• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

দ্বিতীয় পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে আগ্রহী জাপান

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

মানিকগঞ্জ-রাজবাড়ীকে সড়কপথে সংযুক্ত করতে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হলে তাতে অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপান।

ঢাকার দেশটির রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকো এ কথা জানিয়েছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, প্রয়োজন বিবেচনা করেই দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তার সরকার।

ঢাকার নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের ইতো নাওকো বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে একসময় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হবে। জাপান সরকার ও জাইকা সরকারের নির্মাণপ্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনা বিবেচনার অবস্থানে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে আমাদের সহযোগিতা প্রস্তাবের সুযোগ নেব।’

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যে ঋণ চুক্তি করা হয়, তা পরে হয় জাইকার সঙ্গেও।

পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতিচেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ালে জাইকাও সরে যায়। পরে সরকার নিজ অর্থে সেতু নির্মাণ করে।

বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ নিয়ে সে সময় কানাডায় দেশটির প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ২০১৭ সালে দেশটির একটি আদালত বিশ্বব্যাংকের অভিযোগকে ‘গালগপ্প’ বলে উড়িয়ে দেয়।

এরই মধ্যে সেতুর কাজ শেষ। আগামী শনিবার জমকালো আয়োজনে এটি উদ্বোধন করা হবে। পরদিন শুরু হবে যান চলাচল।

এই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার আগেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে।

তবে সেতুটি উদ্বোধনের তিন দিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনই দ্বিতীয় সেতু শুরু করতে চাইছেন না তিনি। একটি বড় প্রকল্প শেষ না হতেই আরও একটি বড় প্রকল্পের কাজে হাত দেয়া কঠিন বলে মনে করেন তিনি।

প্রয়োজনের নিরিখে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ হবে বলেও জানিয়ে দেন সরকারপ্রধান।

জাপান সরকারের অবস্থান জানিয়ে ঢাকায় দেশটির দূত বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে এটি (পদ্মা সেতু) অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও সফল হবে। সুতরাং দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হবে এটিও বাস্তবতা।’

ইতো বলেন, ‘বাংলাদেশে মানসম্মত অবকাঠামো নির্মাণকাজে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা থাকলে টোকিও ভালো প্রযুক্তি দিতে প্রস্তুত রয়েছে। জাপান এ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে ছোট ও বড় ১৩৪টি সেতু নির্মাণে সহযোগিতা করেছে।’

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানান ঢাকায় জাপানের প্রতিনিধি। তিনি বলেন, ‘এই পদ্মা সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় একটি চমৎকার মাইলফলক। আর এটি বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে নির্মাণ শেষ হয়েছে।

‘চলতি মাসে পদ্মা সেতু এবং বছরের শেষ নাগাদ মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উদ্বোধনের নজির সৃষ্টি করে ২০২২ সাল বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের কথা স্মরণ করে নাওকো বলেন, ‘তিনি পদ্মা সেতু ও রূপসা সেতু দুটি সেতুতে সহযোগিতার জন্য জাপানের কাছে অনুরোধ করেছিলেন। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি পদ্মা সেতুর প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে এবং রূপসা সেতু নির্মাণ করেছে।’

পদ্মা সেতুতে জাপান যুক্ত থাকতে পারেনি বলে দুঃখও প্রকাশ করেন দেশটির দূত। বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে জাইকা পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের অংশ হতে পারেনি। যদিও এটা জাপান সরকারের আগ্রহ ছিল।’

নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন ইতো নাওকো। বলেন, ‘এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ নিজে থেকে কতটা করতে সক্ষম।’

রূপকল্প-২০৪১ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রায় জাপান পাশে থাকবে বলেও নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন জাপানি দূত।

Place your advertisement here
Place your advertisement here