• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

বেরোবির হাজারো স্বপ্নবাজের ফেরিওয়ালা কমলা সুন্দরী

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের প্রথম স্মৃতি হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো। চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এই বাস ঘিরে তৈরি হয় শত স্মৃতি, গড়ে ওঠে সম্পর্ক, তৈরি হয় নতুন বন্ধুত্ব। ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসার এ যানবাহন নিয়ে আবেগ, রোমাঞ্চগাথা স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। ৭৫ একরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কমলা রঙের বাসগুলো যেন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ফেরি করে বেড়ায়। শিক্ষার্থীদের অনেকেরই বড় একটি সময় কাটে এ বাসে বসে। বাসযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বহু স্মৃতি। বাসে উঠলেই বোঝা যায় শিক্ষার্থীদের ঝোলায় গল্পের শেষ নেই।

রংপুরের প্রবেশদ্বার মডার্ন মোড় সংলগ্ন ৭৫ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে উত্তরের বাতিঘর খ্যাত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। এ বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে নিজস্ব পরিবহন সেবা। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে কমলা সুন্দরী খ্যাত ১০টি বাস। বেরোবির কমলা রঙের সেই বাসগুলো কেবল শিক্ষার্থীদের পরিবহনই করে না, বরং স্বপ্নদের ফেরি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক কমলা বাস যখন রাস্তায় চলে তখন রংপুরের হাজার হাজার কিশোর-কিশোরীর মনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। স্বপ্ন জাগায় এ বাসগুলো। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের প্রথম স্মৃতি হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো। চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এই বাস ঘিরে তৈরি হয় শত স্মৃতি, গড়ে ওঠে সম্পর্ক, তৈরি হয় বন্ধুত্ব। ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসার এ যানবাহন নিয়ে আবেগ, রোমাঞ্চগাথা স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। 

শিক্ষার্থীদের অনেকেরই বড় একটি সময় কাটে এ বাসে বসে। বাসযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বহু স্মৃতি। বাসে উঠলেই বোঝা যায় শিক্ষার্থীদের ঝোলায় গল্পের শেষ নেই।

বেরোবির বিজয় সড়কের পাশে দেবদারু রোড, কৃষ্ণচূড়া রোডে চোখ মেলে তাকাতেই স্বাগত জানায় কমলা রঙের বাসগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো কমলা রঙের হওয়ায় শিক্ষার্থীরা কমলা সুন্দরী বলে ডাকেন। ক্যাম্পাসে বাসগুলো সুন্দরী বলেই পরিচিত। বর্তমানে ছয়টি বাস পাঁচটি রুটে চলাচল করে। প্রতিটি রুটের জন্য বাসে রয়েছে আলাদা নম্বর। ক্যাম্পাসের বাসগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা টের পাওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া রোডে গেলে। বাসের সামনে দাঁড়িয়ে দল বেঁধে ছবি তোলার চিত্র দেখা যায় নিয়মিত। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তো এটি রীতিমতো ‘অবশ্যকর্তব্য’। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের এ আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বন্ধু-বান্ধবী মিলে শহরে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। আবার কেউ টিউশন, কেনাকাটা, অন্যান্য দরকারি কাজের জন্য বাসে উঠে নানা গন্তব্যে ছোটেন। বাসে ওঠা নিয়ে চলে শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতা। কেউ আগে এসে ব্যাগ বা খাতা দিয়ে জায়গা ধরে রাখেন, আবার কেউ তার সহপাঠীর জন্য আগে থেকে বসে থাকেন। আবার কেউ জায়গা না পেলেও গাদাগাদি করে পুরো পথ বাদুড়ঝোলা হয়ে যান। তার পরও কমতি নেই ভালোবাসার। এসবের মধ্যে যেন আলাদা এক ভালো লাগা, আনন্দ রয়েছে।

বেরোবির কমলা সুন্দরীকে যখন পথে-ঘাটে দেখা যায়, তখন মনে হয় যেন ৭৫ একরের সীমাবদ্ধতা সেই ৭৫ একরের মধ্যে নেই। পুরো রংপুর শহরের অলিগলিজুড়ে কমলা সুন্দরীর বিচরণ ঘটে। সারা দিনের ক্লাস শেষে ক্লান্তি নিয়ে ঘরে ফেরার পথে এই বাসই হয়ে উঠেছে নতুন স্বপ্নের অনুপ্রেরণা। আবার সাক্ষী হয় স্বপ্নভঙ্গেরও। 

সাধারণ মানুষের কাছে এই কমলারাঙা বাসগুলো হয়ত শিক্ষার্থী বাহন। কিন্তু, বেরোবির শিক্ষার্থীদের কাছে এ বাস যেমন অনেক আপন, তেমনি ঘরে ফেরার বিশ্বস্ত মাধ্যম।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়েল বলেন, আমি একজন পাবলিকিয়ান হওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেরোবির বাসগুলোকে দেখতাম। বাড়ি কাছেই হওয়াতে স্বপ্ন বুনেছিলাম এখানেই চান্স নিতেই হবে। অবশেষে কমলা সুন্দরীকে পেয়ে আমি আনন্দিত। সত্যি বলতে ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন থাকে বাসে ওঠার। কিন্তু সবাই পারে না। আমি পেরেছিলাম। আমি গর্বিত বেরোবিয়ান।

কমলা সুন্দরীকে নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, যখন ক্লাসে আসতাম তখন দাঁড়িয়ে থাকা আমাদের কমলা সুন্দরীকে দেখতে ভালোই লাগে। প্রায় সময়ে বন্ধুরা মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ঘুরতাম, মজা করতাম। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here