• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

পরকীয়া ঠেকাতে নারীরা যা করবেন 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

বর্তমানে অনেক পরিবারই ধ্বংস হচ্ছে পরকীয়ার জেরে। পরকীয়ার কারণে সংসারে অশান্তি, ভাঙন এমনকি জঘন্য হত্যাকাণ্ডও সংঘটিত হচ্ছে। নারী-পুরুষ উভয়েই এ পরকীয়ায় জড়িত হয়ে থাকে। 
বিশেষ করে প্রবাসীর স্ত্রীরা পরকীয়ায় বেশি লিপ্ত হন। তবে স্বামী প্রবাসে কিংবা জীবিকার তাগিদে দূরে কোথাও অবস্থান করা সেসব স্ত্রীরা কীভাবে নিজেদের জেনা-ব্যভিচার ও পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করবে? এ থেকে বেঁচে থাকতে নারীদের করণীয়ই বা কী?

ইসলামের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষ সবার জন্য পরকীয়া ও জেনা-ব্যভিচার অত্যন্ত জঘন্য গোনাহের কাজ। এটি কবিরা গোনাহ, মারাত্মক দণ্ডনীয় অপরাধ এবং ঘৃণিত কাজ। ইসলামে দণ্ডনীয় যত শাস্তি আছে, এর মধ্যে জেনা-ব্যভিচার তথা পরকীয়ার শাস্তিই সবচেয়ে কঠিন ও মারাত্মক।

এ অপরাধের দুইটি শাস্তি হাদিসে রয়েছে। একটি হলো, অবিবাহিত অপরাধীর জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগে ১০০ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য নির্বাসন তথা জেল। আর বিবাহিত অপরাধীর জন্য পাথর নিক্ষেপে মৃত্যু নিশ্চিত করা।

সুতরাং স্বামী দেশে থাকুক বা দেশে থাকুক স্ত্রী যদি পরকীয়ায় লিপ্ত হয় তাহলে সে গোনাহগার হওয়ার পাশাপাশি শাস্তিযোগ্য অপরাধে অপরাধী বলে গণ্য হবে। প্রবাসী পুরুষের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

নারীর জন্য ১০ দিকনির্দেশনা-

ইসলামিক স্কলারদের মতামতের ভিত্তিতে মারাত্মক অপরাধ পরকীয়া, জেনা-ব্যভিচার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে নারীদের জন্য রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।

> স্ত্রী যদি ভাবেন স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না বা জেনা-ব্যভিচার ও পাপাচারে জড়িয়ে পড়বে; তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে স্বামীর কাছে তার এ দাবি করার অধিকার আছে যে- 

হয় সে (স্বামী) তাকে (স্ত্রীকে) সঙ্গে করে বিদেশে নিয়ে যাবে। অথবা, স্বামী তাকে রেখে একাকি বিদেশ বা দূরের সফর থেকে বিরত থাকবে। কারণ বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, নিজের ইজ্জত-সম্ভ্রম হেফাজত করা এবং গোনাহের কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

>  স্বামী যদি স্ত্রীর দাবি, একসঙ্গে থাকার পরামর্শ বা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে প্রবাসে কিংবা দূরে কোথাও গমন করে তাহলে স্ত্রীর জন্য ‘খোলা তালাক’ নেয়া জায়েজ আছে। 

এতে স্বামীর প্রবাসে কিংবা দূরে অবস্থানের কারণে বিয়ের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং নারীর ঈমান ও চরিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনার আশঙ্কাই বেশি।

খোলা তালাক কী? 

কোনো কিছুর বিনিময়ে স্ত্রী নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়াই হলো খোলা তালাক। এক্ষেত্রে স্বামী সে বিনিময়টি গ্রহণ করে স্ত্রীকে তালাক দেবে। এ বিনিময় হতে পারে স্বামীর দেয়া মোহরানার টাকা কিংবা এর চেয়ে বেশি সম্পদ কিংবা কম।

>  প্রবাসীর স্ত্রীর জন্য যদি উপরোল্লেখিত কোনোটিই সম্ভব না হয় তবে- ধৈর্য ধারণ করবে, নিয়মিত নফল রোজা রাখবে। বিশেষ করে সোম ও বৃহস্পতিবার এবং আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের আইয়্যামে বিজের রোজা রাখা। 

> নিয়মিত স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে একে অপরের প্রতি সুসম্পর্ক ও ভালোবাসা অটুট রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখা।

> অশ্লীল বিনোদন পরিহার করতে হবে। যেমন-নাটক, সিনেমা, গান-বাজনা, অশ্লীলতা ও অসৎসঙ্গ তথা যৌন উত্তেজক সব মাধ্যম থেকে নিজেকে দূরে রাখা। 

> মাহরাম নয়, এমন পরপুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত ও যোগাযোগ না রাখা। কেননা চারিত্রিক নির্মলতা ও মানসিক পবিত্রতা রক্ষায় এটি খুবই জরুরি। 

বিশেষ করে দেবর, ভাসুর, চাচাতো ভাই, ফুফাতো ভাই, মামাতো ভাই, খালাতো ভাই, ভগ্নিপতি (দুলাভাই) বেয়াই ইত্যাদি ব্যক্তিকে নিজ ঘরে প্রবেশের সুযোগ না দেয়া।

> গায়রে মাহরাম তথা যাদের সঙ্গে দেখা করা হারাম, সেসব পুরুষদের সঙ্গে হাসি, দুষ্টুমি, হাতাহাতি, সামনা-সামনি খেলাধুলা, স্পর্শ এবং বিনা প্রয়োজনে দৃষ্টিপাত, কথাবার্তা, ফোনালাপ, মেসেজিং, ভিডিও চ্যাটিংসহ কোনো জিনিস-পত্র আদান প্রদান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।

> যাদের সন্তান আছে, তারা সন্তানদের সঙ্গে রাখবে। সন্তান না থাকলে সম্ভব হলে মা, বোন, বোনের মেয়ে, ভাইয়ের মেয়ে, ননদ, শাশুড়ি, মা, বাবা কিংবা আপনসহ নিকটাত্মীয় নারীদের সঙ্গে থাকা উত্তম।

> ঘর কিংবা বাসার বাইরে না যাওয়া। একান্ত প্রয়োজনে কাছাকাছি বাইরে যাওয়ার দরকার হলে, পূর্ণাঙ্গ পর্দা সঙ্গে বের হওয়া এবং যথাযথ দায়িত্ব পালন করা। 

> সর্বোপরি মহান আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করা। জেনা-ব্যভিচার, পাপাচার ও পরকীয়ার দুনিয়ার শাস্তির পাশাপাশি পরকালের জাহান্নামের শাস্তির কথা অন্তরে জাগ্রত রাখা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here