• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

পঞ্চগড়ে ৯১ হেক্টর জমিতে ৭৪ কফি বাগান

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

উত্তরের কৃষি সমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়। চায়ের পাশাপাশি অর্থকরি ফসল হিসেবে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কফি চাষের। কৃষক আব্দুল হালিম প্রধান কৃষি বিভাগের পরামর্শে দুই বছর আগে সুপারি বাগানে সাথি ফসল হিসেবে রোপণ করেন কফির চারা গাছ। অল্প সময়ের মধ্যেই ফল এসেছে গাছগুলোতে। তবে, বাজারজাত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করছেন তিনি। তার দাবি, বাজারজাত সহজ হলে সাথি ফসল হিসেবে যেমন বাড়তি আয় হবে, তেমনি বাড়বে চাষের পরিধিও। 

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বিষমুনি গ্রামে আব্দুল হালিম প্রধানের বাড়ি। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নিজের বাড়ি সংলগ্ন ছায়াযুক্ত সুপারি বাগানে ১৩৫টি কফি চারা রোপণ করেন। তার মতো জেলার আরও ৪৭ জন কৃষক কফি চাষ করেছেন। তবে অন্যদের রোপণ করা গাছগুলোতে এখনো ফল আসা শুরু হয়নি।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০২১ সালের শেষের দিকে ‘কফি ও কাজু বাদাম গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের’ আওতায় জেলার তিন উপজেলায় রোবাস্টা জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে। জেলার মাটি ও আবহাওয়া কফির জন্য উপযোগী হওয়ায় সুপারিসহ বিভিন্ন বাগানের ছায়াযুক্ত ফাঁকা জায়গায় গড়ে উঠছে কফি বাগান। চাষিদের কফি বীজ, কারিগরি সহায়তাসহ নানা পরামর্শ দেয় কৃষি বিভাগ। চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই ফল আসা শুরু হয় গাছগুলোতে। এটি দীর্ঘ মেয়াদি ফসল। প্রতি বিঘা বাগানে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার কফি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার ৪৭ জন কৃষক ৯১ দশমিক ৮১ হেক্টর জমিতে গড়ে তুলেছেন ৭৪টি কফি বাগান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে একেকটি কফি গাছ। কৃষক আব্দুল হালিম প্রধান পরিচর্যা করছেন কফি গাছগুলো। অধিকাংশ গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুঁলে আছে কফি ফল। পরিপক্ব ফলগুলো উত্তোলন করে ঘরে রাখছেন তিনি। এই ফলগুলোই প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হবে পান যোগ্য কফি।

কফি চাষি আব্দুল হালিম প্রধান বলেন, ‌‘একদিন কৃষি বিভাগের লোকজন এসে বলেন, সুপারি বাগানে কফি চাষের কথা। পরে তারা আমাকে ৩৩ শতক জমির জন্য ১৩৫টি কফির চারা দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী চারাগুলো রোপণের পর যত্ন নিতে শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ দুই বছরের মধ্যে গাছগুলোতে ফল এসেছে। অনেক গাছে ফুল ফুটেছে। কিছু গাছের ফল ইতোমধ্যে পাকতে শুরু করেছে। আমি কিছু ফল গাছ থেকে তুলেছি, নিজে কফি বানিয়ে খাওয়ার জন্য। আর বাকি গাছগুলো থেকে কফি কয়েকদিনের মধ্যে তুলবো। যদি বাজারজাত করা যায় আর দাম ভালো পাই, আশা করি লাভের মুখ দেখতে পারবো।’

সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম বলেন, কফি চাষের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানের প্রয়োজন। যেখানে ছায়া থাকে সেখানেই কফি ভালো হয়। বাড়তি কোনো জমি এবং তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র আগাছানাশক স্প্রে এবং ছত্রাকনাশক স্প্রে করায় এই সফলটি চাষে কৃষকের খরচ কম হয়।   

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) শাহ আলম মিয়া বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে চারা, কীটনাশক, কারিগরি প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে। কফির বাজার ব্যবস্থাপনা ও ফল সংরক্ষণ বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। পঞ্চগড়ের আবহাওয়া কফি চাষে অনুকূল হওয়ায় কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে আশা করছি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here