• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

গাইবান্ধায় সুজন প্রসাদের সম্প্রীতির ইফতার আয়োজন   

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

গাইবান্ধার অনেকের কাছে সুজন প্রসাদ অতি পরিচিত মুখ। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গাইবান্ধা জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এবার রমজান মাসে অন্যরকম এক মানবিক উদ্যোগ নিয়ে বেশ প্রশংসিত হচ্ছেন সুজন। গাইবান্ধা পৌর শহরের মহুরীপাড়ায় থাকেন তিনি। ঠিকাদারি ব্যবসার পাশাপাশি বাড়ির পাশে হকার্স মার্কেটে ‘বাঙলা হোটেল’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছেন। সুজন হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও প্রথম রোজা থেকে তার রেস্টুরেন্টে রোজাদারদের বিনামূল্যে ইফতার করাচ্ছেন। রমজান মাসে যেখানে ব্যবসায়ীরা সব খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেখানে সুজন রমজান মাসজুড়ে রোজাদারদের বিনামূল্যে ইফতার পরিবেশন করছেন। তার এই মানবিক উদ্যোগ সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ।

গতকাল শনিবার বিকালে সুজনের বাঙলা হোটেলে গিয়ে দেখা গেছে, রেস্টুরেন্টের টেবিলগুলোয় ইফতারের প্লেট সাজাতে ব্যস্ত তিনি। এই আয়োজনে তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্বজনরাও। ইফতারের জন্য প্লেটে সাজানো হচ্ছে পিয়াজু, বেগুনি, বুট-বুন্দিয়া, বিরিয়ানি, শসা, গাজর, কলা, তরমুজ, আনারস, খেজুর, বেলের শরবতসহ ১৪ পদের খাবার। বিনামূল্যের ইফতার হলেও আন্তরিকতার কমতি নেই। রোজাদাররা যে যা চাইছেন আন্তরিকভাবে তাদের পাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

রোজার শুরুর দিকে বাঙলা হোটেলে ইফতার করতে আসা মানুষের সংখ্যা ২০-২৫ জন হলেও বর্তমানে সে সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে। 

সুজনের রেস্টুরেন্টে প্লেটে ইফতার নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন রোজাদার রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অন্য আর দশটা রেস্টুরেন্টের মতো রেস্টুরেন্ট ভেবে ইফতার করতে এখানে এসেছি। পরে জানতে পারলাম, রোজার মাসে এই রেস্টুরেন্টে গ্রাহকদের বিনামূলে ইফতার পরিবেশন করা হয়। সত্যি অবাক হওয়ার বিষয়। হিন্দু হয়েও নিজের রেস্টুরেন্টে রোজাদারদের বিনামূল্যে ইফতার করাচ্ছেন। যারা ইফতার করাচ্ছেন আর যারা ইফতার করছেন, দুই পক্ষই বলছে এটি সম্প্রীতির অনন্য এক নজির।’

সংস্কৃতিকর্মী জুলফিকার চঞ্চল বললেন, ‘প্রথমত আমরা সবাই মানুষ, তারপর বাঙালি। এখানে সৌহার্দ-সম্প্রীতিটাই আসল কথা। কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সেসব প্রশ্ন থাক। এটাই তো মানুষের জীবনের আনন্দ।’ 

তিনি বলেন, ‘সুজন প্রসাদের অনন্য এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে অন্যরাও যেন এতে উদ্বুদ্ধ হয় তাও প্রত্যাশা করছি।’ 

সুজন প্রসাদ বলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান নয়, মানুষ হিসেবে রমজান মাসে বিনামূল্যে চৌদ্দ পদের খাবার দিয়ে রোজাদারদের ইফতার করানোর চেষ্টা করছি। এই উদ্যোগকে আমি আমার সামাজিক দায়িত্ব বলে মনে করি।’

Place your advertisement here
Place your advertisement here