• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা করা বাঁধনের মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ নভেম্বর ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

আজকের এই অবস্থানে আসা সহজ ছিল না অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের। একটা সময় ছিলো যখন হতাশা ও কষ্টে আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। দুবার আত্মহত্যার জন্য পা বাড়িয়েছিলেন বাঁধন। সেই জায়গা থেকে মনের সঙ্গে যুদ্ধ করে ফিরেছেন তিনি। শির উঁচু করে চলছেন আপন ভুবনে। আজ নিজের পাশাপাশি দেশের মুখ উজ্জল করেছেন এই অছিনেত্রী। তার ভাষায়, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ তার জীবনটা বদলে দিয়েছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাঁধন। এসময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী। তার কথায় উঠে আসে ক্যারিয়ারে তিক্ত অভিজ্ঞতা ও হার না মানা বাঁধনের ঘরে দাঁড়ানোর গল্প।

ক্যারিয়ার শুরুর আগে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ডিপ্রেশনে ভুগে দুইবার আত্নহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বাঁধন। তবে একটা পর্যায়ে তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে নতুনভাবে সবকিছু শুরু করেন। আজ বাঁধন সফল। অপ্রাপ্তি নেই বললেই চলে। যারা হতাশায় ভোগেন, তাদের জন্য পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, কেউ যদি হতাশায় ভুগে প্রথমে তাকে ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে একজন সাইকোলজির কাছে যেতে হবে। এ সময়ে পরিবারের সাপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই নিজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। নতুন নতুন জিনিস অনুধাবন করতে হবে। তাহলেই সব হতাশা কাটিয়ে পুনরায় নতুনভাবে সবকিছু শুরু করতে পারবে।

বাঁধন বলেন, রেহানার কস্টিউম থেকে বের হতে ৪ মাসেরও অধিক সময় লেগেছে। শুটিং শেষ হলেও ননস্টপ কস্টিউম পরে থাকতাম। কস্টিউম পরেই সব জায়গায় যেতাম। এখনও রেহানাকে বহন করছি। আজও চরিত্রটি থেকে বের হতে পারিনি। কতদিনে পারব, তাও জানি না। রেহানা শুধু আমার কিংবা কোনো নারীর গল্প না, আমাদের সবার গল্প। সবাই এই গল্পের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারবেন।

তার কথায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে অবস্থিত ইস্টার্ন মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের হোস্টেলে দুই মাস অবস্থান করে আমরা শুটিং করেছি। আমার চরিত্রের নাম রেহানা। অন্য অভিনেত্রীরা গিয়ে শুটিং করলেও আমি থেকেই করেছি। সিনেমাটির জন্য মেয়ের কাছ থেকে দূরে ছিলাম দীর্ঘদিন। ২৪ ঘণ্টা মেয়েটি আমার জন্য কান্নাকাটি করত। কাজের চাপে বেশ কয়েকবার শুটিং ফেলে ঢাকায় চলে আসার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলাম। শুটিংয়ের মধ্যে একবার ড্রাইভার ফোন করে বলে গাড়ির চাকা নষ্ট হয়ে গেছে। আবার আইনজীবী ফোন করে বলেন, কোর্টের এই অবস্থা। অন্যদিকে সাদও কাজটি থেকে তৃপ্তি পাচ্ছেন না। সে অল্পতেই সন্তুষ্ট হন না।

এই জার্নিটা ছিল যন্ত্রদায়ক। সাড়ে পাঁচ মিনিটের একটি শট ঠিকঠাক মতো ফুটিয়ে তুলতে ৬৭ বারও নেওয়া হয়েছে। যেটি এক টেকেই হয়ে যায়। একেকটি শট একাধিকবার নিতে হয়েছে। পরিচালকের যতক্ষণ পর্যন্ত মন মতো না হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত শট নিয়েছেন। সাদের ভাষ্য, প্রতিটি দৃশ্য পরিপূর্ণ হতে হবে। একবিন্দুও ছাড় নয়।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ৪৩তম সিভিল সার্ভিস (বিসিএস)- এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এসেছে। এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ ইউনিট’ এর ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ছিল। এতে উচ্ছ্বাসিত এই অভিনেত্রী। বলেন, শুধু আমাদের নয়, নিঃসন্দেহে এটা বাংলা সিনেমার জন্যই দারুণ খবর। আমি পড়াশোনায় অনেক ভালো ছিলাম। আমারও বিসিএস দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু দিতে পারিনি। আমাদের দেশে মেয়েরা যখন থানা, কোর্ট, উকিলের কাছে যায়, তখন সেই সব মেয়েরা কি পরিমাণ হেরেসমেন্টের শিকার হয়, তা আমি জানি। আমি নিজেও এর মুখোমুখি হয়েছি। বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েও দিতে পারিনি। কারণ তখন আমার খারাপ সময় গেছে। পরবর্তীতে ফের বিসিএসের জন্য কোচিংয়ে ভর্তি হই। নিজেরও আত্মবিশ্বাস ছিল পরীক্ষা দিলেই হয়ে যাবে। বন্ধুরাও দিতে বলত। কারণ, আমি লেখাপড়ায় অনেক ভালো ছিলাম। সবসময় প্রথম স্থান অর্জন করতাম। বাচ্চা, কাজ, উপার্জন করা সবকিছু মিলিয়ে আর সময় দিতে পারব না বলে আর দেওয়া হলো না। সেই প্রশ্নেপত্রে আমারই সিনেমার নাম ভাবতেই অভাগ লাগছে। কখনও এমনটা চিন্তাও করিনি যে, বিসিএসের প্রশ্নপত্রে আমার সিনেমার নাম থাকবে। যারা এটি নিয়ে সমালোচনা করছেন, তাদের এই অনুভূতি বুঝতে বিসিএসের ভেতর দিয়ে তো যেতে হবে। সেটির সৌভাগ্য সবার হয় না, যা আমার হয়েছে। এটি আমার জন্য অনেক সম্মানের।

প্রথমবারের মতো বলিউড সিনেমায় অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী বাঁধন। বলিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘খুফিয়া’ সিনেমা দিয়ে বাংলাদেশ-কলকাতা মাতিয়ে বলিউডে অভিষেক হচ্ছে তার।

‘খুফিয়া’র বিষয়ে তিনি বলেন, সিনেমাটিতে আমি ছোট একটি চরিত্রে কাজ করছি। আমার দশ দিনের শুটিং। এরই মধ্যে দিল্লি ৭ দিন শুটিং করেছি। বাকি তিন দিন মুম্বাই হবে, ফেব্রয়ারিতে। সাত দিনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা দারুণ। কাজটি করতে পেরে মুগ্ধ। এতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে যাইনি। বিশাল ভরদ্বাজ আমার মনটা কিনে নিয়েছেন। চরিত্রটি ধারণ করতে তিনি কাজটি অনেক সহজ করে দিয়েছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here