• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করবে সরকার

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্যের বৈষম্য অনেক দিনের। অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীর কাছ থেকে সেবা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রাখা হয় বলেও অভিযোগ আছে। এই সমস্যা নিরসন ও স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে সেবা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। 

এরই মধ্যে এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের প্রতিনিধি রাখা হবে কমিটিতে। 

গতকাল রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্যাটাগরি নির্ধারণ বিষয়ে এক পর্যালোচনা সভায় এসব কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের সংগঠনের নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারিভাবে একটি গাইডলাইন তৈরি করে হাসপাতালগুলোর মান অনুযায়ী ক্যাটাগরি করে দেওয়া হবে। সেই ক্যাটাগরি অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেওয়া হবে ফি। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের প্রতিনিধি রাখা হবে এই কমিটিতে। আগামী এক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবো আমরা। এতে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পাবে, যত্রতত্র ফি দিয়ে জনগণের অযাচিত অর্থ ব্যয় হবে না।'

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ক্যাটাগরি নির্ধারণের ধরন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'বেড সংখ্যা, যন্ত্রপাতি, অবস্থান, লোকবল, সুযোগ-সুবিধাভেদে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ, বি, সি, ডি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। এ ক্যাটাগরির এক রকম সুবিধা, বি ক্যাটাগরির এক রকম সুবিধা। সি ক্যাটাগরির হাসপাতালগুলোর মানভেদে এবং সুযোগ-সুবিধা উল্লেখসহ সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা থাকবে। এতে মানুষ আগে থেকেই জানতে পারবে, কোন হাসপাতালে গেলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে এবং চিকিৎসা বাবদ কত ব্যয় হবে।'

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক আরও বলেন, 'দেশে বর্তমানে অলিতে-গলিতে ক্লিনিক হয়ে গেছে। কিছু ক্লিনিক মানসম্মত সেবা দিলেও অধিকাংশেরই সেবার মান ভালো না। ফিও নেওয়া হয় ইচ্ছামতো। স্ট্যান্ডার্ড ও নিয়ম অনুযায়ী যন্ত্রপাতি নেই। মেশিন আছে যেগুলো, সেগুলোও ঠিকমতো কাজ করে না। আবার সিট অনুযায়ী অন্যান্য বিষয় অনুপস্থিত। মান অনুয়ায়ী চিকিৎসক থাকে না, অথচ ফি নেওয়া হয় অনেক বেশি। এসব অনিয়ম আর চলতে পারবে না।' স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ১৩ হাজার ৭২৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫২৮টি হাসপাতাল, বাকিগুলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ব্ল্যাড ব্যাংক।

এদিকে দেশে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি নিয়ে এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, দেশে চলতি মাসের ২৯ দিনে বিভিন্ন স্থানে নিপাহ ভাইরাসে অন্তত আটজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন। সংক্রমিত ও মৃতদের বেশিরভাগই রাজশাহী বিভাগের। এরই মধ্যে আক্রান্তদের প্রত্যেককে চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। তাঁদের মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্তদের জন্য এ হাসপাতালে তৈরি করা হয়েছে আলাদা আইসিইউ ইউনিট।

গত বছরের চেয়ে এবার শীত মৌসুমে নিপাহ আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'এই রোগ যাতে না বাড়ে, সেই চেষ্টা চলছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে টেলিভিশন এবং পত্রিকায় নিপাহ ভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে। সাধারণত শীতকালে বাদুরের মাধ্যমে খেজুরের রস থেকে মানুষে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে।' সংক্রমণ বাড়ার পেছনে মানুষের অসতর্কতাকে দায়ী করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

Place your advertisement here
Place your advertisement here