর্টমুন্ডের সঙ্গে এক যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন এই ফুটবলার
- ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পুরস্কার পেলেন ‘অভাগী’ মিথিলা
- হজের ক্ষেত্রে শয়তান যেসব ওয়াসওয়াসা দেয়
- মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো কুয়েত
- যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির
- রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- সাত জেলায় দুপুরের মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
- ‘নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে’
- বাংলাদেশ-ভারত আজ একই লক্ষ্যে এগোচ্ছে: সেলিম মাহমুদ
- ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন হতে হব- প্রতিমন্ত্রী রিমি
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- চিলমারীতে বৃষ্টির জন্য ৩য় দিন ইসতিসকার নামাজ আদায়
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- গাজার ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ক্রিকেটার বিথী
- সুন্দরগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য
- আবারও তিনদিন বাংলাবান্ধার ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- হিলিতে রচনা প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ রক্তিম
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন করা হবে: ইসি আলমগীর
- ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীরা
- জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন গৃহীত
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ভূরুঙ্গামারীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস পালিত
- মির্জা ফখরুলকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে: ওবায়দুল কাদের
- ঢাকায় ইসরায়েলের বিমান
- বদরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা